মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের দু’সদস্যের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ফরেন অ্যাসেট কন্ট্রোল দফতর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। পাশাপাশি ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়ায় আরও পদক্ষেপ নেয়ার হুমকি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
১ ফেব্রুয়ারি (সোমবার) ভোরে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এদিন অভিযান চালিয়ে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আটক করা হয়। দেশজুড়ে জারি করা হয় জরুরি অবস্থা। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় দেশটির বেশ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। এবার নতুন করে দু’জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার উভয়কেই নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
যাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে তারা হলেন, মিয়ানমারের বিমান বাহিনীর প্রধান জেনারেল মুং মুং কিয়াও এবং সেনাবাহিনীর সাবেক চিফ অব স্টাফ এবং সামরিক বাহিনীর অন্যতম স্পেশাল অপারেশন ব্যুরোর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোয়ে মিন্ট তুন। এরা দু’জনই মিয়ানমারের জান্তা সরকারের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের সদস্য। রাজধানী নেপিডো থেকে জেনারেল মিন্ট তুনের পরিচালনাধীন ব্যুরোটি তাদের বিভিন্ন অভিযান নিয়ন্ত্রণ করে। এ নিষেধাজ্ঞার বলে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কোনো সম্পদ থাকলে তা জব্দ হবে এবং মার্কিন নাগরিকরা এদের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবেন না।
এক বিবৃতিতে যু্ক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে,“সামরিক বাহিনীটিকে অবশ্যই তাদের পদক্ষেপ থেকে সরে আসতে হবে এবং জরুরিভিত্তিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে বার্মার (মিয়ানমার) ক্ষমতায় পুনর্বহাল করতে হবে,তা না হলে অর্থ মন্ত্রণালয় পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না।” বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনও একই ধরনের হুমকি দিয়েছেন।
তিনি বলেছেন,‘জনগণের ইচ্ছাকে যারা দমন করছে ও সহিংসতা করছে তাদের বিরুদ্ধে আরও পদক্ষেপ নিতে আমরা দ্বিধা করবো না।’
সোমবার মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়। এ সময় দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল এবং হাজার হাজার প্রতিবাদকারী জনতা বিভিন্ন শহরগুলোতে জড়ো হয় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দেখায়।
সামরিক অভ্যুত্থানের পর তিন সপ্তাহ পার হলেও প্রতিদিন জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ ও পেশাজীবীদের ডাকা আইন অমান্য আন্দোলন থামাতে ব্যর্থ হয়েছে জান্তা। সামরিক শাসনের অবসান ও নির্বাচিত নেত্রী অং সান সু চিসহ আটক অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবি ক্রমেই জোরালো হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ,২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১