বিশেষ সংবাদ

‘মা জেনে যাওয়ার ভয়ে বাসার ডিশ লাইন কেটে দিয়েছি’

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার রকিবুল হাসান অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেছেন। স্ত্রী এমরানা কবির হাসিও মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।

ছেলের মৃত্যুর খবর মাকে এখনো জানানো হয়নি। মা যাতে জানতে না পারে সেজন্য রকিবুল ইসলামের ঢাকার বাসায় (কাজিপাড়া) ডিশ লাইন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে।

সোমবার ১২টা ৫০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ কাঠমান্ডুর উদ্দেশে রওনা হয়। এরপর বিমানটি কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিধ্বস্ত হয়। এতে চার ক্রুসহ ৭১ জন আরোহী ছিলেন। এরমধ্যে কমপক্ষে ৫০ জন আরোহী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ২১ জন।

এই বিমানের যাত্রী ছিলেন ওই দম্পতি। তারা ছুটি কাটাতে নেপালে যাচ্ছিলেন।

বিমান দুর্ঘটনায় তারা দু’জনই গুরুতর আহত হন। তাদেরকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়।

সেখানে না ফেরার দেশে চলে গেছেন রকিবুল হাসান। তার স্ত্রী রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) প্রভাষক এমরানা কবির হাসি এখনো আইসিইউতে।

একমাত্র ছেলে রকিবুল হাসানকে অনেক কষ্টে মানুষ করেছেন মা সেলিনা আখতার ঝর্ণা। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার রকিবুল সারাক্ষণ মাকে আগলে রাখতেন।

স্ত্রীর অনুমতি নিয়ে ঢাকায় মাকে নিয়ে থাকতেন রকিবুল। আর স্ত্রী এমরানা কবির হাসি থাকতেন রাজশাহীতে।

রকিবুলের মৃত্যু সংবাদ মাকে কিভাবে জানাবেন স্বজনরা। একমাত্র ছেলে হারানোর সংবাদে কি হবে মায়ের অবস্থা? এই দু:শ্চিন্তা থেকে বুধবারও তার মাকে জানানো হয়নি প্রাণপ্রিয় ছেলের মৃত্যু সংবাদ।

বাসার ডিশ সংযোগ মঙ্গলবার থেকেই বন্ধ করে রাখা হয়েছে যাতে রকিবুলের মা টিভি দেখে খবরটি জেনে না যায়।

রকিবুলের মামাতো ভাই সানি পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ফুপু স্বাভাবিকভাবে ঘরের কাজকর্ম করছেন। কিছু জানেন না। ছেলের মৃত্যুর খবর যাতে জানতে না পারে সেজন্য বাসার ডিশ লাইন কেটে দেয়া হয়েছে। অন্য স্বজনরা একসাথে হলে হয়তো উনাকে জানানো হবে। (উৎসঃ poriborton)

Share