চাঁদপুরের মতলব-মেঘনা-ধনাগোদা-বেড়িবাঁধ সড়ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন করা হয়েছে। যার বাস্তবায়ন খরচ ধরা হয়েছে ১২১ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।
মতলব সেতুর ওপারের বাইপাস সড়ক থেকে শুরু করে শ্রীরায়েরচর পর্যন্ত এ রাস্তাটি ৩৮ কিলোমিটার। এটি এখন ১২ ফুট প্রশ্বস্ত আছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে এটির প্রশ্বস্ত বাড়িয়ে করা হবে ১৮ ফুট।
১ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলানগর এনইসি সভাকক্ষে একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ প্রকল্পসহ মোট ৬টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন জানান, একনেকে অনুমোদন হওয়ার পর প্রকল্পটি সম্পর্কে কিছু ক্যুয়ারি হবে। তারপর এর জিও হবে। এটি হয়ে গেলে তা আমাদের কাছে আসবে। এরপর টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাবে। টেন্ডার হয়ে গেলে এটির কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামী ৬/৭ মাসের মধ্যে আমরা কাজ শুরু করতে পারবো বলে আশা করি।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, একনেক সভায় ৬ হাজার ৬২৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে মোট ৬টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ২ হাজার ৭১ কোটি ১০ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য হিসেবে বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া যাবে ৪ হাজার ৫৯৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
অনুমোদিত ৬ প্রকল্পের মধ্যে ২টি নতুন প্রকল্প এবং ৪টি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে।
আরো পড়ুন-
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক পৃথক এসএমভিটি লেনসহ ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ২০২৫ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন সম্পন্ন করবে। প্রাক্কলিত ব্যয়ের ২ হাজার ৯৭০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা প্রকল্প ঋণ হিসেবে এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি)-র কাছ থেকে পাওয়া যাবে।
প্রকল্পের আওতায় সিলেট হতে তামাবিল পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ ৪-লেনে উন্নীতকরণ এবং ঢাকা-সিলেট-তামাবিল করিডোরের মাধ্যমে উপ-আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপন করা হবে।
মান্নান বলেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে তামাবিল স্থলবন্দর, সিলেটের অর্থনৈতিক অঞ্চল ও রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে যাতায়াত সহজ হবে এবং পর্যটন বিকাশের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটবে।’
সারাদেশে আন্ত:জেলা সড়কের উন্নয়ন ও সকল মহাসড়ককে ৪ লেনে উন্নীকরণে সরকারের পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও জানান, সভায় প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে গাছ লাগানোর বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। একই সাথে তিনি হাওড় এলাকায় মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও মাছ রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মংৎস্য অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে মান্নান বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারী বা বন্যার মত দূর্যোগসহ নানা কারণে প্রকল্প সংশোধন করতে হয়। কিন্তু আমরা এ ব্যাপারে অত্যন্ত সজাগ এবং সংশ্লিষ্ট কর্তকর্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ প্রদান ও প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে প্রকল্প সংশোধনী আনার প্রবনতা হ্রাস করার চেষ্টা করছি।’
একনেক সভায় আরও অংশ নেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ও সচিবরা।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ১ সেপ্টেম্বর ২০২০