ফরিদগঞ্জে মিলাদের দাওয়াত দিতে গিয়ে দুলাভাইয়ের ছুরিকাঘাতে শ্যালকের মৃত্যু

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মিলাদের দাওয়াত দিতে গিয়ে আপন ভগ্নিপতি কর্তৃক সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক কামরুল হাসান রতন (৩৭) কে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রক্তাক্ত অবস্থায় যুবলীগ নেতাকে হাজীগঞ্জ উপজেলা সদর হাসপাতালে আনলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মনির (৩৮) ও জসিম (৫৫) দুই জনকে গরুতর অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ঘটনাটি ১৯ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকালে ৩নং সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের দিগদাইর সর্দার বাড়ী দোকানের সামনে ঘটেছে।

ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী অভিযুক্ত দুলাভাই শাহাদাত হোসেন রতনকে (৫২) আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে।

হাসপাতালে আসা নিহত রতনের ভাই দিগদাইর আটখোলা বাড়ীর ফারুক হোসেন বলেন, আমার বোন আঞ্জুমা বেগমের স্বামী ভগ্নিপতি একই দিগদাইর গ্রামের মৃত আলী আহমেদের ছেলে শাহাদাত হোসেন (৫০), তার ভাই শাহাজান, তাদের ছেলে শাহাবউদ্দিন ও মেজো ভাইয়ের ছেলে সাদ্দাম, শরিফসহ ৭/৮ জন মিলে কুপিয়ে হত্যা করে।

নিহতের ছোট ভাই চেয়ারম্যান প্রতিদ্বন্দ্বিতা কারী জিলন বলেন, আমার বড় ভাই কামরুল হাসান রতন ঢাকা থেকে মিথ্যা মামলার হাজিরা দিতে বাড়ীতে আসে। ঘটনার দিন মিলাদের দাওয়াত দিতে সর্দার বাড়ী দোকানের সামনে যায়। সেখানে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে আমার ভগ্নিপতি শাহাদাত হোসেনসহ ৭/৮ জন মিলে সাইনিজ কুড়োল দিয়ে কপিয়ে হত্যা করে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।

ফরিদগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ হোসেন বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে পারিবারিক বিরোধ নিয়ে দুলাভাই শাহাদাত হোসেন রতনের সঙ্গে শ্যালক কামরুল ইসলাম রবিনের কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে উত্তেজিত দুলাভাই শ্যালকের পেটে ধারালো চাকু বসিয়ে দেন।

তিনি আরো জানান, ছুরিকাঘাতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়। এসময় আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে পাশবর্তী হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অভিযুক্ত শাহাদাতের স্ত্রী আনজুম আরা স্বপ্না উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী টাকা ও সম্পদের জন্য আমাকে দীর্ঘদিন ধরে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। আমার ও আমার সন্তানদের সুখের কথা চিন্তা করে আমার ভাইয়েরা তাকে সবসময় টাকা দিয়ে সহযোগিতা করছে। সর্বশেষ টাকার পাশাপাশি সম্পদের জন্য আমার ভাইদের চাপ সৃষ্টি করতে থাকে সে (শাহাদাত)। এ নিয়ে বিরোধের সূত্রপাত।

স্বাপ্না বেগম আরো বলেন, সম্পদ না পেয়ে আমার স্বামী ও তার ভাই-ভাতিজারা আমার ভাইদের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে। এদিন (মঙ্গলবার) বিকালে আমার ভাইকে (কামরুল হাসান রতন) একা পেয়ে আমার স্বামীসহ অন্যরা সবাই ছুরিকাঘাত করে মেরেই ফেললো। তিনি পুলিশের কাছে এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করনে।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) সুদীপ্ত রায় বলেন, ঘটনার পরপরই উত্তেজিত এলাকাবাসী অভিযুক্তকে আটক করে। এমন সংবাদ পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) সোহেল মাহমুদসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে রতনকে আটক করে থানা নিয়ে যায়।

প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়, মাজহারুল ইসলাম অনিক, ১৯ এপ্রিল ২০২২

Share