চট্টগ্রামে বহুল আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডে স্বামী এসপি বাবুল আক্তারকে জড়িয়ে কয়েকটি অনলাইন পত্রিকায় ‘বিভ্রান্তিমূলক’ সংবাদ প্রচারকে ইঙ্গিত করে ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, ‘মিডিয়া কেন এ ধরনের খবর প্রচার করে তা আমার জানা নাই।’
রোববার (২৬ জুন) দুপুরে ধুলাইপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ওয়ারি জোনের উপ-কমিশনারের উদ্যোগে আয়োজিত ঈদবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘মিডিয়ায় অনেক কিছুই প্রচার হয়। এর সব সত্য বা সব মিথ্যা তা নয়। মিতু হত্যাকাণ্ডে একটি মামলা হয়েছে। তাতে কয়েকজন গ্রেপ্তার আছে। ব্যবহৃত অস্ত্রটিও উদ্ধার হয়েছে। তারপরও বাবুল আক্তারকে নিয়ে মিডিয়া কেন এ ধরনের খবর প্রচার করে?’
বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘এ মামলার বাদী বাবুল আক্তার নিজেই একজন অন্যতম প্রধান সাক্ষী। তাই তাকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আর এটা করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ারী উপ-কমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসরাম, যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান, শ্যামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক।
গত শুক্রবার (২৪ জুন) গভীররাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবুল আক্তারকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে। সেখানে পরদিন বিকেল পর্যন্ত ছিলেন তিনি। তবে তার সঙ্গে কী কথা হয়েছে সে ব্যাপারে জানা যাচ্ছে না।
বাবুল আক্তারকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়ার সংবাদটি শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকেই ‘ব্রেকিং’ নিউজ প্রকাশ করে। বাবুল আক্তার একজন পুলিশ কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও এত রাতে তাকে কেন ডেকে নেয়া হলো, পরিবারের সঙ্গেও কেন তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলো- এসব প্রশ্ন ছিল সবার মনেই। এরইমধ্যে শনিবার সকাল নাগাদ পুলিশের কোনো এক ‘বিশ্বস্ত’ সূত্রের বরাত দিয়ে বেশ কিছু ‘ভয়াবহ তথ্য’ দিয়ে খবর পরিবেশন করে দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। খবরে বাবুল আক্তারই স্ত্রী হত্যার ‘ছক’ করেছিলেন বলে উল্লেখ করা হয়। এমনকি খবরে ‘পরকীয়া’ ছিল বলেও উল্লেখ করা হয়। এনিয়ে দেশব্যাপী দেখা দেয় চাঞ্চল্য।
তবে বিকেল ৪টা ১৯ মিনিটে ডিবি ডিসি (পূর্ব) মাহবুবুল আলমের গাড়িতে করে বাবুলকে খিলগাঁও মেরাদিয়ায় শ্বশুর বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়। সংবাদটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পরও বেশ কিছুক্ষণ ওই সংবাদটি কয়েকটি নিউজপোর্টালে দেখা যায়। অবশ্য পরে খবরটি সেসব ওয়েবসাইট থেকে মুছে ফেলা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন নগরীর জিইসি’র মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাত ও গুলিতে খুন হন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পরদিন পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তার বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাব, সিআইডি, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও কাউন্টার টেররিজম ইউনিট (সিটিআই)। তবে মামলার মূল তদন্তে আছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। যদিও সবগুলো সংস্থা মিলে এখন পর্যন্ত এ ঘটনার তেমন কোনো ক্লু খুঁজে বের করতে পারেনি।
>> বাবুল আক্তারকে ডিবিতে আনা হয় তার কাছে সময় নিয়েই
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur