তীব্র যানজটে অতিষ্ঠ চাঁদপুর শহরবাসী, দিনের বেলায় চলছে ট্রাক-লরী

করোনার সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত লকডাউন শেষ হওয়ার পর থেকে চাঁদপুর শহরে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। মাত্রাতীত এই যানজটে নাকাল এখন চাঁদপুর শহন। রিক্সা -ভ্যান, ট্রাক-লরীর যানজট যেন শহরের নিত্যদিনের চিত্র। এই যানজটের কবলে পড়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে চাঁদপুর শহরবাসী। দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে শহরের ব্যবসায়ী, অফিসগামী ও সাধারণ পথচারীদের।

চাঁদপুর শহরের প্রধান সড়ক মিশন রোড়, মুক্তিযোদ্ধা সড়ক, আব্দুল করিম পাটোয়ারী সড়ক, কুমিলা রোডে এই যানজটকে প্রকট করে তুলেছে। এসব রোডের মিশনরোড় মোড়, ছায়াবানি মোড়, চিত্রলেখা মোড়, শপথচত্বর, কালিবাড়ি মোড় এবং পালবাজার মোড়ে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অসহনীয় যানজট দেখা দিচ্ছে। আর শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে পাড়া মহল্লার ছোট ছোট রাস্তাগুলোকে বাইপাস সড়ক হিসেবে ব্যবহার করছে সিএনজি-অটোরিকশার চালকরা। এতে করে শহরের ভেতরে এসব পাড়া-মহল্লার রাস্তাগুলোতেও যানবাহনের জটলা দেখা যায়।

আর দিনের বেলায় শহরের ভিতর দিয়ে ট্রাক-লরীর মতো বড় বড় যানবাহন চলাচলের নিয়ম না থাকলেও চালকরা সেটি মানছে না। এভাবে চালকদরে মাঝে ট্রাফিক আইন না মানায় প্রবনতা বাড়তে থাকায় এসব সড়ক দিনের বেশিরভাগ সময় যানজটে স্থবির হয়ে থাকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁদপুর শহরে নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত কয়েক হাজার চার্জার রিকশা ও অটোরিকশা চলাচল করে। শহরে মানুষের তুলনায় এসব ছোট যানবহন বেশি হওয়ায় মূলত যানজট সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখছে। এছাড়া শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার পাশে ভ্যানগাড়িতে ভ্রাম্যমাণ ফল ও তরকারির দোকান এবং যত্রতত্র সিএনজি ও অটোরিকশার অলিখিত স্ট্যান্ডের কারণে এই যানজট মারাত্মক আকার ধারন করেছে।

১৯ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শহরের শহরের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা শপথ চত্বরের তীব্র যানজট দেখা যায়। এমন যানজটের মধ্যেও শপথচত্বর পূর্বপাশে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়কে প্রবেশমুখের দুইপাশে অসংখ্য সিএনজি স্ট্যান্ড করে রেখে যাত্রী ওঠা নামা করতে দেখা গেছে। এই স্থানটিতেতে পৌরসভা থেকে পার্কিং নিষেদ লেখা সাইনবোর্ড থাকলেও তার নিচেই একটি অলিখিত স্থায়ী স্ট্যান্ড গড়ে তুলেছে সিএনজি চালকরা। তারা সেখান থেকে ডেকে কেডে সিএনজি ও অটোরিকশায় যাত্রী তুলছে।

একই চিত্র দেখা গেছে শহরের ছায়াবানি মোড় এবং চাঁদপুর-পুরানবাজার সংযোগ সেতুতে। সেতুর পালবাজার প্রান্তে সাড়ি সাড়ি সিএনজি স্ট্যান্ড করে যাত্রী উঠানো-নামানো হচ্ছে। ফলে বড় ধরনের বাস, ট্রাক এলেই চরম যানজটে আটকে পড়তে হয়। যার প্রভাব পড়ছে শপথচত্বর পর্যন্ত।

চাঁদপুর পৌরসভা সূত্রে জানা যায় শহরে প্রায় ৩ হাজার লাইসেন্সকৃত অটোরিকশার রয়েছে। তবে এর বাইরে অবৈধভাবে আরো ৪/৫ হাজার অটোরিকশা চলছে বলে সচেতন মহলের দাবী। সচেতন মহল বলছে মূলত মাত্রাতীত অটোরিকশার কারণে যানজট বাড়ছে। আপাতত অনিবন্ধিত অটোরিকশা গুলো চলচাল বন্ধ করা গেলে শহরের যানজট কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব।

পাশাপাশি দিনের বেলায় বড় বড় যানবাহনন-যেমন ট্রাক ও তেলবাহী লরিগুলো চলচাল বন্ধ করা খুবই প্রয়োজন। চাঁদপুরবাসীকে অসহনীয় এই যানজট থেকে পরিত্রাণ দিতে পৌরসভা এবং প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছে শহরবাসী।

প্রতিবেদক:আশিক বিন রহিম, ২০ আগস্ট ২০২১

Share