বিশ্বখ্যাত শিল্পী লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির অনন্য কীর্তি মোনালিসা পেইন্টিংয়ের অন্তরালে আরেকটি গোপন প্রতিকৃতির অস্তিত্ব আবিষ্কার করেছেন ফরাসি বিজ্ঞানীরা। উন্নতমানের প্রতিফলনশীল আলো প্রযুক্তি ব্যাবহার করে লুকানো এই দ্বিতীয় ছবির অস্তিত্ব বেরিয়ে এসেছে।
ফরাসি বিজ্ঞানী প্যাসকাল কোট বলেছেন, তিনি বিগত ১০ বছর ধরে লাইট রিফ্লেকটিভ টেকনোলজি ব্যবহার করে মোনালিসা পেইন্টিংয়ের উপর গবেষণা করে আসছেন।
প্যাসকাল কোট
তিনি দাবি করেছেন এই গোপন প্রতিকৃতি মোনালিসার ছবির উপরের আবরণের ঠিক নিচে অবস্থিত এবং সম্ভবত এটা ছিল লিওনার্দোর আঁকা প্রথম প্রতিকৃতি। পেইন্টিংটির পুনর্বিন্যাসে দেখা যাচ্ছে মডেল মোনালিসার পাশাপাশি অন্য একটি ছবির অস্তিত্ব। তবে প্যারিসের ল্যুভর জাদুঘর এ ব্যাপারে কোনোরকম মন্তব্য করতে চান নি।
লুভর জাদুঘর মোনালিসা পেইন্টিংকে দর্শকদের জন্য সামনাসামনি প্রদর্শন করে এবং বিগত পাঁচশ বছর ধরে সারা পৃথিবীর মানুষ এই ছবির মডেল লেডি মোনালিসার ভুবন ভুলানো হাসিতে মুগ্ধ হয়ে আসছেন কিন্তু কোটের এই নতুন পুনর্বিন্যস্ত ছবিতে সেই হাসির কোনো উপস্থিতি নেই।
তবে প্যাসকাল কোটের এই দাবি কিছুটা বিতর্কিত হয়েছে এবং লিওনার্দো বিশেষজ্ঞদের ভেতরেও একটা মতভেদ সৃষ্টি করেছে।
মোনালিসার উপর লাইট রিফ্লেকটিভ টেকনোলজি ব্যবহার
বিজ্ঞানী কোট প্যারিসের লুমিয়ের টেকনোলজি কোম্পানির সহ প্রতিষ্ঠাটা এবং ২০১৪ সালে ল্যুভর জাদুঘর তাকে মোনালিসা পেইন্টিং পরীক্ষা করার অনুমতি দেন। তিনি লেয়ার অ্যামপ্লিফিকেশান মেথড (এলএএম) নামের একটি পদ্ধতির প্রবর্তক যেটা তিনি এই ছবি বিশ্লেষণে ব্যবহার করেছেন।
উল্লেখ্য মোনালিসা পেইন্টিংকে ঘিরে বিগত পঞ্চাশ বছর ধরে বিজ্ঞানীরা নানান ধরনের গবেষণা করে আসছেন। সাম্প্রতিক সময়ের পরীক্ষা নিরীক্ষার মধ্যে ইনফ্রারেড ও মাল্টি- স্পেকট্রাল স্কানিং পদ্ধতিও ব্যবহার করা হয়েছে। তবে কোট দাবি করেছেন তার ব্যবহৃত পদ্ধতি সবচেয়ে বেশি কার্যকর এবং আরো নিবিড় নিরীক্ষণ করতে সক্ষম। তিনি বলেন, এই আবিষ্কার মোনালিসা সম্বন্ধে মানুষের পুরাতন ধ্যানধারণা বদলে দেবে।
ধারণা করা হয় শিল্পী লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি ১৫০৩ থেকে ১৫১৭ সালের মধ্যে ফ্লোরেন্সে কাজ করার সময় মোনালিসার প্রতিকৃতি তৈরি করেছিলেন। ছবির মডেল মোনালিসার পরিচয় নিয়েও অনেক বিতর্ক রয়েছে। তবে ধারণা করা হয় মোনালিসার আসল নাম লিসা ঘেরারডিন এবং তিনি ছিলেন ফ্লোরেন্সের এক সিল্ক ব্যবসায়ীর স্ত্রী।
নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৯:২৫ পিএম, ০৮ ডিসেম্বর ২০১৫, মঙ্গলবার
এমআরআর