বন্যায় দেশের ৩৩ জেলার ৫০ লাখেরও বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এটি দেশের মোট জনসংখ্যার ৭ দশমিক ১ শতাংশ। এবারের বন্যায় ৪২ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ শস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ৭৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সমপরিমাণ গবাধিপশু, ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৪৯ হেক্টর কৃষিজমিও ক্ষতি হয়েছে।
১৯ আগস্ট বুধবার বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) উদ্যোগে ‘সাম্প্রতিক বন্যা: ক্ষয়ক্ষতি এবং করণীয়’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সংলাপে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এতে মূল প্রতিবেদন তুলে ধরেন সিপিডিরি সিনিয়র রিচার্স অ্যাসোসিয়েট কামরুজ্জামান।
সিপিডির সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন- দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুল রহমান। সিপিডি‘র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনের উপস্থাপনায় এতে সভাপতিত্ব করেন সিপিডি‘র চেয়ারমম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। আরও বক্তব্য রাখেন- পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত, সিপিডির সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদাকে চৌধুরী, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোতাহার হোসেন প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুল রহমান বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সহযোগিতায় সরকার সবধরনের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বন্যায় মানুষের মাঝে খাদ্য ও নগদ সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়াও হেল্পলাইন খোলা হয়েছে, যাতে করে যেকোনো মানুষ প্রয়োজনে ত্রাণ সহায়তা পেতে পারেন।’
তিনি বলেন, ‘বন্যায় ত্রাণ বিতরণে কোনো ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষদের সবধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। কেউ ত্রাণ পাচ্ছে না- এই কথা মোটেও সঠিক না।’
সিপিডিরি প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের বন্যা ৩৫ দিনের বেশি সময় ধরে চলমান রযেছে। ফলে পুরো ক্ষয়ক্ষতির হিসাব এখনও পাওয়া যাযনি। তবে যতটুকু পাওয়া গেছে তাতে দেখা গেছে, ৪২ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ শস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ৭৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সমপরিমাণ গবাধিপশু, ১ লাখ ২৫ হাজার ৫৪৯ হেক্টর কৃষিজমিও ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি ১৬ হাজার ৫৩৭ হেক্টার জমির গাছপালা, ৮১ হাজার ১৭৯টি টিউবওয়েল এবং ৭৩ হাজার ৩৪৩টি ল্যাটিন এবং ১ হাজার ৯০০ এর বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘এবারের বন্যা স্থায়িত্বের দিক থেকে ১৯৮৮ এবং ২০০৪ সালের বন্যার মতো। এই বন্যায় ৩৩টি জেলার ৫০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মধ্যে জামালপুর চাঁদপুর, লালমনিরহাট ও সিরাজগঞ্জ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তা যে খাদ্য ও নগদ সহায়তা দিচ্ছেন তা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাই সরকারি সহায়তার পরিমাণ বাড়াতে হবে।’
ঢাকা ব্যুরো চীফ, ‘১
৯ আগস্ট ২০২০