মানবিক কাজের জন্য পুরস্কৃত হলেন বাংলাদেশ পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শবনম সুলতানা।
৭ মে, সোমবার পুলিশ সদর দফতরে এসআই শবনম সুলতানার হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
গত ২২ এপ্রিল দুপুরে রাজধানীর মহাখালী ফ্লাইওভারের নিচে আজিমপুর-গাজীপুর রুটে চলাচলকারী ভিআইপি পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সামনে থাকা কয়েকটি গাড়িকে প্রচণ্ড বেগে ধাক্কা দেয়। এতে অন্তত ৮-১০টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
আর এই দুর্ঘটনায় আহত হয় বেশ কয়েকজন। দুর্ঘটনার সময় আহতদের আর্তনাদে মন গলেনি প্রত্যক্ষদর্শীদের। কেউ সাহায্য করতেও এগিয়ে আসেননি।
কিন্তু খবর পেয়েই ছুটে আসেন তেজগাঁও থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শবনম সুলতানা পপি। চালক না থাকায় তিনি নিজেই ব্রেকহীন গাড়িটি চালিয়ে নিরাপদে সরিয়ে রাস্তার যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।
শবনম সুলতানা সেদিন কেবল গাড়ি চালিয়ে নিরাপদে সরিয়ে রাখেননি, ওই দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে আহত একটি ছেলের কাছে ছুটে যান তিনি। নিজেই ছেলেটির পায়ে বরফ লাগিয়ে দেন এবং ছেলেটিকে ধরে হাঁটানোর চেষ্টা করেন। আর সেই সময় তোলা কিছু ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। এই মানবিক কাজের জন্যই পুরস্কার পেলেন তিনি।
পুরস্কার প্রদানকালে আইজিপি বলেন, ‘এই সকল স্বপ্রণোদিত মানবিক কার্যক্রম বাংলাদেশ পুলিশকে দেশবাসীর কাছে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরবে। শবনম সুলতানা নিজ উদ্যোগে এবং দক্ষতার সঙ্গে দ্রুততম সময়ে দুর্ঘটনাকবলিত পিকআপ ভ্যানের ড্রাইভারকে উদ্ধারসহ ট্রাফিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার কাজে যে নৈপুণ্য দেখিয়েছেন, তা অনন্য প্রশংসার দাবিদার। নিজ হাতে আহত ড্রাইভারকে প্রাথমিক সেবার মাধ্যমে পুলিশের মানবিক সেবার অনবদ্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন।’
পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি, মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আইজিপি তার এই সেবামূলক কাজের কৃতিত্ব সার্ভিস বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেন বলে জানান তিনি।
সহেলী আরও জানান, এসআই শবনম সুলতানা বর্তমানে তেজগাঁও থানায় কর্মরত। দায়িত্ব পালনকালে ২২ এপ্রিল রাজধানীর শাহীনবাগ এলাকায় সিভিল এভিয়েশন স্কুলের সামনে গাড়ি দুর্ঘটনার সংবাদে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুর্ঘটনাকবলিত পিকআপ ভ্যানের ড্রাইভারকে উদ্ধার করেন এবং একটি ব্রেকবিহীন গাড়ি চালিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। ওই সময় তিনি আহত ব্যক্তির পায়ে ব্যান্ডেজ করেন।
শবনমের এই মানবিক উদ্যোগ নাড়া দিয়েছে সবার মনে। এক ব্যক্তি এই ঘটনার কিছু ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করে ফেসবুকে পোস্ট করেন। এর পরেই এই ছবিগুলো ভাইরাল হয়ে যায়। এরই ধারবাহিকতায় বেশ কিছু গণমাধ্যমে তাকে নিয়ে সংবাদও প্রচার হয়। (প্রিয়.কম)
বার্তা কক্ষ