চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ফরাজীকান্দি নেদায়ে ইসলাম মহিলা মাদরাসায় শিক্ষার মানোন্নয়নে ‘মা সমাবেশ’ সোমবার (৩০ জুলাই) বিকেলে মাদরাসা প্রাঙ্গনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী আবদুল ওয়াহিদ মো. সালেহ এর সভাপতিত্বে ও সহকারী অধ্যাপক মাওলানা আরিফ চৌধুরীর পরিচালনায় মা সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মনজুর আহমদ। প্রধান আলোচক ছিলেন- উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ফরাজীকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন দানেশ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আশরাফুল আলম। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- সাংবাদিক শামসুজ্জামান ডলার, মাদরাসা পরিচালনা পর্ষদের সদস্য গাজী ইলিয়াছুর রহমান, রমিজ উদ্দিন শিশির, সহকারি অধ্যাপক মাওলানা আহম্মদ উল্লাহ, সিনিয়র শিক্ষিকা উম্মে কুলসুম প্রমুখ।
এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, নেদায়ে ইসলাম মহিলা মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা শহীদ উল্লাহ।
মা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মতলব উত্তর উপজেলা চেয়ারম্যান মনজুর আহমদ বলেন, মেয়েদের সঠিক শিক্ষাদান এবং সঠিকভাবে গড়ে তোলার জন্য মায়েদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাছাড়া শিক্ষিত জাতি গড়তে মায়েদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই মেয়েদের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে তাদের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। বাবারা কাজে কর্মে বেরিয়ে পড়েন। সব সময় ঘরে থাকেন না। কাজেই মায়েরা একটু সচেতন হলে সন্তানদের পাশে বসে থেকে সময় দিলে এবং নিজের সন্তান কোথায় যায় তার খোঁজখবর নিলে তাদের ভবিষ্যৎরা অবস্যই মেধাবী ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি করতে পারে না। আর শিক্ষাই হচ্ছে একটির জাতির উন্নতির চাবিকাঠি। এর ভিত্তি যত মজবুত হবে সে দেশ ততো বেশি তাড়াতাড়ি উন্নতি লাভ করবে।
মনজুর আহমদ আরো বলেন, সন্তানদের বিদেশি টিভি প্রোগ্রাম দেখাবেন না। আপনারাও দেখবেন না। বিদেশি চ্যানেল দেখলে তারা লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। বাংলাদেশি চ্যানেলে কৃষি, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক, শিক্ষামূলকসহ আরো ভাল ভাল প্রোগ্রাম হয় সেগুলো দেখাবেন। তিনি মায়েদের উদ্দেশ্যে বলেন, ছেলে মেয়েদের হাতে মোবাইল দিবেন না।
তিনি আরো বলেন, মোবাইলের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। তাই ছাত্র-ছাত্রীদের মোবাইল ব্যবহার থেকে বিরত রাখবেন। বর্তমানে লেখা পড়া করতে কোনো টাকা লাগে না। সরকারিভাবে বই দেওয়া হচ্ছে এবং মেধাবী ও গরীব ছাত্র/ছাত্রীদের বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ করে দিয়েছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার। বর্তমান সরকতার শিক্ষাক্ষেতে মেয়েদেরকে পড়াশুনা করে মেয়েরা যাতে দেশের কর্নধার হতে পারে সেজন্য শিক্ষা ক্ষেত্রে মেয়েদের জন্য উপবৃত্তি প্রদান, বিনা বেতনে পড়াশুনার ব্যবস্থা করেছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের ক্ষমতায়নে এবং নারীদের উন্নয়নে অনেক দৃষ্টান্তমূলক কাজ সকরেছে। তিনি যদি কোন ছেলে-মেয়ে তার যোগ্যতা নিয়ে যদি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে চায়, কিন্তু অর্থের জন্য পারছে না, তাদের জন্য সরকার বিভিন্ন ভাবে সহায়তা করছে। বাল্যবিবাহ একটি অভিশাপ, কোন মেয়েকেই ১৮ বছরের আগে বিয়ে দেয়া যাবে না। দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় উপস্থিত ছাত্রীদের ‘বাল্য বিবাহ করবো না’ শপথ বাক্য পাঠ করান ইউএনও। মায়েদের কেউ বাল্য বিয়ে না দেয়ার আহ্বান জানান।
প্রতিবেদক- খান মোহাম্মদ কামাল
