ভিখারিনির মৃত্যুর পর চাঁদা তুলে সৎকার করেছিলেন প্রতিবেশীরা। পরে মৃতদেহের ঘর থেকে উদ্ধার হয় দুই কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট। বিপুল অর্থের সঠিক উত্তরাধিকারীর খোঁজ করছে ব্যাঙ্ক।
বহু বছর আগে আজমীরের নাল্লা বাজার এলাকার স্থানীয় মন্দির চত্বরের একটি ঘর ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন নিঃসন্তান প্রেম নারায়ণ ও কনকলতা। তাঁরা নিঃসন্তান ছিলেন। বছর খানেক আগে অসুস্থ হওয়ার পর সরকারি হাসপাতালে প্রেম নারায়ণের চিকিৎসা হয়। সেই সময় হাসপাতালে দিন-রাত পড়ে থাকতেন বৃদ্ধা কনকলতা। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁকে লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতেও দেখা গিয়েছে। প্রতিবেশীরা জানতে পারেন, স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েন। প্রতিবেশীদের কাছে ভিক্ষা করে কোনও মতে তাঁর দিন গুজরান হত।
গত বৃহস্পতিবার ৭০ বছর বয়সে বৃদ্ধা মারা যান। তাঁর সৎকারের জন্য চাঁদা তুলে অর্থ সংগ্রহ করেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু তার পরপরই চমক! বৃদ্ধার ঘর থেকে উদ্ধার হয় দুই কোটি টাকা মূল্যের ফিক্সড ডিপোজিটের কাগজপত্র। পুলিশের সহায়তায় সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে সেই সমস্ত কাগজ জমা দেওয়া হয়। কিন্তু বৃদ্ধার কোনও উই না থাকায় এবং তাঁর কোনও সন্তান না থাকায় সমস্যায় পড়ছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। আপাতত ওই টাকার প্রকৃত উত্তরাধিকারীর সন্ধানে রয়েছে ব্যাঙ্ক।
প্রতিবেশী রাজু মিশার জানিয়েছেন, ‘নাল্লা বাজারের ঘুপচি ঘরে ভিখারিনির মতো দিনযাপন করতেন বৃদ্ধা। মন্দির চত্বরে তাঁর ঘরের ভিতর ঢুকলে অভাবের প্রকট চিহ্ন দেখতে পাওয়া যেত।’ তাঁর প্রতি করুণাবশত স্থানীয়রা খাদ্য ও পোশাকের ব্যবস্থা করেন। দিন দুয়েক আগে কনকলতার ঘরে খোঁজ নিতে গিয়ে তাঁকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান প্রতিবেশীরা। চাঁদা তুলে তাঁর পারলৌকিক কাজ সম্পন্ন করা হয়।
বৃদ্ধার মৃত্যুর পর মন্দিরের প্রধান পুরহিত ও কয়েকজন প্রতিবেশী তাঁর ঘর খোলেন। পুরানো আসবাবপত্র এবং বহু ব্যবহৃত পোশাকের পর খাটের নীচে থেকে একটি লোহার বাক্স উদ্ধার হয়। বাক্স খুলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। ভিতরে থরে থরে রাখা ছিল নানান ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট করা টাকার সার্টিফিকেট। গুণেগেঁথে দেখা যায়, জমা রাখা টাকার মোট পরিমাণ ২ কোটি। কাগজ উদ্ধার করে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হয়।
নাল্লা বাজারের বাসিন্দা মুকেশ জোশি জানিয়েছেন, ‘এই সময় হঠাৎ ছত্তিশগড় থেকে মৃত দম্পতির এক ভাগ্নে এসে হাজির হয়। এর আগে তাঁকে কখনও দেখা যায়নি। তিনি জানিয়েছেন, ব্যাঙ্কে জমানো টাকা দিয়ে মৃত আত্মীয়দের স্মৃতিতে একটি মন্দির গড়তে চান। অথচ বেঁচে থাকতে প্রেমনারায়ণ বা কনকলতার খোঁজে তাঁকে আসতে দেখা যায়নি।’সূত্র: এই সময়
নিউজ ডেস্ক : আপডেট ১:০২ এএম, ০২ মে ২০১৬, সোমবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur