Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে যাত্রী সংকটে অর্ধেকে নেমেছে লঞ্চ চলাচল
যাত্রী

চাঁদপুরে যাত্রী সংকটে অর্ধেকে নেমেছে লঞ্চ চলাচল

চাঁদপুরে যাত্রী সংকটে অর্ধেকে নেমেছে লঞ্চ চলাচল। ঢাকা-চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ রুটে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রতিদিন যেখানে অর্ধশতাধিক লঞ্চ চলাচল করতো সেখানে এখন মাত্র ২০-২৫টি চলাচল করছে। লোকসানের মুখে এ রুটে যাতায়াতকারী অধিকাংশ লঞ্চমালিক কর্মচারীদের বেতন দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন।

এদিকে চাঁদপুর লঞ্চঘাটে যাত্রী কমায় প্রভাব পড়েছে যানবাহন ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। যাত্রী কমে যাওয়ায় অনেক শ্রমিক বিভিন্ন কাজে চলে যাচ্ছেন। বর্তমানে লঞ্চের শ্রমিক থেকে শুরু করে যানবাহন চালক ও ব্যবসায়ী অলস সময় পার করছেন।

লঞ্চের স্টাফ ও মালিক প্রতিনিধিরা জানান, আগে দক্ষিণাঞ্চলসহ আশপাশের মানুষ এ রুট ব্যবহার করত। পদ্মা সেতু ও সড়ক পথ উন্নত হওয়ায় যাত্রীরা বাস ও ভাড়ায়চালিত মাইক্রো প্রাইভেটকারে যাতায়াত করছেন। তবে বর্ষা ও কালবৈশাখী মৌসুমে নদীপথে যাত্রী কমে যায় অনেকটা।

চাঁদপুর লঞ্চঘাটে এমভি রহমত লঞ্চের সুপারভাইজার সোহেল ও কেরানি আলমগীর জানান, আগে বছরে দুটি ঈদ ছাড়াও বিশেষ দিনগুলোতে যাত্রী পরিপূর্ণ ছিল লঞ্চগুলোতে। এছাড়া সাধারণ সময়ে যা খরচ হতো মোটামুটি সেটি পুষিয়ে নেওয়া যেত। কিন্তু গত দু-তিন বছর ধরে যাত্রী কমেছে। যার কারণে অনেক লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষ লঞ্চ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। যে সব মালিকের তিন-চারটা লঞ্চ চলাচল করতো লোকসান হওয়ায় এখন একটি লঞ্চ চলাচল করে।

তারা আরও জানান, প্রতিদিন একটি লঞ্চে যাতায়াত খরচ হয় ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা। এরমধ্যে লঞ্চের শ্রমিকদের বেতন তো আছে। বর্তমানে প্রতি সার্ভিসে ২০-৩০ হাজার টাকা লোকসানের মুখে পড়ছে লঞ্চ মালিকরা। আগে ঢাকা-চাঁদপুর অধিকাংশ লঞ্চ যাতায়াত করলেও যাত্রী কমায় এখন লঞ্চগুলো অন্য রুটেও যাতায়াত করছে।

যাত্রী সংকটে অর্ধেকে নেমেছে লঞ্চ চলাচল

চাঁদপুর লঞ্চঘাটে এমভি রহমত লঞ্চের যাত্রী মঞ্জু আহমেদ বলেন, লঞ্চে যাতায়াত করা অনেকটা আরামদায়ক। তবে দ্রুত যাতায়াত করার জন্য অধিকাংশ সময় সড়ক পথে ঢাকা যাতায়াত করি। বিশেষ করে এ সিজনে অনেক ঝড় তুফান হয়। এজন্য ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় অনেকে লঞ্চে করে যেতে চায় না।

চাঁদপুর লঞ্চ মালিক প্রতিনিধি বিপ্লব সরকার জানান, প্রথমত সড়কপথে যাতায়াত সুবিধা হওয়ায় যাত্রীরা এখন সেখানে ঝুঁকছেন। দ্বিতীয়ত বৈরী আবহাওয়ার কারণে মানুষ এখন লঞ্চে উঠতে চায় না। এছাড়া যত্রতত্র স্ট্যান্ড বসিয়ে কম টাকায় মাইক্রো-প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করছে। আমি মনে করি বিআইডব্লিউটিএ ও মালিকরা যৌথ সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে লঞ্চের সেবা বৃদ্ধি করতে হবে।

তিনি আরও জানান, এখন প্রতিটি লঞ্চ লোকসানের মুখে। অনেক মালিক বাধ্য হয়ে লঞ্চ বন্ধ করে দিচ্ছেন।

চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক বসির আলী খান জানান, ঢাকা-চাঁদপুর রুটে সব সময় কিছু না কিছু যাত্রী থাকে। তবে সড়ক পথে সময় কম লাগায় এখন মানুষ বাস ও মাইক্রোবাসে যায়। যারা নদীপথ আরামদায়ক মনে করেন তারাই লঞ্চে যাতায়াত করেন।

প্রতিবেদক: শরীফুল ইসলাম, ৭ মে ২০২৫