শনিবার রাতে ম্যানচেস্টার ডার্বিতে ইউনাইটেড বলতে গেলে সিটিজেনদের ভিত নড়িয়ে দিলো। এদিন লিগ শিরোপার রেইসে থাকা দল লিভারপুলও জয় পেয়েছে তিন গোলের ব্যাবধানে প্রতিপক্ষ বোর্নমাউথের বিপক্ষ।
তাই ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে লিগ শিরোপার দৌড়ে টিকে থাকতে হলে সিটিজেনদেরকে জয় ছাড়া কিছুই বিকল্প ছিল না।এরপর আবার নিজেদের ঘরের মাঠ ইতিহাদ স্টেডিয়ামে খেলা। নিজেদের মাঠে খেলার সুবিধাও যেমন বেশি, তেমনি সমর্থকদের প্রত্যাশাও থাকে একটু বেশিই।
এই প্রত্যাশার চাপেই বোধহয় পেপ গার্ডিওলার শিষ্যদেরকে খানিকটা চাপে ফেলে দিয়েছিল। তা না হলে এবারের এই ইউনাইটেডের বিপক্ষে প্রথম অর্ধের ৪৫ মিনিটে কেনইবা তুলনামূলকভাবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে বল পজিশনে এগিয়ে থেকেও বারবার গোলবারের কাছে গিয়ে খেই হারাবেন।বল পজিশনে সিটিজেনরা দখলে ছিল পুরো ম্যাচে ৮৯%। অপরপক্ষে,রেডডেভিলদের ছিল ৭২%।
সে যাই হোক,রেডডেভিলদের সিটিজেনদের মত লিগ শিরোপা জেতার মত এত বড় রকমের প্রত্যাশ্যা ছিল না।ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের প্রত্যাশা ছিল কোন রকমে খানিকটা ভালো খেলে নিজেদেরকে লিগ টেবিলের কিছুটা উপরে নিয়ে যাওয়া। শুটেও এগিয়ে ছিল ম্যানচেস্টার সিটি।সিটি মোট ২২ বার শুট নেয়।অন্যদিকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড শুট নেয় ১১ বার।অন টার্গেট শুটে অবশ্য সিটির থেকে ম্যানইউ এগিয়ে ছিল।অন টার্গেট শুট ম্যানইউ নেয় ৭ বার,আর মোট ৫ বার গোল মুখে অন টার্গেট শুট নেয় সিটি।
বলতে গেলে এদিন ভাগ্য বিধাতাও বুঝি ওলেগানা শ্যোলশারের দলের পক্ষেই ছিলেন।তা না হলে কি এক আজব কারণেই ম্যানচেস্টার সিটি ফাউল করে বসলো ডি বক্সের ভেতরে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এর খেলোয়াড়কে।ফলাফল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড পেয়ে গেলো পেনাল্টি শুট আউট।
পেনাল্টি প্রথমে রেফারি না দিলেও। ফুটবলে সমসাময়িক যুক্ত হওয়া বিভিন্ন প্রযুক্তির মধ্যে একটি ভিডিও এ্যাসিসটেন্ট সিস্টেম বা ভি. এ. আর. এর কল্যানে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড পায় পেনাল্টির সুযোগ।
এই সুযোগ কি আর বৃথা করা যায়!সুযোগের পুরোপুরিটা আদায় করে নিলেন রেডডেভিলস উইঙ্গার মারকাস রাশফোর্ড।২৩ মিনিটে গোল কিপারকে ভেঙ্গচি কেঁটে করলেন দলের হয়ে প্রথম গোল।যা কিনা ২০১৯-২০ মৌসুমে সকল প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে রাশফোর্ডের ১৩ তম গোল।
মার্কাস রাশফোর্ডের পর দ্বিতীয় গোলটি করেন এ্যান্থনি মার্শাল ২৯ মিনিটে।দ্বিতীয় গোলটি করার পর ইউনাইটেড সাবেক বস স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসন গ্যালারী থেকে দাঁড়িয়ে অভিবাদন দিলেন খেলোয়াড়দের।রাজ্যের হাসিও ছিল স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের চোখে-মুখে।সাবেক ম্যানইউ বস হয়তো তখনই বুঝে গিয়েছিলেন ইতিহাদে জয় আমাদের সুনিশ্চিত।ম্যানচেস্টার সিটি প্রথম অর্ধে চেস্টা করেও গোলের দেখা পায়নি।পুরো ম্যাচে কর্ণার, পাসেস এবং পাস একুরেসিতে ইউনহাইটেড থেকে ঢের এগিয়ে ছিল সিটিজেন।কিন্তু প্রত্যাশিত গোলের স্কোরটি হচ্ছিল না।৮৩ মিনিটে সান্তসূচক গোলটি করেন বদলি সেন্টার বেক নিকোলাস ওতামেন্ডি।
রাশফোর্ড, লিঙ্গার্ড, ফ্রেডরা যে মানের খেলা খেলেছেন এতে করে প্রত্যাশিত জয়টি প্রাপ্যই ছিলো ম্যান ইউনাইটেডের।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সাবেক ম্যানেজার বরখাস্ত হয়েছেন বছরখানেক হবে।এরপর দায়িত্ব আসে ওলেগানা শ্যোলশারের উপর। শ্যোলশারের দায়িত্ব নেওয়ার পর যে দলের অবস্থা খুব ভালো হয়ে গিয়েছিলো তা কিন্তু নয়।ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সমর্থকরা দলের সাম্প্রতিক পারফর্মেন্সে হতাশই ছিলেন।
লিগের মধ্যে তুলনামুলকভাবে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের চেয়ে শেষ ১০ টি খর্বশক্তির দলগুলোর বিপক্ষে যেরকম হতশ্রী পারফর্ম করছিলো।
পরপর টটেনহাম হটস্পার এবং ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে হারানো।উভয় দলের বিপক্ষে জয়ের ক্ষেত্রে স্কোর লাইনও সমান। ২-১ ব্যাবধানে জয়। বর্তমান অবস্থা দেখে খানিকটা সস্ত্বি পেতেই পারেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড সমর্থক।
প্রতিবেদক:ইমতিয়াজ আহমেদ