সারাদেশ

মাদ্রাসা সুপারের মাথায় মল ঢেলে উল্লাস, ফেসবুকে তোলপাড়

বরিশালে বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া ইসলামিয়া দারুসসুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবু হানিফার (৫০) মাথায় মল ঢেলে অপদস্থ করে উল্লাস করার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মিনজু ও বাদল নামে ২ জনকে রবিবার দিবাগত রাতে বাকেরগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে রাতভর বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।

গ্রেফতারদের মধ্যে মিনজু (৪৫) বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১২ নং রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঠালিয়া গ্রামের মৃত মো. হাসেম মুসল্লির ছেলে এবং দায়েরকৃত মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি। অপরদিকে বেল্লাল (২৫) বাকেরগঞ্জ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নূর মোহাম্মদের ছেলে। তাকে ফেসবুকে প্রকাশিত লাঞ্ছনারর ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেফতার করা হয়।

জানা যায়, ইসলামিয়া দারুসসুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে এক প্রার্থীর পক্ষাবলম্বনের অভিযোগে শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আবু হানিফা মসজিদ থেকে বের হলে তার মাথায় মলমূত্র ঢেলে দেয় পরাজিত প্রতিদ্বন্দ্বী জাহাঙ্গীর খন্দকার ও তার সহযোগীরা। এসময় মলমূত্র ঢেলে তারা উল্লাস করে। এ ঘটনায় রবিবার আবু হানিফা বাকেরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অপদস্থ হওয়া আবু হানিফা ওই এলাকার মৃত ক্বারী আরশেদ হাওলাদারের ছেলে।

অভিযুক্তরা অন্যরা হলেন হলো জাহাঙ্গীর খন্দকার, আবু হানিফার ছোট ভাই জাকির হোসেন জাকারিয়া, মো. মাসুম সরদার, মো. এনামুল হাওলাদার, মো. রেজাউল খান, সোহেল খন্দকার ও মিরাজ হোসেন। এরা সকলেই ওই এলাকার বাসিন্দা।

আবু হানিফা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাঠালিয়া ইসলামিয় দারুসসুন্নাহ দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন হয়। আবু হানিফা সভাপতি প্রার্থী এইচ এম মজিবর রহমানের পক্ষ নেন। নির্বাচনে মজিবর রহমান বিজয়ী হলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাহাঙ্গীর খন্দকার আবু হানিফার উপর ক্ষুব্ধ হন। এরপর থেকেই তাকে বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিলো জাহাঙ্গীর খন্দকার ও তার সহযোগীরা। এর জের ধরে গত শুক্রবার ফজরের নামাজের পর আবু হানিফা মসজিদ থেকে বের হলে অভিযুক্তরা তার পথরোধ করে। বাদানুবাদের এক পর্যায়ে অভিযুক্তদের একজন তার হাত ধরে এবং অপর একজন তার মাথায় মল ঢেলে দেয়। এরপর একজন সেই মল আবার মাথায় ভালো করে মাখিয়ে দেয়। এ সময় তারা উল্লাসে মেতে ওঠে। পরে এই দৃশ্য মুঠোফোনে ধারন করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হয়। এতে চারিদিকে হৈ-চৈ পড়ে যায়।

রঙ্গশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বশির উদ্দিন জানান, তিনি বিলম্বে বিষয়টি শুনেছেন। সমাজের সন্মানীত পেশার একজন ব্যক্তিকে এভাবে কেউ অপমানিত করতে পারে তা ভাবতেও ঘৃনা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

বাকেরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল হক জানান, মাদ্রাসা সুপার আবু হানিফা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরসহ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করার চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।

ভিডিও

Share