মঙ্গলবার সরজমিনে পৌর এলাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে মানুষের সাথে কথা বলে তারা বিভিন্ন সমীকরণের তথ্য দেন। কেউ কেউ দলের বাইরে যাবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিলেও কেউ কেউ আবার দলের চেয়ে ব্যক্তিকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। মেয়র ও কাউন্সিলর দুই ক্ষেত্রেই এই চিত্র দেখা গেছে।
ফরিদগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রভাবশালী সকলকে টেক্কা দিয়ে নবীন ও তরুণ রাজনীতিবিদ এবং পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হক আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে যান। অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই মনোনয়ন পেয়ে যাওয়া তরুণদের কাছে জনপ্রিয় এই নেতা ভোট যুদ্ধে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন এ প্রথম আওয়ামী লীগের মেয়র হওয়ার জন্যে। অন্যদিকে ২০১১ সালে এ পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্বে এবং প্রার্থী নির্বাচনে দলীয় নেতা-কর্মী সকলের কাছে গ্রহণযোগ্যতা না থাকায় হেরে এর মূল্য দেয় বিএনপি। এ বছর সে ভুল করেনি তারা। শুরুতে বিভিন্নজনের নাম এলেও শেষ পর্যন্ত তারা ক্লিন ইমেজের নেতা হিসেবে চিহ্নিত উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি হারুন-অর-রশিদকে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয়। ফলে সকল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে উপজেলা বিএনপির সাবেক দুই কর্ণধার উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রকাশনা সম্পাদক সাবেক এমপি লায়ন হারুনুর রশিদ ও বিএনপির সাবেক সম্পাদক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোতাহার হোসেন পাটওয়ারী ঐক্যবদ্ধভাবে বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে মাঠে নেমেছেন।
অন্যদিকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করা স্বতন্ত্র প্রার্থী বলে কোনোক্রমেই পিছিয়ে নেই বর্তমান মেয়র মঞ্জিল হোসেন। বিগত ১৪ বছর ধরে কখনো মেয়র, কখনো প্রশাসক, আবার কখনো ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করা মঞ্জিল হোসেন দলীয় বৃত্তের বাইরে এসে নিজের একটি শক্ত অবস্থান গড়তে পেরেছেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে বিগত পৌরসভা নির্বাচনে তিনি যতটা সহজে পার পেয়েছেন এবার তা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সচেতন মহল। তাদের ধারণা নির্বাচনী লড়াইয়ে নৌকা ও ধানের শীষ এসে পড়ায় কিছুটা হলেও প্রভাব পড়বে ভোটারদের মাঝে।
তবে যে যাই বলুক, কাউন্সিলর প্রার্থীদের বাইরে পুরো পৌরসভায় আলোচনার প্রধান বিষয়বস্তু মেয়র নির্বাচন। মেয়র পদে মোট ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসবে না এমনটাই মনে করছে ভোটাররা। তাদের ধারণা এ পর্যন্ত মাঠের অবস্থায় নিশ্চিত বলা যাচ্ছে কঠিন ত্রিমুখী লড়াই হবে ।
ফরিদগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র ব্যতীত অংশগ্রহণকারী অন্য প্রার্থীরা হলেন সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডে কুসুম বেগম (কাঁচি), কহিনুর বেগম (ভ্যানিটি ব্যাগ) ও শাহিনা বেগম (আঙ্গুর), সংরক্ষিত ২নং ওয়ার্ডে সাবিনা ইয়াছমিন (কাঁচি) ও খতেজা বেগম (আঙ্গুর) এবং সংরক্ষিত ৩নং ওয়ার্ডে আলেয়া আক্তার (মৌমাছি), গীতা রাণী (ভ্যানিটি ব্যাগ),ফাতেমা বেগম (কাঁচি) ও মাহমুদা বেগম পারুল (আঙ্গুর)।
ওয়ার্ড অনুযায়ী প্রতীকসহ সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীরা হচ্ছেন : ১নং ওয়ার্ডে ইসমাইল হোসেন (টেবিল ল্যাম্প), মাছুম বিল্লাহ (পাঞ্জাবী), মোস্তফা কামাল সুমন (উটপাখি), সুলতান আহমেদ সুমন (ডালিম), মোঃ শাহজালাল (পানির বোতল)। ২নং ওয়ার্ডে মোঃ অহিদুর রহমান (পানির বোতল), আনোয়ার হোসেন (ডালিম), আব্দুর রব (টিউব লাইট), আবুল হাশেম (ঢেঁড়স), মোঃ ইমাম হোসেন পাটওয়ারী (গাজর), মাওঃ বিল্লাল হোসেন (বস্নাকবোর্ড), মোঃ মোস্তফা কামাল মিয়াজী (পাঞ্জাবী), মোঃ সাইফুর রহমান (উটপাখি), মোঃ হারুনুর রশিদ (ব্রিজ), মোঃ জাকির হোসেন (টেবিল ল্যাম্প)। ৩নং ওয়ার্ডে মোঃ আবু সায়েম খান (পাঞ্জাবী), ইউনুছ বেপারী (পানির বোতল), মোঃ জায়েদ হোসেন বাবুল (টেবিল ল্যাম্প), মহসিন তালুকদার (উটপাখি), মোঃ হুমায়ুন কবির (ডালিম)। ৪নং ওয়ার্ডে আবুল কাশেম (বস্নাক বোর্ড), মোঃ আঃ মান্নান পরান (উটপাখি), আবুল হোসেন গাজী (পানির বোতল), মোঃ ইকবাল হোসেন মিঠু (টেবিল ল্যাম্প), মোঃ নাছির উদ্দিন হাজী (ফাইল ক্যাবিনেট), রাসেল মিয়া (পাঞ্জাবী), মোঃ শফিকুল ইসলাম (গাজর) ও সহিদ উল্ল্যা বেপারী (ডালিম)। ৫নং ওয়ার্ডে মোঃ আবুল কালাম (উটপাখি), মোঃ জামাল উদ্দিন (পাঞ্জাবী), জাহিদ হোসেন (পানির বোতল) ও মোঃ মামুনুর রশিদ (ডালিম)। ৬নং ওয়ার্ডে আব্দুল খালেক মাস্টার (ডালিম), আব্বাস উদ্দিন বেপারী (টেবিল ল্যাম্প), মোঃ খলিলুর রহমান (উটপাখি), মাহবুব আলম জুয়েল (টিউব লাইট), মোঃ আলমগীর হোসেন মোল্লা (পাঞ্জাবী), মোঃ মজিবুর রহমান (বস্নাক বোর্ড) ও মোঃ সিরাজুদৌল্লাহ (পানির বোতল)। ৭নং ওয়ার্ডে আবুল খায়ের পাটওয়ারী (ঢেঁড়স), এমরান হোসেন মিজি (বস্ন্যাক বোর্ড), মোঃ তাজুল ইসলাম (উটপাখি), মোঃ ফিরোজ মিয়া (পাঞ্জাবী) ও মোহাম্মদ হোসেন (পানির বোতল)। ৮নং ওয়ার্ডে অরুণ পাল (টেবিল ল্যাম্প), উৎফল চন্দ্র সাহা (বস্নাক বোর্ড), মোঃ জাকির হোসেন গাজী (উটপাখি), মোঃ নজরুল ইসলাম (পানির বোতল), মোঃ মুরাদ হোসেন পাটওয়ারী (পাঞ্জাবী) ও মোঃ লিয়াকত আলী পাটওয়ারী (ডালিম)। ৯নং ওয়ার্ডে মোঃ আব্দুল গফুর মিয়া (ডালিম), মোঃ মজিবুর রহমান (পানির বোতল), মোঃ মাহমুদুল হাছান মঞ্জু (পাঞ্জাবী), লুৎফুর রহমান (উটপাখি)।
নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৮:০২ এএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫, বুধবার
এমআরআর
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur