‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ’-গানটির প্রেক্ষাপট

বাঙালি মুসলিমদের অন্যতম ধর্মীয় ও আনন্দের উৎসব ঈদুল ফিতর নিয়ে বাঙালি কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত একটি কালজয়ী গান। ঈদের আনন্দ, সৌন্দর্য এবং আধ্যাত্মিক দিক তুলে ধরা হয়েছে এ গানে। গানটি বাঙালি মুসলিম সমাজে ঈদের আবহ গান হিসেবে পরিচিত এবং বাঙালির ঈদ আনন্দের এক আবশ্যকীয় অংশ হয়ে উঠেছে।

কাজী নজরুল ইসলামের শিষ্য শিল্পী আব্বাস উদ্দিন আহমদ-এর অনুরোধে ১৯৩১ সালে কবি নজরুল এ গান রচনা ও সুরারোপ করেন। গানটি প্রথম আব্বাসউদ্দীনের কণ্ঠেই রেকর্ড করা হয়।

গ্রামোফোন কোম্পানি এর রেকর্ড প্রকাশ করে। গানটি ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশ করা হয়। গানের রেকর্ড প্রকাশের পরপরই গানটি বাঙালি মুসলিম সমাজে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং ঈদের আগমনী গান হিসেবে কালজয়ী হয়ে ওঠে। গানটি লেখার চারদিন পর শিল্পী আব্বাস উদ্দিনের কণ্ঠে প্রথম রেকর্ড করা হয়্ এবং রেকর্ড করার দু মাস পরে ঈদুল ফিতরের ঠিক আগে আগে এ রেকর্ড প্রকাশ করা হয়।

Eid-Eid-

ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ,
তুই আপনাকে আজ বিলিয়ে দে, শোন আসমানী তাগিদ।
তোর সোনা-দানা, বালাখানা সব রাহে লিল্লাহ
দে যাকাত, মুর্দা মুসলিমের আজ ভাঙাইতে নিঁদ,
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।

আজ পড়বি ঈদের নামাজ রে মন সেই সে ঈদগাহে,
যে ময়দানে সব গাজী মুসলিম হয়েছে শহীদ।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।

আজ ভুলে যা তোর দোস্ত-দুশমন, হাত মেলাও হাতে,
তোর প্রেম দিয়ে কর বিশ্ব নিখিল ইসলামে মুরিদ।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।

যারা জীবন ভরে রাখছে রোজা, নিত্য উপবাসী,
সেই গরীব ইয়াতীম মিসকিনে দে যা কিছু মুফিদ,
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।
আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন আসমানী তাগিদ।

ঢাল হৃদয়ের তোর তশতরীতে শিরনি তৌহিদের,
তোর দাওয়াত কবুল করবেন হজরত হয় মনে উম্মীদ।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।

তোরে মারল’ ছুঁড়ে জীবন জুড়ে ইট পাথর যারা,
সেই পাথর দিয়ে তোলরে গড়ে প্রেমেরই মসজিদ।
ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ,
আপনাকে আজ বিলিয়ে দে শোন আসমানী তাগিদ।

রচনা: জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম
(উইকিপিডিয়া থেকে সংগৃহীত)

সম্পাদনা :
আবদুল গনি, ৩০ মার্চ ২০২৫
এজি

Share