চাঁদপুরে মতলব উত্তরের মেঘনা নদীতে বালিভর্তি বাল্কহেড ডুবির ঘটনায় ১১ঘন্টা পর নিখোঁজ ২ শ্রমিকের মরদের উদ্ধার করা হয়েছে। ১০ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে ডুবুরি দল ইঞ্জিন রুমের ভিতর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতরা হলেন, বরগুনা জেলার তালতলী থানার পশ্চিমজারাখী গ্রামের জাহাঙ্গীর হাওলাদারের পুত্র মোঃ মিজানুর রহমান (২৫) ও একই এলাকার সালাম শিকদারের পুত্র মোঃ সাজু শিকদার (২৩)।
বিষয়টি চাঁদপুর কোস্টগার্ড স্টেশন এর মিডিয়া সেল থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত মরদেহ দুটি মোহনপুর নৌ-পুলিশের নিকট হস্তান্তর করেছে কোস্টগার্ড কর্তৃপক্ষ।
এর আগে ৯জুন বুধবার দিনগত রাত অনুমানিক ৪ টার সময় মোহনপুর দশআনি ঘাট সংলগ্ন এলাকায় এমভি দিদার বক্স নামে বালুবাহী বাল্কহেড ৪ জন ক্রুসহ ডুবে যায়। তাদের মধ্যে দু’জন সাঁতার দিয়ে পাড়ে উঠতে সক্ষম হলেও বাকি দু’জন পানিতে ডুবে যায়। প্রাণে বেঁচে যাওয়া দুই শ্রমিক হলেন মো. সুজন হাওলাদারের পুত্র মহিউদ্দিন (৩৫) ও জাহাঙ্গীর সিকদারের পুত্র মো. নাঈম সিকদার (৩০)।
উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের বরাত দিয়ে মতলব উত্তরের মোহনপুর নৌ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) মোঃ ওয়াহিদ্দুজ্জামান বলেন, নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে চাঁদপুর থেকে ছেড়ে আসা বালুভর্তি বাল্কহেডটি বৃহস্পতিবার ভোর রাতে মতলবের মোহনপুরে মেঘনা নদীতে নোঙর করে রাখে। মধ্যরাতে হঠাৎ বাল্কহেডটি পানিতে ডুবে যায়।
এ সময় ছাউনির ওপরে থাকা দুই শ্রমিক সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও ভেতরে ঘুমিয়ে থাকা দুজন পানিতে ডুবে যান। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিযান চালায়। অবশেষে বৃহস্পতিবার (৯ জুন) বিকাল ৩টার সময় ডুবে যাওয়া বালুবাহী একটি বাল্কহেড এর ভিতর থেকে নিখোঁজ দুই শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করে।
চাঁদপুর নৌ অঞ্চলের পুলিশ সুপার মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, বালুভর্তি থাকায় এমনিতেই বাল্কহেডটি পানিতে অর্ধনিমজ্জিত ছিল। রাত ১টা-২টার সময় পুরোটা ডুবে যায়। ধারণা করছি বাতাস ও ঢেউয়ের কারণে পানিতে ডুবে থাকতে পারে।
দুর্ঘটনাকবলিত বাল্কহেড থেকে প্রাণে রক্ষা পাওয়া নাঈম সিকদার ও মো. মহিউদ্দিন জানান, রাতে তারা চারজন ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় নোঙ্গর করা বাল্কহেড হঠাৎ ডুবে যায়। কিন্তু কি কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে, ফলে ঘুমে থাকায় তারা কোনো কিছুই আঁচ করতে পারেননি।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁদপুরে প্রতিদিন শত শত বাল্কহেড নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। এসব বাল্কহেডগুলোতে নৌ-দুর্ঘটনা এড়ানোর তেমন কোনো সরঞ্জাম নেউ বললেই চলে। ফলে প্রতিনিয়ত এসব বাল্কহেড যেমন দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে, তেমনি এসব বাল্কহেডের জন্য রাতে এবং দিনের বেলা যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। বিষয়টি নজরে আনার জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেছে সচেতন মানুষ।
নিজস্ব প্রতিবেদক,১০ জুন ২০২১
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur