১৪ বছর আগে চাঁদপুরে মেঘনা নদীর মোহনায় এমভি নাসরিন-১ নামের লঞ্চডুবির ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারকে ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।
২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সপ্তম যুগ্ম জেলা জজ আদালত দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৪০০ ব্যক্তির মধ্যে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবার ১০ লাখ টাকা এবং আহতদের প্রত্যেকে এক লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে জারি করা রুল খারিজ করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার (৫ জুন) এ রায় দেন।
এর আগে ওই আদেশের বিরুদ্ধে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ও বিআইডব্লিউটিএ ওই বছরের ২৪ অক্টোবর হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে।
হাইকোর্ট পরদিন নিম্ন আদালতের রায় কেন বাতিল ও রদ করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
সোমবার ওই রুল খারিজ করে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখার আদেশ দেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ৮ জুলাই ঢাকার সদরঘাট থেকে ভোলার লালমোহনে যাওয়ার পথে চাঁদপুরের মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মোহনায় এমভি নাসরিন-১ ডুবে যায়।
ওই ঘটনায় লঞ্চ মালিকসহ ১১০ জন নিহত এবং ১৯৯ জন নিখোঁজ হন। পরে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৪০০ পরিবারের একটি তালিকা প্রকাশ করে।
এর ভিত্তিতেই নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে প্রায় ৭০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয় নৌ-দুর্যোগ ট্রাস্টি বোর্ড।
২০০৪ সালে এই ক্ষতিপূরণকে ‘অপ্রতুল’ জানিয়ে ২৮ কোটি ৯৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকার দাবিতে ঢাকার তৃতীয় জেলা জজ আদালতে ক্ষতিপূরণ মামলা করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)।
এক যুগ পরে ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ওই মামলার রায় দেয় ঢাকার সপ্তম যুগ্ম জেলা জজ আদালত। রায়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ৬০ দিনের মধ্যে ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়।
লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ও বিআইডব্লিউটিএ ২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবর হাইকোর্টে আবেদন করলে নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে রুল জারি করেন। সোমবার এ রুল খারিজ করে নিম্ন আদালতের বহাল রাখেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টে রাষ্ট্রের পক্ষে ছিলেন ড. কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট কামরুল হক সিদ্দিকী ও সুব্রত চৌধুরী।
লঞ্চ মালিক কর্তৃপক্ষ ও বিআইডব্লিউটিএসহ অন্য বিবাদীদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার, অ্যাডভোকেট রাফসান আলভী ও ইশরাত হাসান।
নিউজ ডেস্ক
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৭: ০০ পিএম, ৬ জুন ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ