শুষ্ক মৌসুমেও যমুনা নদীর তীব্র স্রোতের ধাক্কায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি, খুকনী ও জালালপুর ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ সব গ্রামের মানুষ অসময়ের ভাঙনের তীব্রতায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
গত ১ সপ্তাহের ভয়াবহ ভাঙনের কবলে শতাধিক বাড়িঘর, ২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ১টি চিকিৎসা কেন্দ্র, ২টি মসজিদ, ১টি ঈদগাহ মাঠ, ৫০টি তাঁত কারখানা, ৪ শত বিঘা আবাদি জমি, ৩ কিলোমিটার কাচা সড়ক, ১টি মাদ্রাসা ও ২ শতাধিক গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
যমুনায় ভয়াবহ ভাঙন এর কবলিত গ্রামগুলো হচ্ছে ব্রাহ্মণগ্রাম, আরকান্দি, পাকুরতলা, কুঠিরপাড়া, বাঐখোলা, ঘাটাবাড়ি, ভেকা, জালালপুর, চিলাপাড়া ও পাচিল।
এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লুৎফর রহমান, আব্দুল লতিফ, বেলাল হোসেন, মনা প্রামাণিক, সোনা উল্লাহ, আমজাদ হোসেন জানান- গেল বন্যায় এ এলাকার ৪ শতাধিক বাড়িঘর যমুনা নদীতে বিলীন হয়েছে। এতে প্রায় অনেক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। আবারও ভাঙন শুরু হওয়ায় তারা অস্তিত্ব সংকটে পড়েছেন। বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মিছিল মিটিং ও মানববন্ধন করেও কোন কাজ হয়নি। ফলে প্রশাসনের প্রতি তারা আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন।
খুকনী ইউপি চেয়ারম্যান মুল্লুক চাঁদ মিয়া, জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ ও কৈজুরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল উসলাম জানান, যমুনা নদীতে এই অসময়ে ভাঙন নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না।
তারা বলেন, স্থায়ী তীর সংরক্ষণ বাঁধ নির্মাণকাজ কবে শুরু হবে, সেই অপেক্ষায় থাকলে এসব গ্রাম সম্পূর্ণরূপে অস্তিত্ব হারাবে। এই ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
বুধবার দুপুরে রাজশাহী পাউবোর উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন, বগুড়া পাউবো সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী তারিক আব্দুল্লাহ, সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম ও উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম।
প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী জানান, যমুনায় ভয়াবহ ভাঙন এর ফলৈ প্রায় ৮শ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে ৬ কিলোমিটার স্থায়ী তীর সংরক্ষণ কাজ ও ১০ কিলোমিটার নদী ড্রেজিং প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে এ প্রকল্প অনুমোদন হয়ে কাজ শুরু হবে।