চাঁদপুর-৩ সহ ৫০টি বা তার কমবেশি আসনে ‘টোকেন’ মামলা করবে বিএনপি।একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল চেয়ে হাইকোর্টের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করার কথা জানিয়েছিল বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দলগুলো।
২৯৮ আসনেই অংশ নেওয়া প্রার্থীরা আলাদাভাবে এ মামলা করবেন বলে জানানো হয়েছিল। কিন্তু সে পদক্ষেপ থেকে সরে এসেছে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সব আসনে মামলা না করে তারা ‘টোকেন’ হিসেবে কয়েকটি আসনে মামলা করতে পারে। সেটা ৫০টি বা তার কমবেশি আসনে হতে পারে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে থাকা চারটি দল গণফোরাম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ও নাগরিক ঐক্যের বেশির ভাগ প্রার্থীই মামলা করছেন। আর বিএনপির যেসব প্রার্থীর তথ্য-প্রমাণ বেশি থাকবে তাঁদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে বলে দেওয়া হবে মামলা করতে।
সব আসনে মামলা না করার প্রসঙ্গে সূত্রগুলো বলছে, আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনের অন্যসব অংশের পাশাপাশি আদালতকেও সরকার তাদের অধীনে কাজ করতে বাধ্য করছে বলে মনে করছে বিএনপি। তাই ট্রাইব্যুনালে মামলা করলে তার ফলাফল কী হবে—সেটা তারা আগেই বুঝতে পারছে। সে ক্ষেত্রে রেকর্ডে রাখার জন্যই তারা এই ‘টোকেন’ মামলা করবে।
বিএনপির গুলশান ও নয়াপল্টনের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা-৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩, চাঁদপুর-৩(সদর-হাইমচর), ঢাকা-৪, ঢাকা-১১, সিরাজগঞ্জ-৫সহ দেশের অর্ধশতাধিক আসনে যেগুলোতে ব্যাপক কারচুপি ও প্রার্থীর ওপর হামলার মতো ঘটনা ঘটেছে সেসব আসনের প্রার্থীরা নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে পারেন।
জানতে চাইলে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেন, “সব আসনে মামলা করার যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল তা নাও হতে পারে। আমরা কয়েকটি আসনে, বলতে পারেন ‘টোকেন’ হিসেবে কয়েকটি আসনে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে এটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়। আরেকটু সময় নিয়ে আমরা এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানাব।’
গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘এই মামলাগুলো আলাদাভাবে করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। আমি আমার মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার মামলা দু-এক দিনের মধ্যেই করে ফেলব।’
‘টোকেন’ মামলা করার যে বিষয়টি শোনা যাচ্ছে সে ব্যাপারে সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘এটি আরেকটি সিদ্ধান্ত (বিএনপি নিতে পারে) হতে পারে। সেটি সম্পর্কে এখনো আমি অবগত নই।’
নির্বাচনী ফলাফলের গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে হাইকোর্টের নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে হয়। ২ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮ আসনের ফলাফলের গেজেট জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে পাঠানো হয়। আর ৩ জানুয়ারি নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের শপথ অনুষ্ঠিত হয়। এ হিসাবে এ মাসের বাকি সময়ের মধ্যে মামলা করতে হবে।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ‘তিন কমিটিই তথ্য জোগাড়ের কাজটি প্রায় ৯০ শতাংশ শেষ করেছে। এটি কেন্দ্রীয় দপ্তরে রয়েছে। এখন সব আসনে মামলা করা বা না করার বিষয়ে অনেক ধরনের মত রয়েছে। মামলা না করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত অনেকটা নেতিবাচক। তবে সেটি দলীয় ফোরামে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’ (কালের কন্ঠ)
বার্তা কক্ষ
২৫ জানুয়ারি,২০১৯