লাইফস্টাইল

যেসব কারণে মাটিতে বসে খাবেন!

চলমান ট্রেন্ড অনুযায়ী ডাইনিং টেবিলে বসেই খাবার খাওয়াটাই সর্বগৃহীত। অনেকের চোখে মাটিতে বসে খাওয়া মানহানির পর্যায়। তাই মাটিতে বসে খাওয়ার সুফলতা বেশিরভাগই জানেন না। এমনকি জানার জন্য মাথাও ঘামান না। তবে সম্প্রতি লাইফস্টাইল বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘বোল্ড স্কাই’তে টেবিলে বসে খাওয়ার ভয়াবহতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, টেবিল-চেয়ারে বসে খাবার খেলে পেট ভরে ঠিকই, কিন্তু শরীরের কোনো মঙ্গল আনে না। বরং নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে। অন্যদিকে মাটিতে বসে খেলে শরীর রোগ মুক্ত হয়। এমনকি আয়ু পর্যন্ত বাড়ে।
চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যায় মাটিতে বসে খাওয়ার সুফল-

১.হার্টের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
হাঁটু মুড়ে বসলে শরীরের উপরিঅংশে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে হার্টে কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। একই সঙ্গে হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কম থাকে।

২.দেহে রক্ত সঞ্চালনে উন্নতি
শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিটি অঙ্গে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছানো জরুরি। এতে দেশে রোগের প্রকোপ কমে। আর খাওয়ার সময় হাঁটু মুড়ে বসলে সারা শরীরে বিশুদ্ধ অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের চলাচল বেড়ে যায়।

৩.স্ট্রেসের মাত্রা কমে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাটিতে বসে থাকলে শরীর এবং মস্তিষ্কের বেশ কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে, যার প্রভাবে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। ফলে মানসিক অবসাদ তো কমেই, সেই সঙ্গে স্ট্রেসের মাত্রাও কমতে শুরু করে।

৪.ব্যায়াম হয়
মাটিতে বসে খাওয়ার সময় নিজেদের অজান্তেই কিন্তু একাধিক আসন, যেমন- সুখাসন, সোয়াস্তিকাসন অথবা সিদ্ধাসন করা হয়ে যায়। ফলে মাটিতে বসে খাওয়ার সময় পেট তো ভরেই সেই সঙ্গে শরীর ও মস্তিষ্ক, উভয়ই ভিতর থেকে চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

৫.শরীরে সচলতা বৃদ্ধি পায়
মাটিতে বসে খাওয়ার অভ্যাস করলে থাই, গোড়ালি এবং হাঁটুর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে শিরদাঁড়া, পেশি, কাঁধ এবং বুকের ফ্লেক্সিবিলিটিও বাড়ে। ফলে সার্বিকভাবে শরীরে সচলচা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি নানাবিধ রোগও দূরে থাকে।

৬.হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে
হাঁটু মুড়ে বসে খেলে হজম ক্ষমতার উন্নতি হয়। তাই যাদের বদ হজমের সমস্যা আছে বা প্রায়ই গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন তাদের ভুলেও টেবিল-চেয়ারে বসে খাওয়া উচিত নয়। হাঁটু মুড়ে বসলে কখনও আগে ঝুঁকে পরা হয়,আবার কখনও সোজা হয়ে বসি। এমনটা বারে বারে করাতে হজম সহায়ক ‘ডায়জেস্টিভ জ্যুস’র ক্ষরণ বেড়ে যায়। ফলে হজম প্রক্রিয়া খুব সুন্দরভাবে হতে থাকে।

৭.আয়ু বৃদ্ধি পায়
সুস্থভাবে দীর্ঘদিন বাঁচতে কে না চায়? অনেকেই হয়তো জানেন না শরীরের অভ্যন্তরে কোনও ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ইউরোপিয়ান জার্নাল অব প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজিতে প্রকাশিত এক গবেষণা বলা হয়, যারা কোনও সাপোর্ট ছাড়া মাটিতে বসে থাকতে থাকতে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারে, তাদের শরীরে ফ্লেক্সিবিলিটি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি একাধিক অঙ্গের কর্মক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আয়ু বৃদ্ধি পায়। আর যারা এমনটা করতে পারেন না, তাদের আয়ু অনেকাংশেই হ্রাস পায়। এই গবেষণাটি ৫১-৮০ বছর বয়সীদের মধ্যে করা হয়েছিল।

৮.ব্যথা কমে
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, মাটিতে বসে খাওয়ার সময় আমরা মূলত পদ্মাসনে বসে থাকি। এইভাবে বসার কারণে পিঠ, পেলভিস ও তল পেটের পেশীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে সারা শরীরের কর্মক্ষমতা এত মাত্রায় বৃদ্ধি পায় যে সব ধরনের যন্ত্রণা কমে যেতে সময় লাগে না।

৯.ওজন কমে
মাটিতে বসে খাওয়ার সময় শরীরের ভেগাস নার্ভের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। ফলে পেট ভরে গেলে খুব সহজেই ব্রেনের কাছে সে খবর পৌঁছে যায়। এতে অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। এমনটা যত হতে থাকে তত ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও কমে।

Share