সোমবার ০৮ জুন ২০১৫ : ০৩:৩০ অপরাহ্ন
শাহজাহান শাওন :
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘ প্রতিক্ষিত সাক্ষাৎ হলেও ঘোর অন্ধকার দেখা দিয়েছে দলের ভেতরে। খালেদা-মোদির বৈঠক দেশের রাজনীতিতে কি বার্তা দিচ্ছে তা নিয়েও দলের ভেতরে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এদিকে, বৈঠকের আগে মোদির সাক্ষাৎ পেলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে মধ্যবর্তী নির্বাচন ও সরকারের দমনপীড়নের বিষয়টি জোর আলোচনায় উঠে এলেও বৈঠক পরবর্তী বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিরবতায় দলটির হতাশা আরো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
খালেদা মোদি বৈঠকে বিএনপির প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি কি ? এ প্রশ্ন করা হলে বৈঠকে অংশ নেয়া বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান নিজের অসুস্থতার কথা বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান। এছাড়া গত ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের অভিযোগ এনে বিএনপির মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবির ব্যাপারে মোদির কাছ থেকে কোনো সাড়া পেয়েছেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো সদুত্তর দেন নি।
অপরদিকে, বৈঠকে উপস্থিত থাকা দলের অপর স্থায়ী সদস্য ড. আব্দুল মঈন খানকে একাধিকবার মোবাইলে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তবে বৈঠক শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ড. আব্দুল মঈন খান সাংবাদিকদের বলেন, দেশে গণতন্ত্রের অনুপুস্থিতির বিষয়ে মোদির সঙ্গে আলাপ হয়েছে। তবে মোদি এ আলাপের কেমন সাড়া দিয়েছে এ প্রশ্নে তিনি মোদির কাছে উত্তর জানার পরামর্শ দেন।
তবে আলাপ পরবর্তীতে মোদির টুইট ও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক ঘণ্টারও বেশি বক্তব্যে দেশের গণতন্ত্রের কোনো সংকটের কথা উঠে আসেনি মোদির কণ্ঠে।
ফলে বিএনপি শিবিরে হতাশা যেন আরো ঘনিভূত হয়ে উঠছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা মহানগর বিএনপির কয়েকজন নেতা জানান, বৈঠকে ইতিবাচক কোনো ইঙ্গিত পাওয়া গেলে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা উৎসাহী হয়ে অনেক কথা বলতেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, মোদির সাক্ষাৎ লাভের মাধ্যমে বিএনপির মান সন্মান অক্ষুন্ন রয়েছে এটাই বড় কথা। তবে বর্তমান সরকারকে মোদি অন্যরকম গুরুত্ব দেওয়ায় বিএনপির কোনো অভিযোগই আপাতত মোদির কানে পৌঁছাবে না বলেও মনে করেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশের প্রধানের কাছে বিএনপি যেরকম প্রত্যাশা করেছে প্রাপ্তিটা সেরকম না হওয়ায় দলটিতে নতুন করে দুশ্চিন্তা দানা বেঁধেছে।
এরকম পরিস্থিতিতে মধ্যবর্তী নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপি সরকারকে কতটা চাপে রাখতে পারে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
খালেদা-মোদি বৈঠকের মধ্য দিয়ে বিএনপির অর্জন প্রশ্নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, মোদির সঙ্গে বিএনপি প্রধানের সাক্ষাতের ফলে কিছুটা হলেও দলের মান রক্ষা হয়েছে। কারণ বিএনপি গত কয়েকদিনে যে ধরনের ভারত প্রীতির নমুনা দেখিয়েছে তাতে করে এ সাক্ষাৎ না হলে বিষয়টি বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করতো। তবে এ সাক্ষাতে খালেদা জিয়ার অর্জন গুরুত্বহীন বা গুরুত্বপূর্ণ কোনোটাই মনে হয় না।
চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।