Home / সারাদেশ / মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলন ২৯ নভেম্বর
fisheries

মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলন ২৯ নভেম্বর

আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের জাতীয় সম্মেলন শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) এ প্রথম সংগঠনটির জাতীয় সম্মেলন হতে যাচ্ছে। রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ওই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

সম্মেলনের সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে সংগঠনটি। এবারের সম্মেলনের মাধ্যমে দিয়ে আওয়ামী লীগ সহযোগী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় কথা রয়েছে মৎস্যজীবী লীগের। এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে। সম্মেলনকে ঘিরে পদ প্রত্যাশী নেতারাও উজ্জীবিত। শীর্ষ পদে আসতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বলছেন,সংগঠনের দক্ষ-ত্যাগী ও নতুন নেতৃত্ব চান তারা।

সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক নারায়ণ চন্দ্র চন্দ দৈনিক জাগরণকে বলেন,‘ সম্মেলনের প্রস্তুতি সব শেষ হয়েছে। এবারই সংগঠনের সম্মেলন বড় আকারে হচ্ছে। এবার যেহেতু দলের থেকে সহযোগী সংগঠনের স্বীকৃতি পাওয়ার একটি সম্মতি পাওয়া গিয়েছে এ কারণে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনাটাও বেশি। তিনি জানান, সম্মেলনে সবকিছুই ভালই হবে বলে আশা করছি। সার্বিক ব্যবস্থাপনা সেটা ভালভাবেই নেয়া হয়েছে।’

সংগঠন সূত্রে জানা গেছে,এর আগে সংগঠনটির ৪ বার সম্মেলন হলেও তা জাতীয় সম্মেলন হিসাবে হয়নি। তবে আসছে শুক্রবার সংগঠনটির ৫ম সম্মেলনটি জাতীয় সম্মেলন হিসেবে হতে যাচ্ছে। সংগঠনটি আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে না থাকলেও রাজপথে ছিল সক্রিয়।

মৎস্যজীবীদের অধিকার আদায়ে ও মৎস্যসম্পদ বিকাশে ২০০৪ সালের ২২ মে মৎস্যজীবী লীগের যাত্রা শুরু হয়। ওই সময়ে সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্ব পান সাইদুর রহমান সাঈদ,সাধারণ সম্পাদক হন মো.আবুল বাশার। সংগঠনটি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা-সমাবেশ সফল করাসহ নিয়মিত নিজস্ব কর্মসূচি পালন করে থাকে মৎস্যজীবী লীগ। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই সংগঠনটির সম্মেলন হয়নি।

জানা গেছে, সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে এসেছে। সংগঠনের গঠিত ৮টি উপ-কমিটির সদস্যরা প্রতিনিয়ত বৈঠক করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও বাস্তবায়ন শুরু করেছেন। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটশন মিলনায়তনে সম্মেলনের মূল আয়োজন করা হচ্ছে।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার কারণে মঞ্চ ও গোটা ফার্মগেট এলাকা ঘিরে নানা ধরনের ব্যতিক্রমী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সংগঠনটি। একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্রীয় একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রী না থাকতে পারলে, তার নির্দেশ মোতাবেক দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সম্মেলনে থাকবেন বলে জানা গেছে।

মৎস্যজীবী লীগের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে মৎস্যজীবী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত হয়েছে । নতুন সম্মেলনের লক্ষ্যে নারায়ণ চন্দ চন্দ্রকে সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক ও সাম্প্রতি লায়ণ শেখ আজগর নস্করকে সদস্য সচিব করা হয়েছিল।

সম্মেলন করার জন্য দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনা থাকলেও ওই সালে কেন্দ্রীয় সম্মেলন হয়নি। কারণ হিসেবে কর্মীরা বলছে, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির শীর্ষ দুই জনের অনিচ্ছা ও আগ্রহীনতার কারণে সম্মেলন হয়নি। কারণ ৩ বছরেও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির পূর্ণাঙ্গ করতে পারেনি। তাই এবার নতুন নেতৃত্বের মাধ্যমে পুনরায় সংগঠনকে উজ্জাবীত দেখতে চান নেতাকর্মীরা।

দলীয় ও সংগঠনের সূত্র জানিয়েছে,৫ম সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্বের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের শক্ত অঙ্গ সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মৎস্যজীবী লীগের। যার কারণে সংগঠনটির নতুন নেতৃত্ব ঘিরে এক ধরনের লড়াই শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পদে আসতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন সংগঠনটির বেশ কয়েকজন নেতা।

সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে লবিং করছেন একাধিক প্রার্থী। সম্মেলন ঘিরে সংগঠনটিতে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ পদে আসতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন বেশ কয়েকজন নেতা।

তাদের শোডাউন, মিছিল, ব্যানার ফেস্টুন শোভা পাচ্ছে আওয়ামী লীগের ২৩ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং ধানমণ্ডির দলীয় সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে। ২৩ বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অফিস ও ধানমণ্ডি দলীয় সভাপতির কার্যালয়ে সংগঠনের নেতাকর্মীদের আনাগোনা লক্ষ্যণীয়।

পদ প্রত্যাশী নেতারা ধারণা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বাসা-অফিসে। সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতা একাধিকবার গণভবনে গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও দেখা করেছেন বলে জানা গেছে।

এবারের সম্মেলনে সংগঠনের পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন-বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ চন্দ্র, সদস্য সচিব ও সাবেক কার্যকরি সভাপতি শেখ আজগর নস্কর ও সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট হারুন অর রশিদ আলোচনায় রয়েছেন।

অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন- সংগঠনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক টিপু সুলতান, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল আলম মানিক, সাবেক ছাত্রনেতা ও বর্তমানে শৃঙ্খলা উপ-কমিটি সদস্য সচিব মুহাম্মদ আলম।

গত অক্টোবরে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আওয়ামী লীগের তিনটি সহযোগী ও একটি ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলনের তারিখের কথা জানানো হয়। তাতে মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলনের তারিখও ছিল। এরপর থেকেই আলোচনায় আসে মৎস্যজীবী লীগ।

আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, দেশের প্রায় ২ কোটি মানুষ মৎস্য উৎপাদন,পরিবহন ও বিপণনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ খাত থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়। পাশাপাশি সমুদ্রসীমা বিজয় ও ব্লু ইকোনমিসহ সার্বিক বিষয় মাথায় রেখেই মৎস্যজীবী লীগকে আলাদা গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

এরই অংশ হিসেবে আপাতত ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের মর্যাদা দেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। আর সবকিছু বিবেচনা করে এবারের সম্মেলনে মৎস্যজীবী লীগকে সহযোগী সংগঠন হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার কথা রয়েছে।

বার্তা কক্ষ ,২৮ নভেম্বর ২০১৯