সাক্ষাৎকার-৪ (মেডিকেল টেকনোলজিস্ট)
মিজানুর রহমান রানা : | আপডেট: ০৮:১৫ অপরাহ্ণ, ২৯ আগস্ট ২০১৫, শনিবার
মো. সিরাজুল ইসলাম পেশায় একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব)। তিনি চাঁদপুর আড়াইশ’ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের রক্ত পরিসঞ্চালন বিভাগে কাজ করেন।
আচার-ব্যবহার কর্মে তিনি অমায়িক। সদা হাস্যোজ্জ্বল চিরতরুণ এই মানুষটি কাজ করেন কর্তব্যনিষ্ঠভাবে। চাঁদপুর সদর হাসপাতালে জরুরি কোনো রোগীর জন্যে রক্তের প্রয়োজন হলে এ বিভাগে লোকজন দ্রুত চলে আসে। তিনি মানুষকে অভয় দেন এবং এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে দ্রুত পদক্ষেপ নেন।
চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালের এ বিভাগে দীর্ঘদিন ধরে চাঁদপুরে তিনি সাধারণ মানুষকে সেবা দিয়ে আসছেন।
গুণী এই মানুষকে নিয়ে চাঁদপুর টাইমসের বিশেষ আয়োজন পাঠকের জন্যে প্রকাশ করা হলো।
চাঁদপুর টাইমস : আপনার বর্তমান পেশা কী? এ পেশায় আগ্রহী হলেন কেনো?
মো. সিরাজুল ইসলাম : আমার বর্তমান পেশা চিকিৎসাপ্রযুক্তি। রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে মানুষের সেবা করা যায়।
চাঁদপুর টাইমস : আপনি কীভাবে, কখন এ পেশায় কাজ শুরু করেছিলেন?
মো. সিরাজুল ইসলাম : ১৯৮৮ সালে চিকিৎসাপ্রযুক্তির ওপর তিন বছরে ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করে এ পেশায় ১৯৯০ সালে কাজ শুরু করি।
চাঁদপুর টাইমস : একজন পেশাজীবী মানুষ তার কর্মের মাধ্যমে সমাজে কী অবদান রাখতে পারে?
মো. সিরাজুল ইসলাম : একজন পেশাজীবী যে কোনো কাজের মাধ্যমে মানুষের সেবা করতে পারে। বিশেষ করে আমার কাজের মাধ্যমে মানুষের খুব কাছে যাওয়া যায়।
এই পেশায় আসার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন কারা?
মো. সিরাজুল ইসলাম : বন্ধু ও এলাকার বড় ভাই।
চাঁদপুর টাইমস : বাংলাদেশ অথবা আন্তর্জাতিকভাবে এ পেশার মূল্যায়ণ কতটুকু? আপনি এ পেশায় থেকে কীভাবে মানুষের দুয়ারে সেবা কীভাবে পৌঁছে দিয়েছেন?
মো. সিরাজুল ইসলাম : সরকারি পর্যায়ে এ কাজের মূল্যায়ন অনেক কম। কিন্তু মানুষের কাছে ও আন্তর্জাতিকভাবে এ কাজের অনেক মূল্যায়ণ।
চাঁদপুর টাইমস : আপনার পেশা কি একটি চ্যালেঞ্জ, অথবা নতুন করে সমাজ বিনির্মাণের কোনো মাধ্যম হতে পারে?
মো. সিরাজুল ইসলাম : এটি একটি জ্ঞাননির্ভর ও চ্যালেঞ্জিং পেশা। সমাজ বা মানুষের কল্যাণে এ পেশা অবদান রাখতে পারে।
চাঁদপুর টাইমস : একজন পেশাজীবীকে কী কী ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়?
মো. সিরাজুল ইসলাম : কর্মক্ষেত্রে সুশৃঙ্খল পরিবেশ না থাকলে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়।
চাঁদপুর টাইমস : আপনার পেশর ক্ষেত্রে সফল হওয়ার উপায় কী?
মো. সিরাজুল ইসলাম : জ্ঞান অর্জন, প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট ও সততা থাকলে সফল হওয়া যায়।
চাঁদপুর টাইমস : আপনার দৃষ্টিতে একজন ভালো মানুষের মূল্যায়ন কী হওয়া প্রয়োজন?
মো. সিরাজুল ইসলাম : শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা দিয়েই মূল্যায়ন করা যায়।
চাঁদপুর টাইমস : এ পেশায় আসার জন্যে আগ্রহী নতুনদের জন্যে আপনার পরামর্শ।
মো. সিরাজুল ইসলাম : জ্ঞান অর্জন, সততা ও রোগীকে মেহমান হিসেবে দেখা।
চাঁদপুর টাইমস : শিক্ষাজীবন, কর্মজীবন, জীবনের উল্লেখযোগ্য স্মরণীয় ঘটনা।
মো. সিরাজুল ইসলাম : টেকনাফ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চাকুরিকালীন সময়ে একই পরিবারের চারজন সিভিয়ার ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া।
চাঁদপুর টাইমস : মানুষের জীবনটা কি শুধুই অর্থ উপার্জনের মাধ্যম? নাকি মানুষের জন্যে আরো মহৎ কর্ম করার সুযোগ আছে?
মো. সিরাজুল ইসলাম : অর্থই অনর্থের মূল। সুন্দর ও স্বাচ্ছন্দে চলার জন্যে যে অর্থের প্রয়োজন, তাই যথেষ্ট। মানুষের সেবার মধ্যে দিয়েই মহৎ কর্মের সুযোগ আছে।
চাঁদপুর টাইমস : একজন সাধারণ মানুষ, সমাজ, জাতি, দেশের কল্যাণে কতটুকু কাজ করতে পারে?
মো. সিরাজুল ইসলাম : যার যার অবস্থানে থেকে নিজের কাজটি সততা ও নিষ্ঠার সাথে করলে দেশের তথা সমাজের অনেক উন্নতি হবে।
চাঁদপুর টাইমস : একজন পেশাজীবীর আদর্শগত দিক কী কী হওয়া উচিত?
মো. সিরাজুল ইসলাম : নিজ দায়িত্বের প্রতি যতœবান হওয়া এবং সততা বজায় রাখা।
চাঁদপুর টাইমস : পেশাজীবী, সাংবাদিকতা, চিকিৎসেবা, আইনপেশা ও সাহিত্য চর্চা এ পেশাগুলোর মধ্যে সামঞ্জস্য, পার্থক্য ও সমন্বয় কতটুকু সম্ভব? একটি পেশা কি অন্যটির পরিপূরক?
মো. সিরাজুল ইসলাম : প্রত্যেকটি পেশা সমাজের জন্যে কল্যাণকর। প্রত্যেকটি পেশাই একে অন্যের পরিপূরক।
আপনার জীবনের দুঃখ, কষ্ট, পাওয়া না পাওয়া, প্রাপ্তি ও হতাশার কথা বলুন।
মো. সিরাজুল ইসলাম : বড় কষ্ট ছোটবেলায় মা-বাবাকে হারিয়েছি। কোনো দুঃখ নেই। না পাওয়ার কষ্ট নেই। এখনও ভালো আছি। কাউকে কখনও কষ্ট বা দুঃখ দেইনি। বাকি আল্লাহর ইচ্ছা।
অন্যান্য তথ্যাবলী :
পুরো নাম : মো. সিরাজুল ইসলাম
পিতার নাম : মৃত আবদুর রহমান বেপারী
মাতার নাম : মৃত ছাবিহা বেগম
পরিবারের সদস্য সংখ্যা : দু’কন্যা।
স্থায়ী ঠিকানা:
গ্রাম : তপাদারপাড়া
পো. ফরাজীকান্দি
উপজেলা : মতলব উত্তর
জেলা : চাঁদপুর।
মুঠোফোন : ০১৯১৪৬৮৭৭৫৮
বর্তমান ঠিকানা :
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট
২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতাল
চাঁদপুর।
চাঁদপুর টাইমস : এমআরআর/২০১৫