জাতীয়

মাস্ক না পরলে আইনানুগ ব্যবস্থা

মহামারির দ্বিতীয় ধাপ মোকাবিলায় ১৮ দফা জরুরি নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। ২৯ মার্চ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ কথা বলা হয়েছে।

সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উচ্চ সংক্রমণ যুক্ত এলাকায় সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সব ধরনের জনসমাগম (সামাজিক, রাজনৈতিক, ও ধর্মীয় অন্যান্য) সীমিত করতে হবে।

প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক পরাসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। মাস্ক না পরলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে নির্দেশনায়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এসব নির্দেশনা অনতিবিলম্বে সারাদেশে কার্যকর হবে এবং আপাতত অন্তত দুই সপ্তাহ বলবৎ থাকবে।

দেড় ডজন নির্দেশনায় আরও যা আছে

ক. সব ধরনের জনসমাগম (সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/অন্যান্য) সীমিত করতে হবে। উচ্চ সংক্রমণের এলাকায় সব ধরনের জনসমাগম নিষিদ্ধ থাকবে। বিয়ে/জন্মদিনসহ যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান উপলক্ষে জনসমাগম নিরুৎসাহিত করতে হবে

খ. মসজিদসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে

গ. পর্যটন/বিনোদন কেন্দ্র/সিনেমা হল/থিয়েটার হলে জনসমাগম সীমিত করতে হবে এবং সব ধরনের মেলা আয়োজন নিরুৎসাহিত করতে হবে

ঘ. গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং ধারণ ক্ষমতার ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রী পরিবহন করা যাবে না

ঙ. সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকির এলাকায় আন্তঃজেলা যান চলাচল সীমিত করতে হবে; প্রয়োজনে বন্ধ রাখতে হবে

চ. বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক (হোটেলে নিজ খরচে) কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে

ছ. নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য খোলা/উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেনা-বেচার ব্যবস্থা করতে হবে, ওষুধের দোকানেও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে

জ. স্বাস্থ্যসেবার প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাস্ক পরাসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে

ঝ. শপিং মলে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইর যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে হবে

ঞ. সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাদ্রাসা, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়) ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে

ট. অপ্রয়োজনীয় ঘোরাফেরা/আড্ডা বন্ধ করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাত ১০টার পর বাইরে বের হওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে

ঠ. প্রয়োজনে বাইরে গেলে মাস্ক পরাসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। মাস্ক না পরলে কিংবা স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে

ড. করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা লক্ষণযুক্ত ব্যক্তির আইসোলেশন নিশ্চিত করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তির ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা অন্যদেরও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে

ঢ. জরুরি সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব সরকারি-বেসরকারি অফিস/প্রতিষ্ঠান/ শিল্প কারখানায় পরিচালনা করতে হবে অর্ধেক জনবল দিয়ে। গর্ভবতী/ অসুস্থ/ ৫৫ বছরের বেশি বয়সী কর্মীদের বাড়িতে থেকে কাজের ব্যবস্থা করতে হবে

ণ. সভা, সেমিনার, প্রশিক্ষণ কর্মশালা যথাসম্ভব অনলাইনে আয়োজনের ব্যবস্থা করতে হবে

ত. সশরীরে উপস্থিত হতে হয়- এমন যে কোনো ধরনের গণপরীক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে

থ. হোটেল-রেঁস্তোরায় ৫০ শতাংশ আসনের বেশি মানুষ বসানো যাবে না।

দ. কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং অবস্থানকালে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

প্রসঙ্গত, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছরের ৮ মার্চ। এর ১০ দিন পর প্রথম মৃত্যু হয়। সম্প্রতি করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে। এমতাবস্থায় এসব নির্দেশনা জারি করল সরকার।

ঢাকা ব্যুরো চীফ,৩০ মার্চ ২০২১

Share