চাঁদপুরের প্রখ্যাত হোমিও চিৎসক ডা. এম এ জলিল মিয়াজী (জলিল ডাক্তার) আর বেঁচে নেই। তার পুরো নাম ডা. এম এ জলিল মিয়াজী হলেও ‘অল্প টাকায়, গরিবেরর চিকিৎসক ‘জলিল ডাক্তার’ নামেই তিনি চাঁদপুরসহ দেশব্যাপি ব্যপক পরিচিতি লাভ করেছিলেন।
প্রায় ৬০ বছর পূর্বে হোমিও চিকিৎসার উপর (এম.বি.এইচ) ডিগ্রি অর্জন করে চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজারে বাদল হোমিও হল নামে একটি চেম্বার খুলে বসেন। সেখানে তিনি প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সের ৫/৬শ’ রোগী দেখতেন। রোগীর কাছ থেকে তিনি জনপতি ঔষধসহ ৫ টাকা থেকে ২০ টাকা। অপেক্ষাকৃত গুরুতর রোগীর বেশী ঔষধ প্রদানের ক্ষেত্রে তা সর্বোচ্চ ৫০ টাকা দাঁড়াতো। এই ক্ষেত্রে গরীব রোগীর কাছ থেকে কখনো আবার ভিজিট নেয়া হতো না। তবে প্রতিটি নতুন প্রেসক্রিপশন লেখার ক্ষেত্রে ২ টাকা থেকে ৫টাকা নেয়া হতো।
এতে করে অল্প সময়ে তিনি তিনি ‘অল্প টাকায়, গরিবেরর চিকিৎসব জলিল ডাক্তার নামে চাঁদপুর সহ দেশীব্যাপী ব্যপক পরিচিতি অর্জন করেন এবং সুনামের সাথে দীর্ঘ ৬০ বছর ধরে মানুষকে সু-চিকিৎসা প্রদান করেন। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জলিল ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা সেবা নিতে গরীব-ধনী শতশত রোগী ভিড় জমাতো। গত ৩ বছর ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত কারনে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে বহু বছরের পুরোণো চেম্বার বাদল হোমিও হল গুটিয়ে বাড়িতে চেম্বারখুলে বসেন।
পরিবারের লোকজন তাকে অসুস্থ্য শরীর নিয়ে প্রতিদিন শত শত রোগী দেখতে বারণ করলে তিনি বলতেন, ‘মানুষগুলো আমার কাছে চিকিৎসার জন্য আসে, আমি ডাক্তার মানুষ-কেমনে তাদের ফিরিয়ে দেই’।
জলিল ডাকাক্তারের পরিবার জানায়, গত ৩ বছর ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। কিছুদিন পূর্বে তাকে ঢাকার ধানমন্ডি প্রাইভেট ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। ৩ জুলাই সোমবার দিনগত রাতে তিনি হৃদযন্ত্র ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ইন্তেকাল করেন।
গরীবের চিকিৎসক জলিল ডাকারের তার মৃত্যুর খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল পুরাণবাজার ও গ্রামের বাড়ি দোকানঘর এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে এবং হাজার হাজার মানুষ তার বাড়িতে ভিড় জমায়। ওইদিন এশার নামাজের পর পুরাণবাজার জাফরাবাদ এমদাদীয়া মাদ্রাসা মাঠে মরহুমের জানাযার নামাজ অনু্ষ্িঠত হয়।
পরে তাকে চাঁদপুর সদর উপজেলার দোকানঘর নিজ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে জলিল ডাক্তারকে সমাহিত করা হয়। উল্লেখ্য, সাখুয়া ইউনিয়নের (বর্তমান লক্ষীপুর) প্রাক্তন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইউনুছ মিয়াজীর মেজো ভাই ডাঃ জলিল মিয়াজী। বাবা মরহুম আঃ রশিদ মিয়াজী।
প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম