প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ভারত সফরে যেসব সমঝোতা স্মারক সই করেছেন, সেগুলোর মধ্যে একটি রেল ট্রানজিট। ভারতকে রেল ট্রানজিট সুবিধা দিয়ে বাংলাদেশ বিনিময়ে কী পেল, তা নিয়ে নানা সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। কেউ কেউ অভিযোগ তুলেছেন দেশ বিক্রিরও। তবে এমন অভিযোগের কড়া সমালোচনা করেছেন সরকারপ্রধান।
তিনি বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা দেশ বিক্রি করে না, আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। বরং যারা অভিযোগ তোলে তারাই বিক্রি হয়।’
ভারতকে রেল ট্রানজিট দেওয়ার বিষয়ে যারা অভিযোগ তুলেছেন, সরকারপ্রধান তাদের পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, ‘কিসের মাপে দেশ বিক্রি হচ্ছে, বিক্রিটা হয় কীভাবে? যারা সমালোচনা করে, তাদের জানা উচিত, একটি মাত্র মিত্রশক্তি মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে। বিশ্বে যারাই অন্য দেশকে স্বাধীনতায় সহযোগিতা করেছে, তারা কিন্তু ফেরত যায়নি।
একমাত্র ভারত ব্যতিক্রম।’
মঙ্গলবার (২৫ জুন) বেলা ১১টায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিক্রিটা হয় কীভাবে। তারা নিজেরাই ভারতের কাছে বিক্রি হয়।
জিয়া এরশাদ খালেদা, ভারতবিরোধী কথা বলেছে আর ভারতে গিয়ে পা ধরে বসে ছিল, সেটা আমরা জানি।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থা উন্মুক্ত করে দিলে দেশের মানুষই উপকৃত হবে। কারণ নানা কাজে তাদের ভারতে যেতে হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ অন্য দেশকে ট্রানজিট সুবিধা দেয়। এতে দেশ বিক্রি হয়ে যায় না।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের নতুন সরকার গঠনের পর এটিই ছিল কোনো দেশে আমার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর। একইসঙ্গে ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচন-পরবর্তী সরকার গঠনের পর ভারতেও ছিল এটি প্রথমবারের মত কোনো রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধানের দ্বিপাক্ষিক সফর। এটি অবশ্যই আমার এবং বাংলাদেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত সম্মানের। পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সহযোগিতামূলক বিশেষ সম্পর্কেরই বহিঃপ্রকাশ। ভারত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও নিকটতম প্রতিবেশী, বিশ্বস্ত বন্ধু এবং আঞ্চলিক অংশীদার। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে সম্পর্কের সূচনা হয় তাকে বাংলাদেশ সবসময়ই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই দেশই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়সহ উচ্চপর্যায়ের মধ্যে যোগাযোগ ও সহযোগিতা অব্যাহত রেখেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের টানা তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার নবগঠিত মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান গত ৯ জুন অনুষ্ঠিত হয়। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমি ৮ থেকে ১০ জুন নয়াদিল্লি সফর করি। সেখানে প্রতিবেশী দেশগুলোর রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানসহ অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তি আমন্ত্রিত ছিলেন। সেই সফরে আমি ভারতের রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের পাশাপাশি ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত দক্ষিণ এশিয়াসহ অন্যান্য দেশগুলোর একাধিক সরকার প্রধানের সঙ্গে মতবিনিময় করি। পাশাপাশি আলাদাভাবে আমার সঙ্গে ভুটান এবং শ্রীলঙ্কার সরকার প্রধানদের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। এসব আলোচনা ও বৈঠক আমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ককে সুদৃঢ় করতে সহায়ক হবে।
চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক/২৫ জুন ২০২৪