মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর চলমান নৃশংসতার ঘটনায় প্রথমবারের মতো কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন,`রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতা ও জাতিগত নির্মূল প্রচেষ্টা অবশ্যই মিয়ানমারকে বন্ধ করতে হবে। তিনি রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দোষারোপ করেছেন।’
বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর ) লন্ডনে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে এক যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীও রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।
টিলারসন বলেন,‘সেনাবাহিনীর সঙ্গে রাজনৈতিক ক্ষমতা ভাগাভাগি করে একটি কঠিন এবং জটিল পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন সুচি। কিন্তু দেশটিতে যা ঘটছে তা’ মিয়ানমারের নতুন গণতন্ত্রের এক কঠিন সময়।
রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর মিয়ানমারের বাহিনীর সহিংসতা,নির্যাতন মোটেই গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। অনেকেই এ নৃশংসতাকে জাতিগত নির্মূল প্রক্রিয়া হিসেবে দেখছে। যা বন্ধ হওয়া জরুরি।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন,‘রোহিঙ্গাদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে মিয়ানমারের প্রকৃত ক্ষমতাধর নেতা অং সান সুচিকেই তার নৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করতে হবে। সুচি যেসব মূল্যবোধে বিশ্বাস করেন,যেভাবে তিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন,সেজন্য তার প্রতি আমার প্রশংসা কারো কথায় কমে যাবে না। তবে রোহিঙ্গাদের দুর্দশা বন্ধে সুচিকে এখন তার নৈতিক কর্তৃত্ব ব্যবহার করতে হবে। রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানের কারণে এখন পর্যন্ত ৪ লাখ রোহিঙ্গা দেশ ছেড়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে।
এদিকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে ৬৩ মিলিয়ন ডলার সহযোগিতা করেছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র হিদার নোয়ার্ট।
বৃহস্পতিবার নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন,‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিষয়ক উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্যাট্রিক মার্ফি আগামী সপ্তাহে বার্মা (মিয়ানমার) যাবেন। তিনি (মার্ফি) আরও মানবিক সহযোগিতা,সাংবাদিকদের প্রবেশের বিষয়ে চাপ দেবেন এবং রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কথা তুলে ধরবেন।’
অন্যদিকে রাখাইনের সংঘাতপূর্ণ এলাকায় যুক্তরাষ্ট্রের উপ-সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্যাট্রিক মার্ফিকে প্রবেশ করতে দেবে না মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এ কথা বলা হয়েছে। মিয়ানমার শুক্রবার জানান,মার্কিন কর্মকর্তাকে রাখাইনে প্রবেশে অনুমতি দেয়া হবে না। তিনি রাজধানী নেপোডো’তে সরকারের নেতৃবৃন্দ ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন এবং মঙ্গলবার সুচি জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দেবেন সেখানে উপস্থিত থাকবেন।
তিনি রাখাইনের রাজধানী সিত্তুইয়ে যেতে পারেন। রাখাইনের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। তবে তাকে রাখাইনের উত্তরের সংঘাতপূর্ণ এলাকায় যেতে দেয়া হবে না। তবে মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্র জ হতয় শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন,‘আমরা কাউকেই রাখাইনের সংঘাত পূর্ণ এলাকায় যেতে বাধা দিচ্ছি না। তবে নিরাপত্তা বিবেচনায় সেখানে প্রবেশাধিকার সীমিত রাখা হয়েছে।’(ইত্তেফাক)
ডেস্ক নিউজ
আপডেট,বাংলাদেশ সময় ৬:৩০ পিএম,১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭,শুক্রবার
এজি