মার্চে হজের প্রাক-নিবন্ধন শুরু

কোটা ৫ হাজার বাড়াতে চিঠি যাচ্ছে

তেইশ ফেব্রুয়ারি হজের প্রাক-নিবন্ধন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রস্তুতিতে পিছিয়ে থাকায় এখন তা আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু করার কথা জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আব্দুল জলিল বুধবার বলেন, ‘হজের প্রাক-রেজিস্ট্রেশনের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে বৃহস্পতিবার। আমাদের অন্যান্য প্রস্তুতিও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রাক-নিবন্ধন শুরু হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ২৩ ফেব্রুয়ারি হজের প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম শুরুর কথা বলেছিলাম। এক হিসেবে আমাদের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। কার্যক্রমের অনেকগুলো দিক রয়েছে। আইটি সিস্টেম আমরা ডেভেলপ করে ফেলেছি। ২৩ ফেব্রুয়ারিই টেস্ট রান (পরীক্ষামূলক প্রাক-নিবন্ধন) হয়েছে, টেস্ট রানে আমরা উত্তীর্ণ হয়েছি।’

সংশোধিত ‘জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি-২০১৬’ অনুযায়ী এ বছর প্রথমবারের মতো হজে গমনেচ্ছুদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাক-নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। এরপর নিবন্ধন সম্পন্ন হবে।

ভারপ্রাপ্ত সচিব বলেন, ‘মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট, জাতীয় পরিচয়পত্র (যাদের বয়স ১৮ বছর বা তার বেশি), জন্মনিবন্ধন সনদ (১৮ বছরের নিচে), মোবাইল নম্বর ও ছবি দিয়ে ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র, হজ এজেন্সির অফিস, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও হজ অফিস থেকে অনলাইনে নিবন্ধন করা যাবে।’

ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, সরকারি হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে ৩০ হাজার টাকা ও বেসরকারি হজযাত্রীদের ক্ষেত্রে ৩০ হাজার ৭৫২ টাকা জমা দিয়ে প্রাক-নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে ব্যাংক একটি প্রাক-নিবন্ধন সনদ দেবে, মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমেও প্রাক-নিবন্ধনের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।

এরপর ৩০ জুনের মধ্যে হজ প্যাকেজের পুরো টাকা পরিশোধ করে নিবন্ধন করতে হবে। এ সময় অগ্রিম নিবন্ধনের ৩০ হাজার টাকা সমন্বয় করা হবে। পুরো টাকা পরিশোধের পর হজযাত্রীরা একটি পিলগ্রিম আইডি পাবেন। এ আইডি পেলেই হজে যাওয়া নিশ্চিত হয়ে যাবে।

গত ১১ জানুয়ারি হজ প্যাকেজ অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। ওই বৈঠকে ‘হজ ও ওমরাহ নীতিমালা, ২০১৬’ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্যাকেজ-১ এ হজযাত্রীদের জন্য খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লাখ ৬০ হাজার ২৮ টাকা। প্যাকেজ-২ এর খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে তিন লাখ ৪ হাজার ৯০৩ টাকা। সরকারি ও বেসরকারি সবার জন্যই এ প্যাকেজ দুটি প্রযোজ্য।

আগামী ১২ সেপ্টেম্বর (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত (চাঁদ দেখা সাপেক্ষে) হবে।

হজযাত্রীর কোটা ৫ হাজার বাড়াতে চিঠি যাচ্ছে

সচিবালয়ে নিজ দফতরে সৌদি আরবের সঙ্গে হজ চুক্তির বিষয়েও বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন ধর্ম সচিব।

তিনি বলেন, ‘গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবে আমাদের ধর্মমন্ত্রীর সঙ্গে সে দেশের হজমন্ত্রীর হজ চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী এবার বাংলাদেশে থেকে এক লাখ এক হাজার ৭৫৮ জন হজ পালন করতে পারবেন। এরমধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার বাকি ৯১ হাজার ৭৫৮ জন বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালন করতে পারবে।’

‘জনসংখ্যার ভিত্তিতে আমাদের কোটা এক লাখ ২৫ হাজারের কিছু বেশি। কিন্তু তারা যেহেতু হারাম শরীফের চতুর্দিকে বড় ধরণের নির্মাণকাজ করছে এজন্য তারা সব দেশের কোটার ২০ শতাংশ কমিয়ে দিয়েছে।’

চুক্তির সময় ধর্মমন্ত্রী আরো পাঁচ হাজার হজযাত্রী বেশি অনুমোদন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন জানিয়ে আব্দুল জলিল বলেন, ‘কিন্তু তারা রাজি হয়নি। বলেছে আপনারা দেশে গিয়ে একটি চিঠি পাঠাবেন। আমরা সরকারের কাছে চিঠিটি উপস্থাপন করবো। যদি অনুমোদন হয় তবে এ পাঁচ হাজার সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী হতে হবে।’

‘আমরা প্রস্তাবের চিঠির খসড়া প্রস্তুত করেছি। শিগগিরই এটি পাঠিয়ে দেওয়া হবে,’ বলেন সচিব।

হজমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ছাড়াও বিভিন্ন বিষয়ে আরো কয়েকটি চুক্তি হয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘হাজী সেবা সংস্থার (মোয়াচ্ছাসা) সাথে, জেদ্দা-মক্কা-মদীনায় যাওয়া আসা নিয়ে জেনারেল কার সিন্ডিকেট ও ইউনাইটেড এজেন্সির সাথে চুক্তি হয়। বাড়িভাড়া নিয়ে মদিনায় আদিল্লা অফিসের সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে।’

পৃথিবীর যেসব দেশ হাজী পাঠায় তাদের জন্য এবার সৌদি সরকার একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এবার থেকে ১৫০ জনের কম কোনো হজ এজেন্সি হজযাত্রী পাঠাতে পারবে না। আগে সর্বনিম্ন এ সংখ্যা ছিল ৫০ জন।

আইডিবি’র রশিদ ছাড়া কোরবানী নয়

সৌদি সরকার এবার কুরবানীর পুরো দায়িত্ব ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (আইডিবি) হাতে দিয়েছে জানিয়ে ধর্ম সচিব বলেন, ‘সৌদি আরব আমাদের অনুরোধ করেছে এবার আইডিবি’র রশিদ ছাড়া কেউ যাতে কোরবানীর টাকা কাউকে না দেয়। এ বিষয়ে তারা আমাদের চিঠিও দেবে। কেউ ব্যক্তিগতভাবে কোরবানী দিতে পারবে না।’

|| আপডেট: ১০:১২ অপরাহ্ন, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, বুধবার

এমআরআর

Share