চাঁদপুর

মৈশাদীতে প্রকাশ্যে চলছে নিষিদ্ধ যান্ত্রিক দানব

গত দু’ বছরে চাঁদপুরে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের বেশ কিছু সাফল্যজনক উদ্যেগের অন্যতম হচ্ছে পুরো জেলায় যান্ত্রিক দানব ট্রাক্টর চলাচল নিষিদ্ধ করা।

এতে একদিকে যেমন গত দু’বছরে দানব ট্রাক্টরের থাবায় সাধারণ পথচারী নিহতের সংখ্যা কমে এসেছে অপরদিকে তেমনিভাবে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যায় নির্মিত শহর ও গ্রামের সড়কগুলো বিনষ্টের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে।

প্রাণহানির ঘটনা রোধ এবং সড়কগুলো বাঁচাতে চাঁদপুরের প্রশাসন জেলার সকল রাস্তা বা সড়কে ট্রাক্টর চলাচলের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিলেও সদর উপজেলা ৬নং ইউনিয়নে এ নির্দেশ সম্পূর্ণরুপে উপেক্ষিত হচ্ছে।
প্রশাসনের নির্দেশকে সম্মান জানিয়ে জেলার সর্বত্র যখন ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ রয়েছে তখন ওই ইউনিয়নে প্রতিদিন প্রায় অর্ধশত ট্রাক্টর ওপেন চলাচল করছে।

অথচ এ বিষয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও প্রশাসন নিরব ভূমিকায় থাকতে দেখা যাচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ট্রাক্টর হচ্ছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এক প্রকার ইঞ্জিল চালিত যান, যা মূলত কৃষিকাজে ব্যবহৃত করার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। অথচ চাঁদপুর সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় এই যন্ত্রটির পেছনে বিশালাকৃতির একটি বডি লাগিয়ে তা দিয়ে ইটভাটার ইট সহ ভারী মালামাল বহন করা হচ্ছে।

যার ফলে বেপোরোয়া গতির এই যান্ত্রিক দানবটির চালকরা এর নিয়ন্ত্রন রাখতে না পেরে প্রায়ই মানুষ হতাহতের ঘটনা ঘটাচ্ছে। এছাড়াও ট্রাক্টরের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন এই যানটির চাকায় রাস্তাগুলো নষ্ট হতে থাকে।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার এখানে যোগদান করেই বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরে ট্রাক্টর মালিক ও চালকদের সাথে মতবিনিয় করে সাহসিকতার সাথে জেলার সর্বত্র এই যন্ত্র দানবটি নিষিদ্ধ ঘোষনা করেন।

এই বিষয়ে বিভিন্ন সভা সেমিনারে সরকারের মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্যদের উপস্থিতিতে পুলিশ সুপার ট্রাক্টরের চলাচলের বিষয়ে জিরো ট্রলারেন্স ঘোষণা করেন।

এছাড়াও মোবাইলকোর্টের মাধ্যমে সড়কে চলাচলরত ট্রাক্টর গুলোতে জব্দ করা হয় এবং এর চালকদের সাস্তির আওতায় আনা হয়। এতে করে প্রশাসনের এই নির্দেশকে সম্মান জানিয়ে জেলার প্রায় সকল উপজেলা ও ইউনিয়নগুলোতে ট্রাক্টর চলাচল প্রায় ৯০ভাগ কমে আসে।

এতে চাঁদপুরের সচেতন মহল প্রশসনকে সাধুবাদ জানালেও চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নে এই নির্দেশকে শতভাগ উপেক্ষা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) চাঁদপুর সদরের মৈশাদীতে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়নের কাঁচা-পাকা অথবা আঁধাপাকা রাস্তাগুলোতে নিষিদ্ধ এই ট্রাক্টরগুলো দিনরাত দেদারছে চলছে।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকতা উদয়ন দেওয়ান চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন জেলার সকল রাস্তা ও সড়কে ট্রাক্টর চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কারণ বেপোরোয় গতির ট্রাক্টর চলাচলে একদিকে যেমনি প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে অন্যদিকে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তা ও সড়কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নে নিষিদ্ধ এই ট্রাক্টর ওপেন চলাচল করলেও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না কেনো জানতে চাইলে নির্বাহী কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘এ ব্যপারে আমরা অবগত নই। তবে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়াম্যানরা যদি আমাদের অভিযোগ দেয় তাহলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে এর বিরুদ্ধে আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবা।’

এদিকে এ বিষয়ে ১৮ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মানিরুজ্জামান মানিকের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তার কক্ষে তালা ঝুলানো দেখা যায়।

পরে মুঠোফোনে একাধিকবার তার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১: ১৩ পিএম পিএম, ১৯ এপ্রিল ২০১৭, বুধবার
ডিএইচ

Share