যেসব অভ্যাসে আপনার কিডনিতে সমস্যা হচ্ছে

আমাদের কিডনির মাত্র ২০ শতাংশ ভালো করে কাজ করলেই আমরা নিত্যদিনের জীবনযাপন খুব ভালোভাবে করতে পারি। আর সেজন্যই কিডনির কোন সমস্যা হলে খুব তাড়াতাড়ি তা ধরা পড়ে না এবং সহজেই তা আমাদের নজর এড়িয়ে যায়।

কিডনি আমাদের শরীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। শরীরের নানা হরমোন তৈরি করা ছাড়া রক্ত শোধন করা, শরীরের যাবতীয় দূষিত পদার্থ রেচন আকারে বের করে দেওয়া ইত্যাদি কিডনির কাজ।

প্রতিনিয়তের কয়েকটি অভ্যাস আমাদের কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করে। আর যখন কিডনির ক্ষতি হয়েছে বলে আমরা বুঝতে পারি তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। নিচের পয়েন্টগুলোতে দেখে নিন, আপনার কোন অভ্যাস কিডনির ক্ষতি করছে।

সঠিক সময়ে প্রস্রাব না করা
সবসময়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে কাজ করা উচিত আপনার। ব্লাডারে বেশি পরিমাণে মূত্র জমা হলে তাতে শরীরের খুব ক্ষতি হয়। আর তা অভ্য়াসে পরিণত করা খুবই খারাপ কারণ তাতে কিডনির উপরে মারাত্মক চাপ পড়ে। বেশিদিন এমন চললে কিডনি ফেল করতে পারে।

সোডা দেওয়া পানীয়
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যারা সোডা জাতীয় পানীয় নিয়মিত খান, তাদের কিডনির রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। কোলা জাতীয় ঠাণ্ডা পানীয়ও কিডনির যথেষ্ট ক্ষতি করে।

সোডিয়াম শরীরে বেশি গেলে
লবণ আমাদের প্রত্যেকের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তবে মাত্রাতিরিক্ত লবণ খেলে তা রক্তের প্রেসার বাড়িয়ে তোলে ও ফলে কিডনির মারাত্মক ক্ষতি হয়।

বেশি করে পেইন কিলার খেলে
ব্যথা-বেদনা সবার শরীরে লেগেই রয়েছে। তবে সেজন্য ব্যথা কমানোর দাওয়াই হিসাবে পেইন কিলারকে বেছে নেওয়াটা বোকামি। কারণ এগুলির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মারাত্মক ও এর ফলে কিডনির উপরে খুব চাপ পড়ে।

ভিটামিন বি-৬ সমৃদ্ধ খাবার কম খেলে
কিডনিকে সুস্থ রাখতে ভিটামিন বি-৬ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া খুব প্রয়োজন। সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, এই ভিটামিনের খামতি হলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই ভিটামিন সবচেয়ে বেশি রয়েছে মাছ, আলু ও নানা ধরনের মিষ্টি শাক-সবজিতে।

অলস জীবন-যাপন
অলসভাবে জীবনযাপন করলে কিডনির ক্ষতি হয়। সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, যারা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন, তাদের ক্ষেত্রে কিডনিতে পাথর হওয়া বা কিডনির নানা সমস্যা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ৩১ শতাংশ কমে যায়।

ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার কম খেলে
শরীরে ম্যাগনেশিয়ামের খামতি হলে কিডনির সমস্যা তৈরি হয়। ম্যাগনেশিয়াম এমন একটি উপাদান যার ঘাটতি হলে ক্যালশিয়াম পুরোপুরি রক্তের মধ্যে মিশে যেতে পারে না। ফলে কিডনিতে পাথর তৈরি হয়। সেজন্য সবুজ শাক-সবজি, বিনস, বাদাম ইত্য়াদি খাওয়া খুব জরুরি।

বেশি পরিমাণে ক্যাফেইন খাওয়া
প্রায় সব ধরনের সফট ড্রিংক্স, এনার্জি ড্রিংক্স ও কফিতে ক্যাফেইন থাকে যা বেশি পরিমাণে খেলে কিডনির যথেষ্ট ক্ষতি হয়।

ঘুমের ঘাটতি হলে
পর্যাপ্ত ঘুম না হলেও কিডনির উপরে চাপ বাড়ে। রাতে নিশ্চিন্ত ঘুম কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য খুব প্রয়োজন। প্রতিনিয়ত রাতে ঘুমের ব্যঘাত ঘটলে কিডনির ক্ষতি হয়। তাই প্রতিদিন রাতে নিয়ম করে ৮ ঘণ্টার ঘুম খুব প্রয়োজন।

কম পানি খাওয়া
অনেকেরই কম পানি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে যা খুব খারাপ। পনি কম খেলে শরীরের নানা ক্ষতিকর টক্সিনগুলি রক্তে মিশতে শুরু করে। তাই কিডনি ঠিক রাখতে প্রতিদিন নিয়ম করে ১২ গ্লাস পানি খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন।

ওষুধ খেতে ভুলে যাওয়া
উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিস এখনকার দিনে খুব কমন রোগ। এই রোগ হলে প্রতিদিন নিয়ম করে ওষুধ খাওয়া খুব আবশ্যক। ওষুধ খেতে ভুলে যাওয়া মানেই কিডনির উপরে অত্যন্ত প্রেসার পড়ে।

সামান্য রোগ-ব্যfধিকে গুরুত্ব না দেওয়া
অনেক সময়ে ঠাণ্ডা লাগলে বা ছোটখাটো রোগে আমরা বিশ্রাম না নিয়ে কাজ করে চলি। এর ফলে কিডনির উপরে মারাত্মক চাপ বাড়ে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নিলে কিডনির নানা রোগ বাঁধতে পারে।

ধূমপান
ধূমপানের ফলে কিডনির ক্ষতি হয় তা সর্বজনবিদিত। সাম্প্রতিক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, দিনে দুটি সিগারেটই কিডনির ক্ষতির জন্য যথেষ্ট।

নেশার দ্রব্য পান

অ্যালকোহল জাতীয় পানীয় বেশি খেলে তা শুধু লিভারকে নয়, কিডনিরও যথেষ্ট ক্ষতি করে।

বেশি পরিমাণে প্রোটিন শরীরে গেলে
কম খেলে যেমন শরীরের সমস্যা হয়, তেমনই বেশি পরিমাণে প্রোটিন শরীরে গেলে তাতেও কিডনির ক্ষতি হয়।

Share