জাপান পূর্ব এশিয়ার একটি বৃহত দ্বীপ রাষ্ট্র। মহাসাগরের দ্বীপ চিরে উদীয়মান সূর্যের দেশ বলা হয়ে থাকে জাপানকে। আয়তনের দিক দিয়ে জাপান পৃথিবীর দশম বৃহত্তর দ্বীপ রাষ্ট্র। সেই সঙ্গে জাপানের জনসংখ্যাও কম নয় বললেই চলে। তাদের রয়েছে নির্দিষ্ট সভ্যতা ও সংস্কৃতি।
জাতি হিসেবে খুব কর্মক্ষম হওয়ায় বিশ্ব বাজারে খুব দ্রুতই নিজেদের সফলতা অর্জন করতে পেরেছে দেশটি। কিন্তু এই দেশটির মানুষ সম্পর্কে একটি অদ্ভুত রেওয়াজ আছে যা আপনাকে বিস্মিত করবে নিঃসন্দেহে।
বলা হয়ে থাকে জাপানিরা ঘুমাতে পছন্দ করে না। তাদের চোখে ঘুম নেই বললেই চলে। কিন্তু আপনি যদি জাপান ভ্রমনে যান তাহলে এই কথার সঙ্গে সত্যতা একটুও চোখে পড়বে না।
বেশির ভাগ জাপানিরা জনসম্মুখেই ঘুমিয়ে পরে। আপনি যেখানেই যান না কেন জাপানিরা আপনাকে বিস্মিত করবে। কারণ এমন একটি জায়গাও আপনি খুঁজে পাবে না যেখানে অন্ততপক্ষে একজন জাপানি বসে বসে ঘুমাচ্ছে বা ঝিমুচ্ছে না। তাহলে তাদের এই ঘুমের দৃশ্যকে কি বলা যেতে পারে তাদের সংস্কৃতি বা সভ্যতারই একটা অংশ নাকি অন্যকিছু।
গবেষণায় দেখা গেছে, বেশিরভাগ জাপানিরা ঘুমের সময় নিজেকে অন্য কিছুতে ব্যস্ত রাখে। যেমন স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রদেরই কথা ধারা যাক। রাতের বেলায় তারা বন্ধুদের সঙ্গে গভীর আলাপে এতটাই ব্যস্ত থাকে যে ঘুমের সময়টাই তারা পায় না।
আর এই কারণে বেশিরভাগ জাপানি শিক্ষার্থীরা ক্লাশে লেকচারের সময় ঘুমিয়ে পরে। শুধু জাপানি তরুণ তরুণীদের মধ্যেই যে এই সমস্যা প্রবল তা কিন্তু নয়। জাপানের বিভিন্ন কর্মজীবি নারী পুরুষেরাও অফিস থেকে এসে রাতের সময়টুকু বই পড়ায় ব্যাস্ত থাকে। দেখা যায় বই পড়তে পড়তে পার করে দেয় সারাটা রাত।
যে সময়টাতে আরাম করে ঘুমানোর কথা সেই সময়টা জাপানিরা নিজেকে ব্যস্ত রাখে অন্য কোন কাজে। আর এর কারণে অফিস থেকে শুরু করে রেল বা বাস ষ্টেশনে ঘুমিয়ে পড়তে দেখা যায় তাদের।
সুযোগ পেলেই একটু চোখ বন্ধ করলেই চলে আসে গভীর ঘুম। আর এই রকম যেখানে সেখানে ঘুমিয়ে পড়াটাও তাদের দৈনন্দিন কাজের একটা অংশ হিসেবেই দাড়িয়েছে।
এ থেকে কারো মনে আবার প্রশ্ন জাগে যে জাপানের পূর্বপুরুষরাও আদৌ কি ঘুমের জন্য বিছানায় গিয়েছিল। আর যদি তা না হয় জাপানিরা এই ধরণের অভ্যেস গড়লো কিভাবে।
এদিকে পর্যাপ্ত না ঘুমানোর কারণে জাপানিরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ঘুম নামক দৈত্য কেড়ে নিচ্ছে তাদের স্বাভাবিক সুস্থ্যতা। আর বিশেষজ্ঞরা মনে করেন জাপানের জনগণকে ঘুমের সঙ্গে নতুন করে পরিচয় করে দিতে হবে।
পর্যাপ্ত ঘুম সুস্থ থাকার জন্য কতটা প্রয়োজন সে সম্পর্কে বাড়াতে হবে সচেতনতা। আবার কেউ কেউ এও বলছেন যদি জনসম্মুখে হেলে পড়া বা ঝিমানো বা ঘুমিয়ে পড়া বন্ধ করা যায় তাহেলেই এই সমস্যা থেকে উত্তরণ পাবে জাপানিরা।(বাংলামেইল)
নিউজ ডেস্ক : আপডেট ৪:৩৩ পিএম, ২৯ মে ২০১৬, রোববার
এইউ