ইলিশ আমাদের জাতীয় প্রাকৃতিক সম্পদ। পৃথিবীর ৭০ % ইলিশ আমাদের দেশের নদ-নদী পাওয়া যায়। মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান শুরু হচ্ছে ১২ অক্টোবর । ইলিশের মৌসুমে উপকূলীয় জেলাসমূহের একশ্রেণির জেলে জীবন বাচাঁনো অজুহাতে জাটকা বেড়ে ইলিশ মাছে পরিণত হওয়ার সময় ও মা মাছ ডিম পাড়ার সময় আহরণ করে থাকে। তাই ২০০৩ সাল থেকেই মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ বিভাগ জাটকা ইলিশ ও মা মাছ রক্ষায় বিশেষ কর্মসূচি পালন করে আসছে। ফলে প্রতি বছরেই ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির চিত্র দেখা গেছে ।
প্রজনন মৌসুমে “মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান” এর লক্ষ্যে দেশের প্রায় ৭ হাজার বর্গ কি.মি. এলাকাসহ ২৭ জেলার ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্রে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত এ ২২ দিন সরকার ইলিশধরা নিষিদ্ধ করেছেন। চাঁদপুরে ১ শ’ ২০ কি.মি নৌ-পথে ইলিশের বিচরণ ক্ষেত্র রয়েছে।
রোববার (২ অক্টোবর ) মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে “মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান” সংক্রান্ত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়্ । মৎস্য ও প্রাণি সম্পদমন্ত্রী মোহাম্মদ ছায়েদুল হকের সভাপতিত্ব করেন ।
ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত ৭ হাজার বর্গ কি.মি. এলাকার সীমানা হচ্ছে- মীরসরাই’র শাহের খালী হতে হাইতকান্দী পয়েন্ট, উত্তর তজুমুদ্দিন হতে পশ্চিম সৈয়দ আওলিয়া পয়েন্ট, কলাপাড়ার লতা চাপালি পয়েন্ট ও উত্তর কুতুবদিয়া হতে গ-ামারা পয়েন্ট পর্যন্ত এ নিষিদ্ধ বলবৎ থাকবে।
জেলাগুলো হচ্ছে- চাঁদপুর, লক্ষীপুর, নোয়াখালী, ফেণী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, শরীয়তপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা, মাদারীপুর, ফরিদপুর, রাজবাড়ি, জামালপুর, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, মাণিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, খুলনা, কুষ্টিয়া ও রাজশাহী ।
ওই সব জেলার সকল নদ-নদী ছাড়াও দেশের সমুদ্র উপকুল এবং নৌ-মোহনায় এ ২২দিন ইলিশধরা বন্ধ থাকবে। ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্র ছাড়াও দেশব্যাপী এ ২২ দিন পর্যন্ত ইলিশ আহরণ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, মজুদ ও বিনিময় নিষিদ্ধসংক্রান্ত কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে। সারা দেশের মাছঘাট, মৎস্য আড়ত, হাটবাজার ও চেইনশপে ব্যাপক অভিযান চালানো হবে।
এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে মন্ত্রণালসহ মৎস্য অধিদফতর, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ, নৌপুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলা প্রশাসন একযোগে কাজ করবে।
এ কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হচ্ছে- চিহ্নিত ইলিশ প্রজননক্ষেত্রসহ সারাদেশব্যাপি প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২২দিন ইলিশধরা নিষিদ্ধ সংক্রান্ত সরকারি বিধির বাস্তবায়ন, ২২দিন ডিমওয়ালা মাছধরা বন্ধের মাধ্যমে ইলিশ রক্ষায় গণসচেতনতা সৃষ্টি, ইলিশ প্রজনন ক্ষেত্র সম্পর্কিত গবেষণা ও সমীক্ষা কার্যক্রমের মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ,অবাধ প্রজননের সুযোগ ও ক্ষেত্র সৃষ্টির মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি করা।
এ কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকে এবং মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারণা, মাইকিং, জেলা-উপজেলাপর্যায়ে গণ উদ্বূুদ্ধকরণ সভা-সমাবেশের আয়োজন করা হবে। রেলওয়ে, ট্রলার, লঞ্চ ও ট্রাক মালিক সমিতি এবং মৎস্যজীবী সমিতির সহায়তাও গ্রহণ করা হবে।
এ সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শওকত আলী বাদশা, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাকসুদুল হাসান খানসহ অভিযানের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। (সূত্র- আমাদের সময়, সম্পাদনায়:আবদুল গনি)
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৬:২০ পিএম, ০২ অক্টোবর ২০১৬, রোববার
ডিএইচ