ফরিদগঞ্জ

সন্তোষপুর বেড়ি বাজার-বেপারী বাজার : রাস্তা তো নয় যেনো মরণফাঁদ

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১১ নং চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের সন্তোষপুর বেড়ি বাজার থেকে বেপারী বাজার হয়ে সন্তোষপুর দরবার শরীফ পর্যন্ত ১.২ কি. মি. রাস্তা মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।

১৪ বছর আগে পুন:নির্মিত রাস্তাটি চলতি বর্ষা মৌসুমে এসে যানবাহন ও জনসাধারণের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

বিশেষ করে এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াতকারী পাশ্ববর্তী ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থী, পথচারী, সন্তোষপুর দরবার শরীফে আসা লোকজনকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এছাড়া যানবাহনগুলো অত্যন্ত ঝুঁকির নিয়ে রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে।

এদিকে দ্রুততম সময়ে রাস্তাটি সংস্কারে ফরিদগঞ্জের শীর্ষ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ জনসম্মুখে একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসলেও এখনো রাস্তাটি সংস্কার হয়নি। এনিয়ে যানবাহন চালক, পথচারী ও স্থানীয় জনগণ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, সন্তোষপুর বেড়ি বাজারের ব্রিজ থেকে বেপারী বাজার পর্যন্ত রাস্তাটির কার্পেটি উঠে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায়ই গর্তে পড়ে গাড়ি উল্টে যায়।
এ বিষয়ে সন্তোষপুর দরবার শরীফের পীর আলহাজ¦ হযরত মাও. শাহ আব্দুল করিম বিন মুহাম্মদ চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘এ রাস্তা দিয়ে সন্তোষপুর দরবার শরীফ কমপ্লেক্স-এর মসজিদ, মাদ্রসা, এতিমখানা ও লিল্লাহবডিং, হাফেজিয়া মাদ্রাসা, খানকা শরীফসহ বেপারী বাজার হাই স্কুল, সন্তোষপুর আলিম মাদ্রাসা, সন্তোষপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেপারী বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উদয়ন একাডেমীর হাজারো শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে।’

তিনি আরো জানান, ‘সন্তোষপুর দরবার শরীফে ২দিন ব্যাপি বার্ষিক মাহফিলে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম ঘটে। এই রাস্তাটির জন্যে আগত সকল মুসল্লিকে তখন চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
অপরএক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গত দুই বছরের মাহফিলে এসে স্থানীয় এমপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দ্রুত রাস্তাটি সংস্কার করে দিবেন। কিন্তু অদ্যাবদি রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় আমরা কষ্ট পাচ্ছি।’

এ বিষয়ে স্থানীয় তছলিম ভূঁইয়া, মোজাম্মেল হক সুমন, হাজী জয়নাল আবদীন, আনোয়ার হোসেন, মো. লোকমান হোসেন চাঁদপুর টাইমসকে কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘৮ বছর পূর্বে একবার রাস্তাটির সংস্কার কাজ করা হয়। পরবর্তীতে আর সংস্কার করা হয়নি। সন্তোষপুর দরবার শরীফের মাহফিলে স্থানীয় এমপি দু’বার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাস্তাটিটি মজবুতভাবে করে দিবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত বেহাল রাস্তাটি সংস্কারে কোন উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’

ইউপি সদস্য ওসমান গনি বাচ্চু বলেন, ‘রায়পুর, চরচন্না, চরদুঃখিয়া, সন্তোষপুর, বিরামপুর, আলোনিয়া, বেপারী বাজার সহ নিকটবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রামের জনসাধারণ এ রাস্তাটি ব্যবহার করে। প্রতিদিন দশ সহ¯্রাধিক মানুষ রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করে। আপাতত ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে বালি পেলে রাস্তাটি চলাচলের উপযোগী করা হবে।’

ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘১১ নং ইউনিয়নের যে ১২টি রাস্তা মেরামতের তালিকায় রয়েছে তার মধ্যে বেড়ির বাজার থেকে হুজুরের বাড়ি পর্যন্ত রস্তাটি তালিকার এক নাম্বারে রয়েছে। এমপি সাহেবের প্রতিশ্রুত এই রাস্তাটি এখন টেন্ডার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।’

ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি রুহুল আমিন জমাদার চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘এমপি মহোদয় রাস্তাটি দ্রুত করার জন্যে সুপারিশ করেছেন। সহসাই রাস্তাটির সংস্কার করা হবে।’
ইউপি চেয়ারম্যান বাছির আহম্মেদ চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘গতকাল (৫ আগস্ট) কিছু বালি ফেলা হয়েছে রাস্তাটি যাতে জনগনের ভোগান্তি কম হয়।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘গত ৫ বছরে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি পাকা রাস্তা হয়েছে ১১ নং ইউনিয়নে। বেড়ি বাজার থেকে বেপারী বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি পাকাকরণ ও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

ফরিদগঞ্জ এলজিইডি অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আইয়ুব আলী চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘সম্প্রতি বেপারী বাজার থেকে সন্তোষপুর দরবার শরীফ পর্যন্ত ১.২ কি.মি. রাস্তার টেন্ডার পক্রিয়া শেষ হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে রাস্তাটি সংস্কার কাজ শুরু হবে।’

প্রতিবেদক- আতাউর রহমান সোহাগ

Share