মাতবরদের কথায় হিল্লা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় গৃহবধূকে পাশবিক নির্যাতন

বগুড়ার নন্দীগ্রামের বাঁশো গ্রামে হিল্লা বিয়েতে রাজি না হওয়ায় লাইলী বেগম নামে এক গৃহবধূকে পাশবিক নির্যাতন করে গ্রামছাড়া করেছেন মাতবররা। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

এলাকাবাসী জানান, নন্দীগ্রাম উপজেলার বাঁশো গ্রামের আহসান আলীর ছেলে দিনমজুর আবদুল মজিদ প্রায় ১৮ বছর আগে জামালপুর গ্রামের লাইলী বেগমকে বিয়ে করেন। দাম্পত্য কলহে দুই সন্তানের মা লাইলী গত বছরের ৭ ডিসেম্বর মজিদকে তালাক দেন। এরপর একই গ্রামের মৃত নবাব আলীর ছেলে শামসুর রহমান তাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন।

গত ১ ফেব্রুয়ারি তিনি দ্বিতীয় স্বামী শামসুর রহমানকে তালাক দিয়ে প্রথম স্বামী মজিদের বাড়িতে গিয়ে তাকে বিয়ে করেন। হিল্লা বিয়ে না করেই আগের স্বামীকে বিয়ে করার অভিযোগ তুলে গ্রামের মাতবররা ক্ষুব্ধ হন। পরদিন মাতব্বর আলমের বাড়ির উঠানে সালিশে বসেন মাতবর তৈয়ব আলী, জাহিদুল, আশরাফুল, দুদু মিয়া, সোবহান, রুহুল আমীন, মজনু মিয়া, মোস্তফা, ফরিদ, মমিন প্রমুখ।

সেখানে সমাজে উঠতে লাইলীকে হিল্লা বিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু রাজি না হওয়ায় মাতবররা লাইলী বেগম ও মজিদকে সমাজচ্যুত করেন। পরদিন দরিদ্র আবদুল মজিদ মাতবরদের কাছে ক্ষমা চান ও স্ত্রী লাইলীকে অন্যত্র রাখার কথা দিলে তাকে চাষাবাদ করার অনুমতি দেয়া হয়। এরপর থেকে গৃহবধু লাইলী বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহারে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আছেন।

আশরাফুল ইসলাম নামে এক মাতব্বর জানান, গ্রামে সালিশ ডেকে সামাজিক কারণে ওই গৃহবধূকে তিন মাস ১৩ দিন সময় পার করে তারপর সংসার করতে বলা হয়েছে। তাকে গ্রামছাড়া করা হয়নি। নন্দীগ্রাম থানার ওসি হাসান শামীম ইকবালও জানান, শালিসে কোন গৃহবধূকে গ্রামছাড়া করা হয়নি। সে স্বেচ্ছায় অন্যত্র আছে।

নিউজ ডেস্ক || আপডেট: ০২:১৪ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, শুক্রবার

এমআরআর  

Share