মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর অত্যাচার-নিপীড়ন ও সহিংসতার ভয়ংকর সব সাক্ষ্য প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ।
রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা এক নারী জাতিসংঘের তদন্ত কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, তাঁকে যখন ধর্ষণের চেষ্টা করা হচ্ছিল, তখন তাঁর পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে এসে রক্ষা করার চেষ্টা করে। এ সময় হামলাকারীদের একজন তাঁর মেয়েকে ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।
এ ধরনের আরও ভয়ংকর সব ঘটনার সাক্ষ্যপ্রমাণ জোগাড় করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের কর্মকর্তারা। তাঁরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসা দুই শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলিমের সঙ্গে কথা বলেছেন।
শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশ করা এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তর বলেছে, রাখাইনে যা ঘটছে তা সম্ভবত মানবতাবিরোধী অপরাধ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। সাক্ষ্যদানকারী রোহিঙ্গারা সেখানে হত্যা, ধর্ষণ এবং এ ধরনের অনেক সহিংসতা প্রত্যক্ষ করেছে। অর্ধেকের বেশি নারী বলেছেন তাঁরা ধর্ষণ বা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন।
সাক্ষ্যদানকারী রোহিঙ্গারা আরও জানিয়েছেন সেখানে অনেক রোহিঙ্গা পরিবারের সবাইকে তাদের বাড়িতে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের স্কুল, মসজিদ, ক্ষেতের ফসল এবং গবাদিপশু। এসব সহিংসতা হয়েছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী রাখাইন রাজ্যে এক বিরাট দমন অভিযান শুরু করার পর। এক হামলায় তিনটি সীমান্ত ফাঁড়িতে ৯ জন পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর এ অভিযান শুরু হয়।
অবশ্য বরাবরই কোন ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা অস্বীকার করছে মিয়ানমার। কিন্তু জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলছেন, যে সাক্ষ্য প্রমাণ তাঁরা পেয়েছেন, তাতে তাঁদের মনে হচ্ছে রাখাইনে যা ঘটছে তা সম্ভবত মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং এর দায়িত্ব মিয়ানমারকে নিতে হবে।
নিউজ ডেস্ক
।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ০৬ : ৫৯ পিএম, ০৩ফেব্রুয়ারি ২০১৭ শুক্রবার
এইউ