‘ক্লিন ইমেজে’র রিক্রুটিং এজেন্সি কর্মী পাঠাবে, নভেম্বরেই চুক্তি
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় বিপুলসংখ্যক কর্মী পাঠাতে খসড়া চূড়ান্ত হয়েছে। চলতি মাসের মধ্যেই উভয় দেশের মধ্যে ‘জিটুজি প্লাস’ সমঝোতা সই হবে। সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশের ক্লিন ইমেজের যে কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি দেশটিতে সব সেক্টরে কর্মী পাঠাতে পারবে। কর্মী যেতে খরচ (অভিবাসন) হবে ৪২ হাজার টাকা।
রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে ঢাকায় সফররত মালয়েশিয়া প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মঙ্গলবার দিনব্যাপী উভয় দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বৈঠকে ‘জিটুজি প্লাস’ সমঝোতা সইয়ের খসড়া চূড়ান্ত করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা এ সব তথ্য জানান।
সন্ধ্যার দিকে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসিও একই ধরনের কথা বলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ধরে নেন এখন ওপেন। ‘জিটুজি প্লাস’ পদ্ধতিতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারিভাবে সব সেক্টরে দেশটিতে কর্মী যাবে।
কারা, কীভাবে কর্মী পাঠাবে জানতে চাইলে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের (রিক্রুটিং এজেন্সি) ক্যাপাবলিটি আছে, যাদের ব্যবসার ট্র্যাক রেকর্ড (ক্লিন ইমেজ) খুব ভাল-তারাই (রিক্রুটিং এজেন্সি) কর্মী পাঠাতে পারবে। আর প্রতি কর্মীর সে দেশে যেতে অভিবাসন খরচ হবে ৪২ হাজার টাকা।’
শুধু কি ডাটাবেসভুক্তরাই মালয়েশিয়ায় যেতে পারবে নাকি অন্যরাও পারবে- এমন প্রশ্নের উত্তরে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘জিটুজি’ পদ্ধতিতে যাওয়ার জন্য ১৪ লাখ লোক রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। তাদের নিয়ে আমাদের ডাটাবেস আছে। এর বাইরে যেতে ইচ্ছুক যে কেউ রেজিস্ট্রেশন করে মালয়েশিয়ায় যেতে পারবে।
বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব কোনো কোম্পানি থাকছে কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘নো-নো’-এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
তবে বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মালয়েশিয়ায় কর্মীদের ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সেদেশের কোম্পানি সিনারফ্লাক্সই পাচ্ছে। তবে বাংলাদেশে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এটি ঠিক করবে।
মালিয়েশিয়া কর্মী পাঠাতে কবে নাগাদ সমঝোতা সই হচ্ছে- জানতে চাইলে প্রবাসী কল্যাণ সচিব ড. ইফতেখার হায়দার এ সময় সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাত্র খসড়া চূড়ান্ত হল। এটি আমাদের মন্ত্রিসভায় উঠবে। উনারা (মালয়েশিয়া) তাদের মন্ত্রিসভায় তুলবেন। আশা করছি এ মাসের মধ্যেই এ ব্যাপারে চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারব।’
এর আগে, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির নিজ কক্ষে তার সঙ্গে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেন মালয়েশিয়ার সফররত প্রতিনিধি দল। এরপর মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সারাদিন ‘জিটুজি প্লাস’ চুক্তির খসড়া চূড়ান্তে বৈঠকে বসেন উভয় দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
মালয়েশিয়া সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মহাসচিব দাতো শরিফুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ঢাকায় অবস্থিত দেশটির হাইকমিশনার নরলিন ওথম্যান ছাড়াও সেদেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে বাংলাদেশের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার ইফতেখার হায়দারের নেতৃত্বে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার শহিদুল ইসলাম, বিএমইটির ডিজি বেগম শামসুন নাহারসহ ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেন।
মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানির রূপরেখা চূড়ান্ত করতে সোমবার ঢাকায় পৌঁছেন দেশটির সরকারের পাঁচ সদস্যের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল। মঙ্গলবার রাতেই তাদের ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে। তবে মালয়েশিয়া প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের সংগঠন বায়রার কার্যনির্বাহী কমিটির নেতাদের বৈঠক হচ্ছে না।
বৈঠক সূত্রে আরও জানা যায়, সম্ভাব্য মালয়েশিয়ার এ শ্রমবাজারে বায়রার সদস্য ছাড়াও সরকারের লাইসেন্সপ্রাপ্ত যে কোনো রিক্রুটিং এজেন্সিই মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে পারবে।
চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০৯:৪০ পিএম, ০৩ নভেম্বর ২০১৫, মঙ্গলবার
এমআরআর