Apr 28, 2015 @ 10 : 59 AM
মোঃ কামাল হোসেন খান :
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পে গত এক সপ্তাহ যাবত পুরোদমে বোরো ধান কাটা কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক। নতুন ধান আসায় কৃষক-কৃষাণীদের সংসারে আবারও ফিরে এসছে সচ্ছলতা।
তবে বৈশাখের শুরুতেই এ উপজেলায় আগাম জাতের বোরো ধান কাটা শুরু হওয়ায় কৃষকের মনে হাসির ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। আর এতে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে শত শত কৃষি শ্রমিকের। বৈশাখ ও জৈষ্ঠ্য মাসে এ এলাকার কৃষি শ্রমিকের তেমন কোন কাজ না থাকায় তারা তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে অভাব-অনাটনে দিন কাটাত। নতুন ধান আসায় তাদের সংসারেও আবার সচ্ছলতা ফিরে এসেছে।
তবে উপজেলার কোনো কোনে ইউনিয়নে কৃষি শ্রমিকের অভাব দেখা দিয়েছে। ফলে ধান কাটতে হিমসিম খেতে হচ্ছে কৃষকদের। সরেজমিনে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উঁচু জমিতে নানা জাতের আগাম ধান ইতোমধ্যে কৃষকরা কাটতে শুরু করেছে। তবে প্রকল্পের পুরোপুরি ধান কাটা-মাড়াই শুরু হতে আরও সপ্তাহ খানেক লাগবে বলে কৃষকরা জানান।
তবে মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্প ও চরাঞ্চলের মাঠে মাঠে বাতাসে দুলছে কৃৃষকের ক্ষেত ভরা বোরো ধানে পাকা সোনালী সমারোহ। আর মাত্র ১০/১৫ দিনর কোনো প্রাকৃতিকক দূর্যোগ না হলে এখানকার কৃষকের ঘরে উঠবে নতুন ধান। আর এতে কৃষককে হাতছানি দিবে পাকা ধানের সোনালি হাসি। পরিবারে ফিরে আসবে সুখ ও শান্তি। ছেংগারচর পৌরসভার ঘনিয়ার গ্রামের কৃষক মোঃ শাহজাহান মোল্লা (৬০) জানান, ৪ বিঘা জমিতে বিএডিসির ২৮ জাতের (চিকন) বোরো ধান লাগিয়েছেন।
বৃষ্টি না থাকলেও এবার সময়মতো সেচ প্রকল্প পানি ছাড়ায় এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। তিনি ইতোমধ্যে ধান কাটা শুরু করেছেন। আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হওয়ায় তার পরিবারের মাঝে হাসি ফিরে এসেছে। বিঘাপ্রতি কমপক্ষে ৩০ মণ ধান পাবেন এমন আশা তার।
উপজেলার তালতলী গ্রামের কৃষক কামরুজ্জামান হারুন বলেন, আমি দু’বিঘা জমিতে ২৮ জাতের (চিকন) বোরো ধান চাষ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। বর্তমান ওই ধান কাটা শুরু হয়েছে। বাকি জমির ধানগুলো আগামী সপ্তাহে কাটা যাবে বলে তিনি জানান। বিঘপ্রতি ২৮ মণ ধান পাবেন এমন আশা তার। তিনি আরও জানান, এবার বোরো ধানে পোকার আক্রমণ তেমন না থাকায় ফলন বাম্পার হয়েছে। তবে ধানের সঠিক মূল্য না পেলে তার শ্রম বিফলে যাবে। তিনি তার উৎপাদিত ধানের সঠিক মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, মতলব উত্তর উপজেলায় চলতি মৌসুমে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯ হাজার ১শ’ ৫০হেক্টর জমি। তবে চাষ হয়েছে ৯ হাজার ৩শ’হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হেেয়ছে। আবহওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বোরো ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আগামী সপ্তাহ দেড়েক পর এ উপজেলায় পুরোপুরি ধান কাটা মাড়াই শুরু হবে বলে কৃষি অফিস জানায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল কাইয়ুম মজুমদার জানান, এবার এ উপজেলায় ৯ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর ১শ’৫০ হেক্টও বেশী জমিতে চাষ হয়েছে।এবার সময়মতো সেচ প্রকল্প পানি ছাড়ায় আর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আগাম জাতের বোরো ধানে তেমন কোন আপদ-বালাই ছিল না। আগামী সপ্তাহ দু’য়েক যদি আবহাওয়া অনুকুলে থাকে তাহলে এবার বোরোর বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি জানান। তবে তিনি প্রাাকৃতিক দুর্যোগ বলতে বড় ধরনের ঝড় ও শিলাবৃষ্টিকে মনে করছেন । কৃষকরাও শঙ্কায় থাকবে আগামী দু’তিন সপ্তাহ।
তিনি আরো বলেন, উপজেলার বাজারগুলোতে আগাম জাতের ধান উঠতে শুরু করেছে। প্রতিমণ ধান সাড়ে সাড়ে ৬শ’ টাকা থেকে ৭শ’ দরে বিক্রি হচ্ছে।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur