আবদুল গনি :
সম্পাদনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ও সংবাদকর্মীদের মেধা, মনন ও শৈল্পিক দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয়ে প্রকাশিত হয় সংবাদপত্র। সংবাদপত্রকে বলা হয় রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ ও জ্ঞানের ভান্ডার। আবার বলা হয় সভ্যতার অগ্রদূত।
একটি সংবাদপত্রে দেশ ও জাতির সকল বিষয়ের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। আমাদের দেশে সংবাদপত্র প্রকাশের অবাধ স্বাধীনতা রয়েছে। যার ফলে দেশের নাগরিকদের মতামত প্রকাশে সুযোগ রয়েছে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার মৌলিক আদর্শগুলো চিহ্নিত করে ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল থেকে ৩ মে পর্যন্ত আফ্রিকার নামিবিয়ায় উইন্ডোহয়েক শহরে ইউনেস্কো ও ইউএনডিপিআই এর যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে ডিক্লারেশন অব উইন্ডোহয়েক ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৩ সালের ২০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ৩ মে কে বিশ^ প্রেস স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।
সংবাদপত্রই প্রথম সৃষ্টি করেছে সভ্যতা উন্নয়নের উত্তাল ঢেউ। বাংলাদেশ একটি বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির দেশ হিসেবে এগিয়ে চলছে। ধীরে ধীরে এর ধাপ আরো বৃদ্ধি পাবে। শিল্প, শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি সবক্ষেত্রেই প্রযুক্তির নীতি গ্রহণ করা হয়। সংবাদপত্র শিল্পেও এটি চলে আসছে।
ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অধীন ১৯৬২ সালে কলা অনুষদে ডিপ্লোমা ইন জার্নালিজোন কোর্স চালু হয়। স্বাধীনতার পর ডিপ্লোমার কোর্সটি বন্ধ করে অনার্স কোর্স চালু করা হয়। ’৮০ দশকে সব পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ে এবং ’৯০ দশকে প্রাইভেট বিশ^বিদ্যালয়ে গণসংযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে অনার্স ও মাস্টার ডিগ্রি কোর্স চালু করা হয়। যার হাওয়ায় আমাদের দেশে সংবাদপত্রের বিকাশ লাভ করে আসছে।
বর্তমান সরকারের শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ২০১৪ সালে সংবাদপত্রকে শিল্প বলে ঘোষণা দিয়েছেন- যা সংবাদপত্রের জগতে একটি মাইলফলক।
২০০০ সালের আগে দেশের সংবাদপত্রগুলো মুদ্রণশিল্পের মাধ্যেমে প্রকাশিত। শিসা বা তামা কিংবা লোহার ধাতব পদার্থের মাধ্যমে বাংলা ভাষা প্রতিটি বর্ণ বসিয়ে বসিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় ব্যয় করে সংবাদপত্র ছাপানো হতো। যা ছিল কায়িক শ্রমের বহিঃপ্রকাশ। বর্তমানে তার পরিবর্তে স্বল্প সময়ে, কম্পিউটার কম্পোজে, দ্রুততম সময়ে অটোমেটিক বৈদ্যুৎতিক ছাপাখানার মাধ্যেমে বর্তমানে সংবাদপত্র প্রকাশিত হচ্ছে।
অবাধ তথ্য প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে সংবাদপত্র অতি আধুনিক পদ্ধতিতে বের হচ্ছে। যার ফলে যে কোন সংবাদ, বিষয়, ছবি ও সংশ্লিষ্ট পেক্ষাপট গুলো খুবই চমৎকার ও শিল্প নৈপুণ্যের মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে।
প্রতিদিনের পত্রিকার দিকে তাকালে আগেরদিনের পত্রিকার সাথে পরদিনের পত্রিকার অবয়ব সম্পূর্ণ আলাদা মনন ও শৈল্পিক কল্পনাশক্তির পার্থক্য বুঝা যায়।
এক সময়ে চাঁদপুরে যারা সংবাদিকতা করতে টরে-টক্কা টেলিগ্রমের মাধ্যমে সংবাদ পাঠাতেন।
১৯৮০-১৯৯০ সালের দিকে আবদুর রাজ্জাক মাঝির সম্পাদনায় আজকের দৈনিক সংবাদ, গোলাম কিবরিয়া জীবনের সম্পাদনায় সাপ্তাহিক চাঁদপুর, কাজী শাহাদাতের সম্পাদনায় জিলানী প্রেস থেকে চাঁদপুর কণ্ঠ, শহীদ পাটওয়ারীর সম্পাদনায় রূপসী চাঁদপুর প্রকাশিত হতো।
প্রেস শ্রমিক মরহুম আবদুল জলিল শেখ, পারভেজ ডাক্তার নজির আহম্মেদ, মরহুম সিরাজ পাটওয়ারী, শফিকুর রহমানসহ আরো বেশ ক’জন পত্রিকা প্রকাশনার কাজে নিয়োজিত ছিলেন এবং পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশের কাজ করতেন। তখন এসব পত্রিকা নানা প্রতিকূলতার মধ্যে প্রকাশিত হতো।
আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি অবাধ ব্যবহারের ফলে কম্পিউটার ও অটোমেটিক প্রেসের মাধ্যমে চাঁদপুরের এসব পত্রিকা এখন বের হচ্ছে। আমি শাহাতলী জিলানী চিশতি কলেজ অধ্যয়নকালে ১৯৮০ সালে চাঁদপুরের বর্তমানে বিশিষ্ট সাংবাদিক এমএম হেলাল উদ্দিন-এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করতে তার শাহাতলী বাজারের বাসায় গিয়েছিলাম।
এক পর্যায়ে তিনি বলেছিলেন, দৈনিক পত্রিকাগুলো নিয়োমিত পড়লে দেখবেন কোন কোন বিষয়গুলো আমাদের চাঁদপুরের জন্য প্রয়োজন- সেগুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা করলে আপনার লেখার মুড খুঁজে পাবেন।
তখন থেকেই আমি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার চিঠিপত্র কলামে লেখালেখি শুরু করি। তখন জাতীয় পত্রিকাগুলোর মধ্যে ছিল দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলা, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক খবর, আজকের কাগজ, দৈনিক বাংলার বাণী, রোববার, বেগম, চিত্রালী ইত্যাদি।
ওইসব পত্রিকা পড়ে জ্ঞানের পরিধি অনেকটাই বেড়ে যায়। প্রতিদিন পুরানো টাউন হলের সিঁড়ির পাশে বসা শামসুল হক মোল্লার পত্রিকা পড়তাম সেখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। সর্বপ্রথম আমি গোলাম কিবরিয়া জীবন ভাইয়ের সাপ্তাহিক চাঁদপুর পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করি হাইমচরের নদীভাঙ্গনগ্রস্ত মানুষের দুর্দশা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি নিয়ে। তখন পত্রিকাটির বার্তা বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন চাঁদপুর কণ্ঠের আজকের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত। তিনি আমাকে লেখালেখির উৎসাহ যুগিয়েছেন। কিছুদিন পর কাজী শাহাদাত ভাই ‘সাপ্তাহিক চাঁদপুর’ ছেড়ে তৎকালীন ‘সাপ্তাহিক চাঁদপুর কণ্ঠের’ দায়িত্ব গ্রহণ করেন- যা মুদ্রণ যন্ত্রের মাধ্যমে প্রকাশিত হতো। তাকে সহযোগিতা করতেন মরহুম সিরাজ পাটওয়ারীর ছেলে শফিকুর রহমান। যিনি বর্তমানে মালোশিয়ায় কর্মরত। ১৯৯৭ সালে আমি দর্পণ নামে একটি স্কুল ম্যাগাজিন জিলানী প্রেস থেকে বের করি। কাজী শাহাদাত ভাই আমাকে এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করেন। আমরা কণ্ঠের সমসাময়িক ছিলাম গিয়াস উদ্দিন মিলন, রাশেদ শাহরিয়ার পলাশ ও শাহ মোঃ সেলিম।
আজকের একটি পত্রিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে কায়িক শ্রমের প্রয়োজন না হলেও প্রয়োজন হচ্ছে মেধা, মনন ও শৈল্পিক চিন্তাভাবনা। কত রং বেরঙ্গের অবয়ব নিয়ে আজকের পত্রিকাগুলো প্রকাশিত হচ্ছে তুমূল প্রতিযোগিতা নিয়ে। আমি দেখেছি- বর্তমান একটি আধুনিক পত্রিকায় ১’শ টির মত বিষয় রয়েছে যা পাঠক পড়তে পারে। সব বয়সের সকল পাঠকের মনের খোরাক মেটাতে পারে আজকের সংবাদপত্র। কিছু দুর্লভ বিষয়ে রয়েছে যা আমরা দেখতে পারছি সংবাদপত্রে। যা একটি আধুনিক সংবাদপত্রের অবদানই বটে।
আমরা সংবাদপত্রগুলোতে চোখ রেখেই দেখতে পারি- সম্পাদকীয়, উপ-সম্পাদকীয়, পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষণ ধর্মী ফিচার বা আর্টিকেল, রাষ্ট্রীয় খবরা-খবর, দেশ-বিদেশের তাজা খবর, সংসদ খবর, বাজেট, খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই, আত্মহত্যা, নির্যাতন চিত্র, নদী ভাঙ্গন, দাঙ্গা হাঙ্গামা, মারধর এর চিত্র, ধর্মীয় প্রবন্ধ, দ্রব্যমূল্য, মুদ্রামান, বিভিন্ন দিবসের বাণী, বিশেষ প্রবন্ধ, দূর্যোগ সংবাদ, ব্যাংক বীমা, আইন আদালত, বিজ্ঞান, সরকারি-বেসরকারি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে তথ্য, টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি, চাকুরির খবর, ছোট ছোট বিজ্ঞাপন, শুভেচ্ছা, বিয়ে বার্ষিকী, জন্ম- বার্ষিকী, চেহেলাম, ওয়াজ , মাহফিল, সংগঠন সংবাদ, নির্বাচন সংবাদ, শিক্ষা, নিয়োগ বিজ্ঞাপ্তি, হারানো বিজ্ঞপ্তি, পরীক্ষা, কোচিং, ইতিহাস-ঐতিহ্য, মৎস্য, স্বাস্থ্য, নামাজের সূচি, ইফতারের সূচি, আবহাওয়া, জলবায়ু, কম্পিউটার মোবাইল, তথ্য-প্রযুক্তি, অনলাইন ব্যাংকিং, অনলাইন মোবাইল কার্যক্রম, কৌতুক, কবিতা, উক্তি, ধাঁধা, শিশু সংবাদ, মুক্তিযোদ্ধাদের সংবাদ, স্মরণীয় বাণী, খেলাধূলা, চলচিত্র, টেলিভিশন, রেডিও সময়সূিচ, কার্টুন, ব্যঙ্গচিত্র, অংকন, দুর্ঘটনা, নারী সংগঠনের সংবাদ, জীবনালেখ্য, কবি-সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের জীবনী, কল-কারখানার সংবাদ, গুম, হত্যা, জন্ম- মৃত্যু, শেয়ার বাজার, সংখ্যাতত্ত্ব, রাশিফল, নতুন নতুন আবিষ্কার প্রভৃতি বিষয়ে আমরা একটি পত্রিকা পাঠের মধ্যেমে জানতে পারছি। পৃথিবীর আর কোনো বইয়ে (কোরআন ব্যতীত) এতোগুলো বিষয় আছে বলে আমার জানা নেই। যার পেছনে রয়েছে সৃষ্টিশীল প্রতিভাবান সাংবাদিক ও সংবাদকর্মীরা।
পত্রিকা বিলিকারক, সংবাদকর্মী, কর্মচারী, সাংবাদিক, সম্পাদক ও প্রকাশনার দায়িত্ব নিয়োজিত ব্যক্তিবর্গের অত্যন্ত পরিশ্রমে প্রতিদিনই পাঠকের জন্য প্রকাশ হয় সংবাদপত্র। সে তুলনায় পত্রিকার মূল্য খুবই নগণ্য।
আমার জানা মতে, আমেরিকার একটি দৈনিক পত্রিকার মূল্য এক ডলার। যা বাংলাদেশী টাকায় ৮০ টাকার সমান। অথচ আমাদের দেশে একটি দৈনিক পত্রিকার সর্বেচ্চ মূল্য ১০ টাকা। চাঁদপুরের আঞ্চলিক পত্রিকার মূল্য ৩ টাকার বেশি নয়। তাই চাঁদপুরবাসী ৩ টাকা মূল্যের একটি পত্রিকা কিনে পত্রিকাগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে খুব সহজেই। আজ চাঁদপুর থেকে বর্তমানে ৯টি দৈনিক পত্রিকা এবং ১৫টি সাপ্তাহিক পত্রিকা বের হচ্ছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে চাঁদপুর কণ্ঠ, দর্পণ, সংবাদ, প্রবাহ, ইলশেপাড়, মেঘনাবার্তা, চাঁদপুর বার্তা, আলোকিত চাঁদপুর ও চাঁদপুর সময় প্রভৃতি। সাপ্তাহিক পত্রিকার মধ্যে রয়েছে- দিবাচিত্র, অঙ্গীকার, সকালের খবর, সকাল, লালসবুজের মেলা, দিবাকণ্ঠ, ফরিদগঞ্জ বার্তা, কচুয়া বার্তা, সাপ্তাহিক হাজীগঞ্জ, মানব সমাজ, নতুনের ডাক, আমার কণ্ঠ, মতলবের জনপথ প্রভৃতি।
এছাড়া আমার জানামতে, অনলাইনে নতুনভাবে চাঁদপুরের পত্রিকার সারিতে এসেছে ‘চাঁদপুর টাইমস’, চাঁদপুর নিউজ, ফরিদগঞ্জ টাইমস প্রভৃতি। অনেক অকল্পনীয় বিষয় পত্রিকার পাতায় দেখতে পাই।
এসব পত্রিকাগুলোর প্রধান সঞ্চালকগণ কতটা ধৈর্য, সহিষ্ণু মনোভাবের পরিচয় দিয়ে পত্রিকা প্রকাশ করছে। আর্থিক বিষয়টা তো আছেই যা বলার অপেক্ষা রাখে না। চাঁদপুরের এসব সংবাদপত্র ঘিরেই অনেক আগে থেকেই চাঁদপুর প্রেসক্লাবের অবয়ব ও উন্নয়ন ঘটেছে।
চাঁদপুর জেলার প্রতিটি উপজেলায় একটি করে প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। এদের সদস্য সংখ্যা ২ শতাধিক। আজ এরা সবাই কোনো না কোনো চাঁদপুরের দৈনিক, সাপ্তাহিক ও অনলাইন পত্রিকাগুলোতে বেশ দক্ষতার সাথে কাজ করছে। প্রত্যেক প্রতিনিধির ভেতরে রয়েছে অদম্য ইচ্ছা, মনন ও সৃজনশীল প্রতিভা। তবে সাংবাদিক বন্ধুরা বাংলা ভাষার ব্যাকরণ বইয়ের ণত্ব-স্বত্ব বিধান ও সাধু ও চলিত ভাষার বিষয়টি ভালোভাবে রপ্ত করলে আরো সফল হবেন বলে আমার মনে হয়।
প্রকৃতপক্ষে চাঁদপুরের স্থানীয় পত্রিকাগুলোকে বলা যায়- সাংবাদিক তৈরির কারখানা। প্রত্যেকের স্ব-স্ব মেধার মাধ্যমে সংবাদপত্রগুলোর পত্রিকার পাতা পরিপূর্ণ হয়ে উঠে। যা পাঠকের মন যুগিয়ে থাকে। সুতরাং আমরা চাই সংবাদপত্র শিল্প নিজস্ব স্বকীয়তায় চলতে থাকুক। এতে মুক্তবুদ্ধির চর্চার ক্ষেত্ররূপে সংবাদপত্র সকল পাঠকের আস্থা, বিশ^াস ও ভরসার স্থলে পরিণত হবে। কেননা সংবাদপত্র শিল্পের টিকে থাকা ও বিকাশের মূল হল পাঠক।
আপডেট: বাংলাদেশ সময় ০৫:২৭ অপরাহ্ণ, ২০ জুন ২০১৫, শনিবার
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/ এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম-এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।