Home / সারাদেশ / ১৫ দিনেও সন্ধান মেলেনি মেঘনায় নিখোঁজ ৩ জেলের, আদালতে মামলা
মেঘনায়

১৫ দিনেও সন্ধান মেলেনি মেঘনায় নিখোঁজ ৩ জেলের, আদালতে মামলা

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কবলে পড়ে মেঘনা নদীতে নিখোঁজ হওয়া লক্ষ্মীপুরের রায়পুরের তিন জেলের সন্ধান ১৫ দিনেও মেলেনি। এরমধ্যে নিখোঁজ লিটন বেপারীর বাবা আবুল কাশেম বেপারী তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিটনকে নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়েছে।

সোমবার (৭ নভেম্বর) সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রায়পুর আদালতে মামলাটি করেন আবুল কাশেম। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাদীর আইনজীবী মিজানুর রহমান মুন্সি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, মামলাটি আদালতের বিচারক ভিক্টোরিয়া চাকমা আমলে নিয়েছেন। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগির আদেশনামা ডিবির কাছে পৌঁছানো হবে।

এজাহার সূত্র জানায়, অভিযুক্ত রাসেল বেপারীর কাছে ২০ হাজার টাকা পেতেন বাদী আবুল কাশেম। ওই টাকা রাসেল সময়মতো ফেরত দিতে পারেননি। গত ২৪ অক্টোবর রাতে ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে তার ছেলেকে অভিযুক্তরা মেঘনায় মাছ শিকারে নিয়ে যান। একপর্যায়ে তারা লিটনকে ধাক্কা দিয়ে গভীর মেঘনায় ফেলে দেন।

পরদিন অভিযুক্তরা বাড়িতে ফিরলেও লিটনকে দেখা যায়নি। তার আত্মীয়-স্বজনরা জিজ্ঞাসা করলে তারা সদুত্তর দিতে পারেননি। এ ঘটনায় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রায়পুর আদালতে তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন আবুল কাশেম।

বাদী আবুল কাশেম বেপারী বলেন, ‘রাসেল টাকা আত্মসাৎ করতেই কৌশলে আমার ছেলেকে নদীতে নিয়ে হত্যা করেছেন। ১৫ দিন হয়ে গেলো আমার লিটনকে কোথাও পাওয়া যায়নি।’

বক্তব্য জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করেও অভিযুক্তদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

তবে ঘটনার দিন একসঙ্গে নৌকায় থাকা জেলে রাসেল হাওলাদার জানান, রাসেল বেপারীর নৌকায় তারা কাজ করেন। নদীতে মাছ শিকার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। কিন্তু উত্তাল নদীতে মাছ বেশি পাওয়ার আশায় দুই নৌকাতে তারা ১০ জন মাছ শিকারে যান। নদীর কমলনগর এলাকায় তাদের নৌকা ছিল। ঝড়ের সময় ঢেউয়ের সঙ্গে তাদের একটি নৌকার তলা ফেটে যায়। এতে নৌকাটি অন্যটির সঙ্গে বাঁধা হয়।

কিছুক্ষণ পরই তাদের নৌকাটি উল্টে ডুবে গেলে তারা নদীতে পড়ে যান। একপর্যায়ে ভেসে তারা সাতজন কমলনগরের মতিরহাট এলাকায় কূলে উঠে আসেন। কিন্তু লিটন, শিপন বেপারী ও সুজন সরদারকে কোথাও পাওয়া যায়নি।

রায়পুর উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য নজরুল ইসলাম জানান, জেলেদের সন্ধানে তারা ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সঙ্গে নদীতে গেছেন। কমলনগর, রামগতি ও ভোলার অংশের সম্ভাব্য স্থানে তাদের খোঁজ করা হয়েছে। তাদের না পাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন রয়েছেন।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, জেলে নিখোঁজের ঘটনায় থানায় একটি জিডি হয়েছে। তাদের সন্ধানে নদী ও তীরবর্তী এলাকায় খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

নিখোঁজ শিপন রায়পুর উপজেলার চরকাছিয়া গ্রামের আবদুর রব বেপারীর ছেলে ও সুজন একই এলাকার রব সরদারের ছেলে।

বার্তা কক্ষ, ৮ নভেম্বর ২০২২