ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, হবিগঞ্জ । আপডেট: ০৩:৩৭ অপরাহ্ণ, ২৮ জুলাই ২০১৫, মঙ্গলবার
কিশোরগঞ্জের ছয় শিশুকে মাদ্রাসায় পড়ানোর কথা বলে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামায় পাচারকারীরা। পুলিশ ওই ছয় শিশুকে উদ্ধার করেছে। পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে রাসেল মিয়া (২৫) নামে এক যুবককে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) দুপুরে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে ছয় শিশুর উপস্থিতিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র।
উদ্ধার শিশুরা হলো- কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলার সেকেন্দারনগর গ্রামের মালিপাড়া এলাকার কালা মিয়ার ছেলে সোহাদ (১০), একই গ্রামের গিরিপাড়ার আলো মিয়ার ছেলে জুয়েল (১১), ভোরগাঁওয়ের কাঞ্চন মিয়ার ছেলে জুনায়েদ (১৬), কুড়েরপাড় এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে নাঈম (৯), সেকেন্দারনগর গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে রেজাউল (১২) এবং বজেন্দ্রপুর গ্রামের তাহের মিয়ার ছেলে বরুজ মিয়া (১৩)।
আটক রাসেল হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ফুলতলী এলাকার আব্দুল অদুদের ছেলে। তিনি শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ এলাকার এসআর আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার।
প্রেস ব্রিফিং এ পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র জানান, কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল উপজেলার সেকেন্দারনগর গ্রামের শহীদ মিয়া (৪০) ও সৈয়দ হিরু মিয়ার ছেলে এমরান (৩৫) ওই ছয় শিশুকে মাদ্রাসায় পড়ানোর কথা বলে প্রায় এক বছর আগে শায়েস্তাগঞ্জে নিয়ে আসেন। পরে, শায়েস্তাগঞ্জের এসআর হোটেলে রেখে মারধর করে ভিক্ষাবৃত্তিতে নামানো হয়।
প্রতিদিন ফজরের নামাজের পর ওই শিশুরা মাদ্রাসার ড্রেস পড়ে জেলার বিভিন্ন স্থানে ভিক্ষা করে। ভিক্ষার স্থান ও এলাকা ভাগ করে গাড়িতে করে নামিয়ে দিয়ে আসেন শহীদ ও এমরান। দিনভর ভিক্ষা শেষে আবারো নির্দিষ্ট স্থান থেকে তাদের গাড়িতে করে তুলে নিয়ে আসা হয়।
দিন শেষে প্রত্যেক শিশু ৩/৪শ টাকা পাচারকারীদের হাতে তুলে দেয়। ভিক্ষার টাকা কম হলে শিশুদের মারধর করা হয়।
সোমবার সকালে বাহুবল উপজেলার কালুটোলা গ্রামের মক্তবের কাছে ভিক্ষা করতে যায় শিশু সোহাদ, জুয়েল ও জুনায়েদ। বিষয়টি স্থানীয় মাওলানা ফারুকের সন্দেহ হলে তিনি তাদের আটক করে থানায় খবর দেন।
পরে, পুলিশ তিন শিশুকে উদ্ধার করে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রাতে শায়েস্তাগঞ্জ এস আর হোটেলে অভিযান চালিয়ে আরও তিন শিশুকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় হোটেল ম্যানেজার রাসেলকে আটক করা হয়।
এ ঘটনায় বাহুবল মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ আল-মামুন বাদী হয়ে চার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
উদ্ধার শিশু সোহাদ জানান, সে প্রতিদিন ৩/৪শ টাকা ভিক্ষা করে পাচারকারী শহীদ ও এমরানের হাতে তুলে দিত। টাকা কম হলে তাদের মারপিট করা হতো।
চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫
চাঁদপুর টাইমস ডট কম–এ প্রকাশিত/প্রচারিত সংবাদ, আলোকচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও বিনা অনুমতিতে ব্যবহার করা বেআইনি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur