হাইমচর

মেঘনায় যাত্রীবাহী ট্রলার ডুবি : নিখোঁজ ২০, আহত ১৮

চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলায় তেলির মোড় সংলগ্ন মেঘনা নদীতে হাইমচর থেকে ঈশানবালাগামী ৬০/৭০ জন যাত্রী বাহী ট্রলার রবিন-১ ডুবে শিশু সহ প্রায় ২০ জন যাত্রী নিখোঁজ ও ১৮ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়া মাত্রই ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (মায়া) সহ জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও হাইমচর উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আহতদের সান্ত¡Íনা দেন এবং ত্রাণমন্ত্রীর পক্ষ থেকে উদ্ধারকৃত আহতদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ প্রদান করা হয়।

ঘটনায় নিখোঁজদের উদ্ধারে কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণে হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আর এমও ডাঃ দীপনা দে ও মেডিকেল অফিসার ডাঃ নাজমুল করিম এর নেতৃত্বে ২টি মেডিকেল টিম মেঘনা নদীর পাড়ে সর্বাত্মক সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছেন।

জানা যায়, ২৬ জানুয়ারি সকাল ৯ টায় হাইমচর তেলিরমোড় ঘাট থেকে ৬০/৭০জন যাত্রী নিয়ে ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী স্টীল বডি ট্রলার রবিন-১ ঈশানবালা যাওয়ার পথে ঘন কুয়াশায় জাহাজের ধাক্কায় ট্রলারটি যাত্রীসহ পানিতে ডুবে যায়। তাৎক্ষণিক পেছন থেকে আসা একটি জেলে নৈাকা ও রবিন -২ প্রায় ৩০/৩৫ জন যাত্রী উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

এদের মধ্যে আহত অবস্থায় ১৮ জন কে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। আহতরা হলেন আঃ করিম মাস্টার (৫৫), শ্যামলী (২২), সুমন (২৫), শাহআলম (৪০), মনির হোসাইন (২৫), শামছুর নাহার (৪০), নাসরিন (২৫), সোবহান মাস্টার (৩৫), মনোয়ারা বেগম (৩৫), পিয়ারা বেগম (২৮), শজিন আখন (১৪), জান্নাত (৪)।

এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত নিখোঁজ বাকিদের উদ্ধারে প্রশাসন সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে দুর্যোগ ও ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী (মায়া) বীর বিক্রম, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মন্ডল, এডিসি লুৎফুর রহমান, চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ রথিন্দ্র নাথ মজুমদার, ডাঃ দীপু মনি এমপির বড় ভাই ডাঃ জে আর ওয়াদুদ টিপু. হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ নুর হোসেন পাটওয়ারী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল, অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওয়ালী উল্লাহ অলি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে দুর্যোগ ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জেল হোসেন মায়া আহতদের সান্ত¡না দিয়ে বলেন, বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে সু-চিকিৎসা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সার্বিক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

দুর্যোগকে ধৈর্য সহকারে মোকাবেলা করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান এবং রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে তিনি সংশ্লিদের নির্দেশ দেন।

তিনি হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিদর্শন শেষে চিকিৎসা সেবা সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি হওয়া প্রত্যেক রোগীকে নগদ ৫হাজার টাকা প্রদান করেন। হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া আহতদের আত্ম চিৎকারে হাসপতালের আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠছে।

নিখোঁজদের খোঁজে তাদের স্বজনেরা মেঘনা নদীরপাড়সহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভীড় জমিয়েছে। ঘটনাস্থলে চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিস ও নৌপুলিশের উদ্ধার বাহিনী কাজ করছে।

এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত বিভিন্ন তথ্য অনুযায়ী প্রাপ্ত নিখোঁজ যারা রয়েছেন তারা হলেন নার্গিস (২৮), শাহজাদি (৬) ফাহিম হোসেন (১৮মাস), আলেয়া বেগম(২৫), সিয়াম (৬), স্বপ্না (৩), মানিক (৪), রতন(২), আহমদউল্লাহ সিকদার (৪৪)।

দুর্ঘটনা সম্পর্কে হাইমচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল চাঁদপুর টাইমসকে জানান, দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে পৌছি। আহতদের উদ্ধার করে সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। নিখোঁজদের উদ্ধারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এছাড়া নৌ বাহিনীর একটি ডুবরি দল রাতে ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কাজ চালাবে।

দুর্ঘটনার সম্পর্কে হাইমচর থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ ওয়ালি উল্লাহ অলি চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ঘন কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে তিনি জানান, আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হচ্ছে এবং নিখোঁজদের তালিকা তৈরি করে তাদের সন্ধানে প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বি এম ইসমাইল, হাইমচর করেসপন্ডেন্ট

 

|| আপডেট: ০৯:৪৫ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬, মঙ্গলবার

এমআরআর 

Share