পুলিশ হেডকোয়ার্টারে কর্মরত পুলিশ সুপার ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সাবেক উপ-কমিশনার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে (৩৩) পরিকল্পিত ও টার্গেট করেই হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।আগে থেকে তার গতিবিধি লক্ষ্য এবং নজরদারিতে রেখেছিল তারা।
হত্যাকাণ্ডের প্রাথমিক আলামত দেখে এ ধারণা করছেন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে সিএমপির কর্মকর্তারা জানান, বাবুল আক্তার পরিবার নিয়ে ৩ বছর ধরে নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন ওআর নিজাম রোড (মেট্রোপলিটন হাসপাতালের পিছনের বিল্ডিং) ইক্যুইটি সেঞ্চুরিয়ান ভবনেই বসবাস করে আসছিলেন।
তার অনুপস্থিতিতে ছেলে মাহির ও মেয়ে তাবাসসুমকে নিয়ে স্ত্রী মিতু বাসায় থাকতেন। রবিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ছেলে মাহিরকে (৭) নিয়ে স্কুলের উদ্দেশে ঘর থেকে বের হন মিতু। বাসা থেকে হেঁটে গাড়িতে ওঠার জন্য জিইসির মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি।
মাহির বায়েজিদ সেনানিবাস এলাকায় অবস্থিত ক্যান্টনমেন্ট স্কুলের (কেএন পাবলিক) দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। বাসা থেকে বেরিয়ে মা ছেলে কয়েকশ গজ হেঁটে যেতে না যেতেই ওয়েলফুডের সামনে মোটরসাইকেলে আসা ৩ দুর্বৃত্ত তাদের গতিরোধ করে। প্রথমে তারা মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা মেরে মিতুকে রাস্তায় ফেলে দেয়। এরপর মিতুর হাত ধরে থাকা ছেলে মাহিরকে ছাড়িয়ে নিয়ে দূরে ঠেলে দিয়ে প্রথমে ছুরি দিয়ে আঘাত করে দুর্বৃত্তরা। পরে কানের কাছে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি চালায়।
এতে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন মিতু। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে দুর্বৃত্তরা মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত এলাকা ত্যাগ করে। সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার পাশে মিতুর রক্তাক্ত দেহ পড়ে আছে। লাশ কাপড় দিয়ে ঢাকা। বিপুল সংখ্যক নারী পুলিশ সদস্য ও ডিবি সদস্যরা ওই এলাকা ঘিরে রেখেছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। পুরো এলাকায় শত শত মানুষের ভিড়।
বাবুল আক্তারে ভাড়া বাসার (ভবনের গার্ড) মো. সাত্তার বলেন, ‘ম্যাডামকে বাচ্চা নিয়ে সকালে বেরিয়ে যেতে দেখেছি। তখন ভবনের আশপাশে তেমন সন্দেহজনক কাউকে দেখিনি। বাসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর দেখি উনার ছেলে হাপাতে হাপাতে গেটে চলে আসে। তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, তার মাকে মেরে ফেলেছে। এ কথা শুনেই আমরা কয়েকজন দৌড়ে গিয়ে দেখি ম্যাডামের লাশ রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।’
ঘটনার পরপরই সিএমপি পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘খুবই মর্মান্তিক এ ঘটনা ঘটিয়েছে সন্ত্রাসীরা। আমরা দ্রুত খুনিদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতারের ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইতোমধ্যে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চলছে। খুনিরা যাতে নগরী ছেড়ে যেতে না পারে তার জন্য বিভিন্ন পয়েন্টে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’ এ হত্যাকাণ্ডে জেএমবি জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি। এদিকে ঘটনার পরপরই সিআইডি, ডিবি, সিবিআই ও পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট ৫:৪০ পিএম, ০৫ জুন ২০১৬, রোববার
এইউ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur