মামস এক ধরণের সংক্রামক ব্যাধি যা ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। এটি খুব সহজেই আক্রান্ত ব্যক্তির লালা, নাকের নিঃসরণ এবং ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিগত সংস্পর্শের মাধ্যমে এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রাথমিক ভাবে প্যারোটিড গ্ল্যান্ড আক্রান্ত হয়। প্যারোটিড গ্ল্যান্ডকে সেলাইভারি গ্ল্যান্ড বা লালা গ্রন্থি ও বলে, যা থেকে লালা নিঃসৃত হয়। মুখের দুই পাশে ঠিক কানের নীচে লালা গ্রন্থি থাকে। জটিলতা এড়ানোর জন্য মামস এর লক্ষণগুলোর বিষয়ে ভালো ভাবে জানা উচিৎ। চলুন তাহলে জেনে নিই মামস এর লক্ষণ ও নিরাময়ের উপায়।
১। প্যারোটাইটিস
প্যারোটিড গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়াকে প্যারোটাইটিস বলে। মামস এর প্রধান লক্ষণ হচ্ছে লালা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া। এর ফলে মুখের দুই পাশের গাল ফোলা দেখায় এবং এক পাশের বা উভয় পাশের মাড়িতে ব্যথা হয়।
২। জ্বর
মামস এর সাধারণ একটি লক্ষণ হচ্ছে নিম্নমাত্রার জ্বর আসা। আস্তে আস্তে ১০৩ ডিগ্রী ফারেনহাইট এর উপরে জ্বর উঠতে পারে এবং এর সাথে সাথে গ্রন্থির ফোলাও বৃদ্ধি পায়।
৩। মাথা ব্যথা
যেহেতু লক্ষণ অনুযায়ী মামস এর চিকিৎসা হয়, তাই আপনার কী কী সমস্যা হচ্ছে তা ডাক্তারকে বলতে হবে। সে অনুযায়ী ঔষধ সেবনের পরামর্শ দেবেন ডাক্তার। মাথাব্যথাসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধানের জন্য ব্যবস্থাপত্র দেবেন চিকিৎসক।
৪। মায়ালজিয়া বা পেশীর ব্যথা
যেকোন ধরণের ভাইরাস ইনফেকশনের ফলেই পেশীতে ব্যথা হয়ে থাকে। তাই মামস ও এর ব্যতিক্রম নয়।
৫। ক্ষুধা কমে যাওয়া
মামস এ আক্রান্ত ব্যক্তি প্রায়ই ক্ষুধামন্দায় ভুগে থাকেন এবং তাদের মুখের ভেতরে ফুলে যায় বলে খেতে ও ঢোক গিলতে সমস্যা হয়।
৬। ম্যালাইজ বা অসুস্থতাবোধ
মামস এ আক্রান্ত ব্যক্তি অসুস্থ ও ক্লান্ত অনুভব করে। ব্যথার কারণে কথা বলতেও সমস্যা হয়।
চিকিৎসা :
যেহেতু মামস ভাইরাস জনিত রোগ তাই অ্যান্টিবায়োটিক বা অন্য কোন ঔষধে এর কোন উপকার হয়না। তাই আপনার অস্বস্তি দূর করার জন্য এবং উপসর্গের তীব্রতা কমানোর জন্য যা করার পরামর্শ দেবেন আপনার চিকিৎসক তা হল :
– ক্লান্ত লাগলে বিশ্রাম নিন
– জ্বর ও ব্যথা কমানোর জন্য অ্যাসিটামিনোফেন ও ইবোপ্রুফেন সেবন করতে পারেন
– গ্রন্থির ফোলা প্রশমিত করার জন্য আইস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন
– জ্বরের কারণে ডিহাইড্রেশন যেন না হয় সেজন্য তরল খাবার খান
– অ্যাসিডিক খাদ্য ও পানীয় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। না হলে লালা গ্রন্থির ব্যথা আরো বৃদ্ধি পাবে
মামস কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। মামস জটিল আকার ধারণ করাটা খুবই বিরল। কিন্তু যদি চিকিৎসা করা না হয় তাহলে তা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।
টিকার মাধ্যমে মামস প্রতিরোধ করা যায়। বেশীর ভাগ শিশুকেই ১২-১৫ মাস বয়সে মামস এর প্রথম টিকা দেয়া হয়। শিশুর ৪-৬ বছর বয়সে দ্বিতীয় টিকা দেয়া হয়। যারা ১৯৫৭ সালের পূর্বে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং মামস এ আক্রান্ত হননি তারা টিকা নিয়ে নিতে পারেন। এ বিষয়ে আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন।
লিখেছেন-সাবেরা খাতুন
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০১:১৭ পি,এম ২২ আগস্ট ২০১৬,সোমবার
ইব্রাহীম জুয়েল