বিশ্ববিদ্যালয় শব্দটির উদ্ভব হয়েছে লাতিন Universitas Magistrorum et Scholarium থেকে। যার অর্থ শিক্ষক ও পণ্ডিতদের সম্প্রদায়।
বিদ্যালয় শব্দটির সঙ্গে বিশ্ব শব্দটি যোগ করার অর্থ হলো, এই বিদ্যাপীঠ কোনো একটি নির্দিষ্ট দেশ বা জাতির জন্য নয়। এটি সারা বিশ্বের জন্য। এখানে সারা বিশ্বের যেকোনো দেশের মানুষ পড়তে ও পড়াতে পারবে।
বর্তমানে পৃথিবীতে লাখো ইউনিভার্সিটি আছে। কিন্তু কোনটি পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়, তা নিয়ে কয়েকটি অভিমত পাওয়া যায়।
চীনাদের দাবি হচ্ছে, পৃথিবীর প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় হলো চীনের সাংহাই হায়ার স্কুল। এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে খ্রিস্টপূর্ব ২২৫৭ সালে। অল্পকাল পরেই এটি বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে আরো একটি বিশ্ববিদ্যালয় চীনের ঝু ডায়নাস্টির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়।
প্রতিষ্ঠানটির নাম ইম্পেরিয়াল কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় (Imperial Central School)। খ্রিস্টপূর্ব ১০৪৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি টিকেছিল ২৪৯ বছর পর্যন্ত। পাকিস্তানিদের দাবি হলো, পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হলো পাকিস্তানের তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়।
আজ থেকে দুই হাজার ৭০০ বছর আগে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বেবিলন, গ্রিস, সিরিয়া, পারস্য, আরব, চীনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে ছাত্ররা এখানে ভিড় করত। প্রতিকূল যোগাযোগব্যবস্থা, অমসৃণ পথের দুঃসহ যন্ত্রণা আর পথে মৃত্যুভয় উপেক্ষা করে উচ্চশিক্ষার হিরণ্ময় সাফল্য লাভের আশায় জ্ঞানপিপাসুদের মেলা বসত এখানে।
সারা বিশ্ব থেকে ১০ হাজার ৫০০ জন ছাত্র উচ্চতর গবেষণার জন্য আসতেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই বিশাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম তক্ষশীলা বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমান পাকিস্তানের রাওয়ালপিণ্ডি জেলায় ছিল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান।
পাকিস্তানের বর্তমান রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে মাত্র ৩২ কিলোমিটার দূরে এটি অবস্থিত। তার ধ্বংসাবশেষ এখনো সেখানে রক্ষিত আছে। পণ্ডিত ব্যক্তিরা অবশ্য এটাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাপকাঠিতে স্বীকৃতি দিতে নারাজ।
তাদের দাবি হলো, তক্ষশীলা শিক্ষালয়টি বর্তমানের বিভিন্ন ক্যাটাগরির বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। বিশ্ববিদ্যালয় বলতে সাধারণত আমাদের চোখে ভেসে ওঠে কোনো একটি একক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। যেটি পরিচালিত হয় সুনির্দিষ্ট নীতিমালা দিয়ে। কিন্তু তক্ষশীলার ক্ষেত্রে তা যায় না।
এখানে শিক্ষকরা ছিলেন স্বাধীন। যে যাঁর মতো পাঠদান করতেন। তাঁরা খণ্ড খণ্ড বিভাগের দায়িত্ব থেকে নিজ নিজ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম ও পাঠ্যসূচি পরিচালনা করতেন। তক্ষশীলাকে বিশ্ববিদ্যালয় বিবেচনা করা যায় কি না, তা নিয়ে বিজ্ঞ মহলে যুক্তি-পাল্টা যুক্তির তীর নিক্ষেপ চললেও তক্ষশীলা যে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল, সে বিষয়ে সবাই একমত।
এদিকে ভারতীয়দের দাবি হলো, বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে ভারতের বিহারের রাজগিরের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। ইতিহাসের নানা ঘাত-প্রতিঘাতে সময়ের ব্যবধানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ও একসময় বন্ধ হয়ে যায়।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়টি সর্বপ্রথম ৪৫৫ থেকে ৪৬৭ সাল পর্যন্ত বন্ধ থাকে। পরে দ্বিতীয় দফায় ৬০০ সালে বন্ধ হয়ে ৬৬৮ সালে পুনরায় চালু হয়। কিন্তু ১১৯৩ সালে এটি স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়। ৮২১ বছর পর সেই নালন্দার দরজা ফের খুলেছে ২০১৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর সোমবার। মাত্র দুটি বিভাগে ১১ জন শিক্ষক ও ১৫ শিক্ষার্থী নিয়ে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করেছে নালন্দা।
নালন্দাকে নিয়ে গর্ব করার অনেক কিছুই ছিল। এখানে দুই হাজার শিক্ষক ও ১০ হাজার ছাত্র ছিল। নালন্দা মূলত বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষা ও গবেষণার জন্য নির্মিত হয়েছে। পরে সেখানে হিন্দু ধর্মচর্চা শুরু হয়।
এসব মত-দ্বিমত পেছনে রেখে মুসলমানরা দাবি করে, পৃথিবীতে তারাই সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য দলিল-দস্তাবেজ মুসলমানদের পক্ষে। গিনেস বুকের রেকর্ড অনুসারে মরক্কোর ফেজ নগরীর কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়।
(http://www. guinnessworldrecords.com/world-records/oldest-university) জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (United Nations Educational, Scientific and Cultural Organization) বা ইউনেস্কো (UNESCO)-এর ঘোষণা মতেও কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। (A History of the University in Europe. Vol. I : Universities in the Middle Ages, Cambridge University Press, 2003, ISBN 978-0-521-54113-8, pp. 35–76 (35) মরক্কোর ফেজ নগরীর এই প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে।
১৯৬০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টির ১১০০তম বর্ষপূর্তি ঘটে। এই বিশ্ববিদ্যালয় চালুর সময় ছিল ইসলামের সোনালি যুগ। নবম শতাব্দীর প্রথম দিকে ফেজ নগরী ছিল অনেকটা গ্রামসদৃশ।
তখন মরক্কোর শাসক আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন : ‘হে আল্লাহ! আপনি এ নগরীকে আইন ও বিজ্ঞানের কেন্দ্র হিসেবে কবুল করুন।’ সে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে ফেজ নগরীর এক বিধবা ধনাঢ্য মহীয়সী নারী চালু করেন কারাওইন মসজিদ। কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয় ৮৫৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মসজিদের অংশ হিসেবে। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ফাতিমা আল ফিহরি নামের এক মহীয়সী নারী। তাঁর বাবা ছিলেন ফেজ নগরীর ধনাঢ্য ব্যবসায়ী মুহাম্মদ আল ফিহরি। আল ফিহরি পরিবার ফেজে আসেন নবম শতাব্দীর প্রথম দিকে। তাঁরা এখানে আসেন তিউনিসিয়ার কারাওইন থেকে। সে সূত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম রাখা হয় কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয়।
তাদের সঙ্গে কারাওইন থেকে তাঁদের সমাজের বেশ কিছু লেখক ফেজে এসে নগরীর পশ্চিমের অংশে বসবাস শুরু করেন। ফাতিমা আল ফিহরি ও তাঁর বোন মরিয়ম আল ফিহরি উভয়েই ছিলেন সুশিক্ষিত। তাঁরা উত্তরাধিকার সূত্রে পিতার কাছ থেকে প্রচুর অর্থসম্পদ পান।
ফাতিমা তাঁর অংশের সব অর্থ খরচ করেন তাঁর সমাজের লেখকদের জন্য একটি মসজিদ তৈরির পেছনে। কেবল ইবাদতের স্থান না হয়ে এই মসজিদ শিগগিরই হয়ে ওঠে ধর্মীয় নির্দেশনা ও রাজনৈতিক আলোচনার স্থল। মসজিদটি পুরোপুরি নির্মাণ করতে সময় লেগে যায় ২৭৮ বছর।
ইতালির বোলোনা (Bologna)-য় যখন প্রথম ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয় ্রপ্রতিষ্ঠিত হয়, তারও আগে কারাওইন হয়ে ওঠে এক বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়। বলতে আপত্তি কোথায়, সভ্য দুনিয়াকে লেখাপড়া শিখিয়েছে মুসলমানরা! শুরুতে এটি ছিল ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্র। পরে সেখানে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করে জাগতিক বিষয় পড়ানো শুরু করা হয়। অচিরেই এর ছাত্রসংখ্যা দাঁড়ায় আট হাজারে।
তাঁরা সেখানে চিকিৎসাবিদ্যা থেকে শুরু করে ইতিহাস-ভূগোলসহ অনেক বিষয়েই উচ্চশিক্ষা লাভ করতে থাকেন। ফেজকে তখন বলা হতো ‘পাশ্চাত্যের বাগদাদ’—‘বাগদাদ অব দ্য ওয়েস্ট’। ইউরোপের মহাজাগরণের মধ্য দিয়ে মুসলমানদের সোনালি যুগের অবসান ঘটে।
মধ্য-অষ্টাদশ শতাব্দী পর্যন্ত এসে দেখা গেল, কারাওইন ছেড়ে গেছেন জ্ঞানী-গুণী আর বিজ্ঞানীরা। সেখানে অবশেষ রইল কেবল ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থা। ১৯১২-৫৬ সময়ে মরক্কো ছিল ফ্রান্সের প্রটেক্টরেট। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়টি ধ্বংসের মুখোমুখি এসে দাঁড়ায়। ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে ইউরোপের ষড়যন্ত্রের বলি হয় এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান।
সে সময় সেখানে পরীক্ষা ও ডিগ্রি দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। ছাত্রদের থাকতে হয় আলোহীন-বায়ুহীন প্রকোষ্ঠে, জানালাহীন কক্ষে। ১৯৫৬ সালে মরক্কো স্বাধীন হয়। জাতিকে বিংশ শতাব্দীর উপযোগী করে গড়ে তোলার দৃঢ়তা নিয়ে বাদশাহ মুহাম্মদ কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার চালু করেন গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, বিদেশি ভাষাবিষয়ক পাঠক্রম।
১৯৫৭ সালে তিনি কারাওইনে চালু করেন মহিলা শাখা। কারাওইন বিশ্ববিদ্যালয় এখন মুসলিম বিশ্বের অন্যতম এক ধর্মীয় ও জাগতিক শিক্ষাকেন্দ্র। এই বিশ্ববিদ্যালয় মধ্যযুগের মুসলমান ও ইউরোপীয়দের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাবিষয়ক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রাখে। অনেক অমুসলিমও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম অমুসলিম অ্যালামনি ছিলেন ইহুদি দার্শনিক ও ধর্মতত্ত্ববিদ মুসা বিন মাইমুন বা মাইমোনাইডস (১১৩৫-১২০৪)। তিনি শিক্ষা লাভ করেন আবদুল আরব ইবনে মোয়াশাহার তত্ত্বাবধানে। কার্টিওগ্রাফার মুহাম্মদ ইদ্রিসির (মৃত্যু : ১১৬৬) মানচিত্র ইউরোপ অভিযানে ব্যবহার হয়েছিল রেনেসাঁর যুগে। ফেজে এ মানচিত্র দীর্ঘদিন সংরক্ষিত ছিল।
এ বিশ্ববিদ্যালয় সৃষ্টি করেছে অসংখ্য জ্ঞানীগুণী, যাঁরা মুসলিম বিশ্বের জ্ঞান-বিজ্ঞান ও শিক্ষার ইতিহাসে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন ইবনে রুশায়েদ আল সাবতি (মৃত্যু : ১৩২১), মুহাম্মদ ইবনে আলহাজ আলআবদারি আলফাসি (মৃত্যু : ১৩৩৬), শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক মালিকি এবং সুপরিচিত পরিব্রাজক ও লেখক লিও আফ্রিকানাস।
প্রথম দিকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মালেকি মাজহাব অনুসারে ইসলাম ধর্মচর্চা করা হতো। ধীরে ধীরে এই প্রতিষ্ঠানকে রূপ দেওয়া হয় একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৫৭ সালে বাদশাহ পঞ্চম মুহাম্মদ সেখানে চালু করেন গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়নশাস্ত্র ও বিদেশি ভাষা শিক্ষার কোর্স।
এ বিশ্ববিদ্যালয় পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছিল ক্ষমতাধর সুলতানদের কাছ থেকে। প্রতিষ্ঠানটির আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, এখানে রয়েছে বিশ্বখ্যাত লাইব্রেরি। রয়েছে বিপুলসংখ্যক পাণ্ডুলিপি। ১৩৪৯ সালে সুলতান আবু ইনান ফ্যাবিস একটি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন।
সে লাইব্রেরিতে অসংখ্য মূল্যবান পাণ্ডুলিপি রাখা হয়। আজকের দিনে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব মূল্যবান পাণ্ডুলিপি রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে : হরিণের চামড়ার ওপর ইমাম মালেক (রহ.)-এর লেখা মুয়াত্তার পাণ্ডুলিপি, ১৬০২ সালে সুলতান আহমাদ আল মনসুরের দেওয়া কোরআনের কপি, সিরাতে ইবনে ইসহাক, ইবনে খালদুনের বই ‘আল-ইবার’-এর মূল কপি।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে পড়ানো হতো কোরআন ও ফিকহ (ইসলামী আইনশাস্ত্র), ব্যাকরণ, বক্তৃতাদানবিদ্যা বা অলংকারশাস্ত্র, যুক্তিবিদ্যা, চিকিৎসাবিদ্যা, গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, রসায়নবিদ্যা, ইতিহাস, ভূগোল ও সংগীতবিদ্যা।
মধ্যযুগে কারাওইন মুসলমান ও ইউরোপের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও জ্ঞান বিনিময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অগ্রণায়ন বিদ্বজ্জন ইবনে মাইমুন (১১৩৫-১২০৪), আল-ইদ্রিসি (মৃত ১১৬৬), ইবনে আরাবি (১১৬৫-১২৪০), ইবনে খালদুন (১৩৩২-১৩৯৫), ইবনে খতিব, আল-বিতরুজি (অ্যালপে ট্রেজিয়াম), ইবনে হিরজিহিম ও আল ওয়্যাজ্জেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বা শিক্ষক ছিলেন।
যেসব খ্রিস্টান পণ্ডিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং স্কলার ছিলেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বেলজিয়ামের নিকোলাস ক্লোনয়ার্টস ও ওলন্দাজ গোলিয়াস। ধারাক্রমে মরক্কোর বিভিন্ন শাসক কারাওইন মসজিদ কমপ্লেক্সের সম্প্রসারণ করেছেন অব্যাহতভাবে। সেখানে ২০ হাজার নামাজি একসঙ্গে নামাজ আদায় করার সুযোগ পান।
শুরুতে মসজিদটির দৈর্ঘ্য ছিল ৩০ মিটার। ছিল একটি প্রাঙ্গণ ও চারটি স্তম্ভপরিবেষ্টিত ঘোরানো গলি। এর প্রথম সম্প্রসারণ হয় ৯৫৬ খিস্টাব্দে। এই সম্প্রসারণের কাজ করান কর্ডোভার উমাইয়া খলিফা তৃতীয় আবদুর রহমান। তখন মসজিদ সম্প্রসারিত করা হয়। মিনার স্থানান্তর করা হয়। তখনকার দিনে ফেজ নগরীতে একটা রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল, কারাওইনের মিনার থেকে আজানের আওয়াজ আসার পরপরই নগরীর অন্যান্য মসজিদে আজান শুরু করা হতো।
এ মসজিদে সবচেয়ে ব্যয়বহুল পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন হয় ১১৩৫ খ্রিস্টাব্দে, মুরাবিদ শাসক সুলতান আলী ইবনে ইউসুফের তত্ত্বাবধানে। তিনি আদেশ দেন, মসজিদের স্তম্ভপরিবেষ্টিত ঘোরানো গলি ১৮টি থেকে ২১টিতে উন্নীত করতে হবে। এ সময় এর কাঠামোর সম্প্রসারণ ঘটানো হয় তিন হাজার বর্গমিটার।
লেখক : মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ, শিক্ষক, মাদ্রাসাতুল মদিনা নবাবপুর, ঢাকা, সূত্র- কালেরকণ্ঠ
নিউজ ডেস্ক : আপডেট বাংলাদেশ সময় ৪:২৫ পিএম, ১৫ মে ২০১৬, রোববার
ডিএইচ