শীর্ষ সংবাদ

মেজর সিনহা রাশেদ যশোর নাকি চাঁদপুরের কৃতি সন্তান

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ একজন অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা। সম্প্রতি তার জন্মস্থান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন বেশ কিছু তথ্য উঠে আসে। চাঁদপুর টইমসের প্রতিবেদনে প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে তাঁকে ফরিদগঞ্জের সন্তান উল্লেখ করলে কয়েকজন এ তথ্যকে চ্যালেঞ্জ করে যশোর বলে দাবি করেন ।

তাই এ নিয়ে চাঁদপুর টাইমস অনুসন্ধান করে এবং জানতে পারে হত্যাকাণ্ডের শিকার সেনাবাহিনীর সাবেক এ কর্মকর্তা ফরিদগঞ্জ উপজেলার বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের মানিকরাজ গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ খানের ছেলে। এরশাদ খান বাংলাদেশ সরকারের সাবেক উপ- সচিব। তাঁর ২ মেয়ে ও ১ ছেলের মধ্যে মেজর সিনহা ছিলেন দ্বিতীয়। পিতার চাকরির সুবাধে ১৯৮৪ সালের ২৬ জুলাই রাঙ্গামাটি জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন মেজর সিনহা।

মেজর সিনহার পিতা এরশাদ খান চাকরির সুবাধে জীবনের বেশি সময় পরিবার পরিপরিজন গ্রামের বাইরে কাটিয়েছেন। এরশাদ খান ১৯৯৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন। পিতার মৃত্যুর পর মেজর সিনহা প্রায়ই নাড়ির টানে গ্রামে (দাদার) বাড়িতে ছুটে আসতেন। মেজর সিনহা ২০০২ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। তিনি ছিলেন মিশুক ও ভ্রমন পিয়াসু, তাই বিশ্ব ভ্রমণের উদ্দেশ্যে মাত্র ১৬ বছর চাকরি করে অব্যাহতি নেন।

হত্যাকারিদের বিচার দাবি করে মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস ছামাদ জানায়, মেজর সিনহা সব সময় বাড়িতে আসতেন এবং ছোট বড় সকলের সাথে হাসিখুশি ভাবে চলাফেরা করতেন। আরো পড়ুন-সিনহা হত্যার দায়ে ওসি প্রদীপসহ ৭ পুলিশ সদস্য বরখাস্ত

মেজর সিনহা রাশেদের মরহুম পিতা এরশাদ খানের বসতঘর। ছবি- চাঁদপুর টাইমস

এ বিষয়ে মেজর সিনহা রাশেদ সম্পর্কে কথা তার বোন  শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস পপির সাথে। তিনি চাঁদপুর টাইমসকে জানান , বাবার মৃত্যুর পর মেজর সিনহা আমার ছোট ভাই এটা কখনো মনে হতো না, সব সময় আমাদেরকে অভিভাবকের ন্যায় আগলিয়ে রাখতো। আবার কখনো আমরা বন্ধুর মত চলাফেরা করতাম, সব মিলিয়ে আমরা ২ বোন, ১ ভাই মাকে সুখেই ছিলাম। সে ছিলো ন্যায় পরায়ণ ও ভ্রমণ পিয়াসু। সকলের সাথে মিলেমিশে চলাফেরা করতেন। বিশ্ব ভ্রমণ তার স্বপ্ন ছিলো, সে কারণেই অল্প সময়ে চাকরি থেকে অব্যাহতি নেয়। স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের তিন শিক্ষার্থীসহ জাস্ট গো নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভ্রমণ ভিডিও তৈরি করতে কক্সবাজার যান মেজর সিনহা। কি কারণে পুলিশ আমার ভাইকে হত্যা করেছে আমরা জানি না, আমার ভাইয়ের হত্যার সবোর্চ্চ বিচার দাবি করছি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেজর সিনহার বাড়ি চাঁদপুরে নয় যশোরে এমন এক প্রশ্নের জবাবে তার বোন পপি চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘আমার ভাই চাকুরির সুবাধে যশোর সেনানিবাসে থাকাবস্থায় সেখানের ঠিকানায় জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেন, আমাদের বাড়ি যশোরে নয়, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলায়।’

এদিকে ৭ আগস্ট শুক্রবার বাদ জুমা মেজর সিনহার মাগফেরাত কামনায় তার গ্রামের বাড়ির মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

প্রতিবেদক : শিমুল হাছান, ফরিদগঞ্জ। ৮ আগস্ট ২০২০

Share