মেঘনার জোয়ারে লক্ষ্মীপুর উপকূলে ভাঙন

পূর্ণিমা ও ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে অস্বাভাবিক জোয়ারে লক্ষ্মীপুরের উপকূলে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। কমলনগর উপজেলার মতিরহাট, চরমার্টিন, নাসিরগঞ্জ, নবীগঞ্জ, কালকিনি ও রামগতির চরগাজী ও চর আবদুল্লাহসহ মেঘনা নদী তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব এলাকার অন্তত ২০টি কাঁচা ও পাকা রাস্তা ভেঙে গেছে।

মঙ্গলবার (২৫ মে) ও বুধবার (২৬ মে) এ দুদিন মেঘনার ঢেউয়ের আঘাতে কমলনগরের নাসিরগঞ্জ বাজার এলাকার প্রায় ৫০ মিটার বিলীন হয়ে গেছে। ভেঙে পড়েছে গাছপালা। পার্শ্ববর্তী একটি বেড়িবাঁধ ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

বুধবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত জোয়ারে অন্তত ১০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি ছিল। এ সময় ভোগান্তিতে পড়েন কয়েকশ পরিবার।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে মেঘনা উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় মাইকিংয়ের মাধ্যমে প্রচারণা চালিয়ে নদী তীরবর্তী বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে আনার চেষ্টাও করা হয়েছে। তবে এসব এলাকার কোনো মানুষও আশ্রয় কেন্দ্রে যাননি। সবাই নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করেছেন। গৃহপালিত পশুপাখিও আগের অবস্থানেই ছিল। মেঘনার ভাঙনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে তারা এখন অদম্য সাহসী!

কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক রাকিব হোসেন সোহেল বলেন, ‘ইয়াসের প্রভাবে মেঘনা উত্তাল হয়ে উপকূলে ভাঙন বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্রুত নদী ভাঙন রোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে অতীতের মতো এসব এলাকার বহু মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়বে। গত দুদিনে নাসিরগঞ্জ বাজারসহ কয়েকটি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা মেঘনায় বিলীন হয়ে গেছে।’

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘দু-তিনটি বাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এতে কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়। এলাকাগুলো পরিদর্শন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের দ্রুত বাঁধ সংস্কারের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে পানিবন্দি দেড় শতাধিক পরিবারকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।’

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল মোমিন বলেন, ‘মেঘনার জোয়ারে কিছু কাঁচা রাস্তার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া তেমন বেশি প্রভাব রামগতিতে পড়েনি। প্রায় ৩০০ পরিবারকে শুকনো খাবার পৌঁছে দেয়া হয়েছে।’

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, ‘দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে লক্ষ্মীপুরে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রচারণা চালানো হয়েছে নিরাপদ স্থানে সরে আসার জন্য। একই সঙ্গে মেঘনা তীরবর্তী বাসিন্দাদের জন্য দুর্যোগ মুহূর্তে ২৭৯ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২৪ লাখ টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য ৯ লাখ ও গো-খাদ্যের জন্য ১৩ লাখ টাকা মজুত রাখা হয়েছে।’

স্টাফ করেসপন্ডেট,২৭ মে ২০২১

Share