জাতীয়

মুসলিম জাতীয় সংস্কৃতির অন্যতম উৎসব হচ্ছে ঈদ

চাঁদপুর টাইমস রিপোর্ট :

মুসলিম জাতীয় সংস্কৃতির অন্যতম উৎসব হচ্ছে ঈদ। এ আনন্দে একাকার হয়ে যায় ব্যক্তি পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, সংস্কৃতি। এ উৎসবের মূল উপজীব্য হচ্ছে মানুষ। যে মানুষ দীর্ঘ এক মাস সিয়াম ও কিয়ামের মাধ্যমে ধৈর্য, সংযম, মানবিক ত্রুটি থেকে মুক্ত হতে পেরেছে। যে মুসলমান রমজান মাস সিয়াম পালনে কষ্ট করেছে, তার জন্যই এ ঈদ ও ঈদের আনন্দ।

এটিই হচ্ছে ইসলামি জীবন দর্শনের সফলতার সম্মিলন। এ উৎসবের মূলে রয়েছে আত্মার পরিশুদ্ধি এবং চরিত্রিক উন্নতি। হিংসা-বিদ্বেষ, ভুলে গিয়ে ঈদ আনন্দ হোক মানব প্রেমে ঝলসে ওঠার অঙ্গীকার। তাইতো এ উৎসবে মানুষে মানুষে ভালবাসা ভাগাভাগি করে নেয়া। যে উৎসবে বিরাজ করে জান্নাতি পরিবেশ।

এক মাসের সিয়াম সাধনায় মানুষের মন হয়ে ওঠে উদার, সহমর্মিতাপূর্ণ ও আল্লাহর প্রেমের প্রেমিক। রমযান মাসে যারা প্রবৃত্তির প্ররোচনাকে দমন করে বিবেকের শক্তিকে জাগ্রত করতে পেরেছেন। ঈদের দিন মহান আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেন। রোজাদারদের জন্য ঈদের দিন হচ্ছে একটি বিরাট প্রাপ্তির দিন।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদকে মুসলমানদের জাতীয় উৎসব হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘‘প্রত্যেক জাতির নিজস্ব উৎসব রয়েছে। আর এটি হচ্ছে (ঈদুল ফিতর) আমাদের উৎসব’। মানব মনের সজীবতা ও কোমলতা অটুট থাকার মাধ্যমই হচ্ছে এই ঈদ। রমজানের রোজা শেষে খুশির উৎসব ঈদুল ফিতর।

ঈদ আসে সাম্যের বাণী নিয়ে। ঈদের নামাজে একত্রিত হয় সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। সেখানে থাকে না কোনো ভেদ-বিদ্বেষ, উঁচু-নিচু। সবাই একই সমতল ভূমিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক কাতারে দাঁড়িয়ে মহান আল্লাহর সামনে প্রার্থনা করেন। কামনা করেন কল্যাণ ও শান্তির। যেখানে কেউ বাদ যায় না। কেউ পিছু হটে না। এ যেন অর্পূব দৃশ্যের অবতারণা হয় ঈদগাহে। তাইতো ঈদগাহ হয়ে উঠে সামাজিক মিলন মেলা।

বছরে অন্তত ঈদের দিনে মানুষ সব ক্ষুদ্রতা, সংকীর্ণতা, তুচ্ছতা, হিংসা ও বিদ্বেষ ভুলে পরস্পরকে ভালবাসে। সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে সামাজিক ঐক্য, সংহতি ও ভালবাসার নিবিড় সৃষ্টি হয়। যে আনন্দ উৎসব প্রবাহিত হয় মানুষ হৃদয় থেকে দেহে। ঈদের দিনে সব মুসলমান নতুন জামা-কাপড় পরে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজন ও পাড়া-পড়িশদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সালাম, কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করে। কেউ কেউ ঈদের নামাজ পড়েই মৃত বাবা-মাসহ আত্মীয় সজনের কবর জিয়ারতের মাধ্যমে হারানো মানুষদের স্মরণ করে।

আবার আমাদের সমাজের দারিদ্রপীড়িত জনগোষ্ঠীও যেন ঈদের আনন্দ থেকে বাদ না যায়, তাদের ঈদের আনন্দ যেন ফিকে হয়ে না যায়, তারাও যেন এক চিলতে আনন্দ উৎসব করতে পারে সে জন্য ইসলাম ঘোষণা করেছে জাকাতুল ফিতর। যা আদায় করা ইসলামে আবশ্যক। সমাজের বিত্তবান লোক তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভাব গ্রস্ত মানুষকে ফিতরা দান করে ঈদের আনন্দের সুযোগ করে দেয়া অতিব জরুরি। তবেই সমাজে পরিপূর্ণ ঈদের আমেজ ফিরে আসবে; সমাজ হয়ে উঠবে আনন্দ মুখর। থাকবে না কোনো মলিন চেহারা । বইবে শান্তি সুবাতাস।

ঈদের দিনের সুখ, সমৃদ্ধি, শান্তির কামনাই হোক প্রতিটি মুমিন বান্দার কামনা। পৃথিবীতে বিরাজ করুক জান্নাতি পরিবেশ। মানবজীবন হয়ে ওঠুক আনন্দময়। একে অপরের সঙ্গে ভালবাসা বিনিময়ে সবাইকে জানাই ঈদ মোবারক।

চাঁদপুর টাইমস ডটকমের সঙ্গে থাকুন। কুরআন-হাদীস মোতাবেক আমলী জিন্দেগী যাপন করে রমজানের রহমত, বরকত ও মাগফেরাত অর্জন করুন। আমীন, ছুম্মা আমীন।

আপডেট :   বাংলাদেশ সময় : ০৯:১৪ অপরাহ্ন, ০২ শ্রাবণ ১৪২২ বঙ্গাব্দ, শুক্রবার ১৭ জুলাই ২০১৫

 

চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫

চাঁদপুর টাইমস ডট কমপ্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি

Share