মাছ, মাংস, সবজি: কোনোটিতেই স্বস্তি মিলছে না

মাছ, মাংস, সবজি—কোনোটিতেই স্বস্তি মিলছে না। কখনো খরা, কখনো বৃষ্টি কিংবা অপর্যাপ্ত আমদানির অজুহাতে প্রায় প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। কার্তিক না আসতেই শীতের সবজিতে ভরে গেছে বাজার। তবে সব সবজিরই দাম আশি টাকার বেশি। ইলিশের অনুপস্থিতির অজুহাতে অন্যান্য মাছের দাম বেড়েছে। অন্যদিকে সরকারের বেঁধে দেওয়া দরের প্রতি বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে আলু, পেঁয়াজ ও ডিম। সব পণ্যের বাড়তি দামে চরম অস্বস্তিতে পড়ছেন মধ্য ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর রামপুরা, মেরাদিয়া ও মোহাম্মদপুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি শিম ও কাঁচা মরিচ ২০০, করলা ১০০-১২০, বরবটি ১০০-১২০, বেগুন ১০০-১৩০, শসা ৮০-৯০, পটোল ও ঢ্যাঁড়স ৮০-৯০, গাজর ১২০-১৩০, টমেটো ১০০-১৩০ এবং মুলা ৮০-৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কেবল পেঁপে ৪০ টাকা আর আলু ৫০-৫৫ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। লাউ বিক্রি হয় প্রতিটি ১০০ টাকায়।

রামপুরা বাজারে মামা-ভাগনে সবজি ভান্ডারে করলা, টমেটো, বরবটি, বেগুন, মুলা, আলুসহ বেশ কিছু সবজি কেনেন তারিকুল ইসলাম। দাম পরিশোধ করতে গিয়ে তিনি শোনেন ১ হাজার ২০ টাকা। বেসরকারি এই চাকরিজীবী বলেন, ‘আগে এক হাজার টাকায় মাছ মাংস
কিনে বাসায় যেতাম। আর এখন সবজি কিনতেই এক হাজার টাকা শেষ!’  

মোহাম্মদপুর বাজারের সবজিবিক্রেতা সাহিনুল ইসলাম বলেন, বাজারে সবজির আমদানি কম। তাই দাম বেশি। আরও কয়েকজন সবজি ব্যবসায়ী জানান, উত্তরবঙ্গে টানা বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি পচে গেছে। এক সপ্তাহ থেকে বাজারে সবজি কম আসছে। তাই সব সবজিরই দাম বেশি। শীত শুরু হলে সবজির দাম কমবে।

প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষার্থে ১১ অক্টোবর থেকে ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ আছে। বাজারে ইলিশ না থাকার অজুহাতে অন্যান্য মাছের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০-৫০ টাকা। রামপুরা বাজারের মাছবিক্রেতা নাসির উদ্দিন জানান, ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার কারণে সমুদ্রে জেলেরা জাল ফেলতে পারছেন না। ফলে বাজারে পোয়া, লইট্টাসহ সামুদ্রিক মাছের আমদানি কমে গেছে। এ সপ্তাহে মাছের দাম আরও বাড়তে পারে।

গতকাল বাজারে রুই ৩৫০-৪৫০, তেলাপিয়া ২৬০-২৯০, পাঙাশ ২৪০-২৫০, পাবদা ৪৫০-৬০০, কই ২৮০-৩৫০, কাতল ৩০০-৫০০, শিং ৫৫০, রুপচাঁদা ১ হাজার এবং বাটা ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

সরকার পেঁয়াজ, ডিম ও আলুর দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পর প্রায় এক মাসেও বাজারে এর প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিম সর্বোচ্চ ১২ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৩৬ এবং দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা দরে বিক্রি হওয়ার কথা। কিন্তু বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি ডজন ডিম ১৬০ টাকা, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৯৫-১০০ এবং আলু ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয় কেজিপ্রতি ২০০ টাকা, সোনালিকা ৩৩০-৩৪০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৬০০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৮০-৮২০, খাসি ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।

টাইমস ডেস্ক/১৪ অক্টোবর ২০২৩

Share