বিশেষ সংবাদ

ঝুঁকিপূর্ণ আসনগুলোতে তরুণ প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে আ.লীগ-বিএনপি !

সংসদ নির্বাচনে তরুণ নেতৃত্বের দিকে ঝুঁকছে আ.লীগ-বিএনপি |

আগামী সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ অন্ততপক্ষে অর্ধশতাধিক তরুণ এবং নতুন প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। বর্তমান সংসদের মন্ত্রী এমপিদের মধ্যে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও নির্বাচনি এলাকার জনগণের সঙ্গে দূরত্ব রয়েছে সেসব আসনে আওয়ামী লীগ নতুনদের নিয়ে চিন্তা করছে। এছাড়া এমপিদের মধ্যে যারা বয়সের কারণে অসুস্থতায় ভুগছেন তাদের আসনেও পরিবর্তন আনবে দল।

আওয়ামী লীগ দলীয় সূত্র জানিয়েছে, দল থেকে মন্ত্রী-এমপিদের নির্বাচনি এলাকায় জরিপ করে দেখা গেছে ৮৫টি আসন ঝুঁকিপূর্ণ। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এমপিদের এসব কাজের ফিরিস্তি রয়েছে। তিনি চান ঝুঁকিপূর্ণ আসনগুলোতে নতুনদের প্রাধান্য দিতে। তিনি দলের নীতি নির্ধারণী ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের বলেছেন, গ্রহণযোগ্য ও সম্ভাবনা রয়েছে এমন তরুণ যারা ছাত্রলীগসহ দলে ধারাবাহিকভাবে রাজনীতি করেছেন, তাদেরকে উৎসাহী করতে। গত কাউন্সিলেই শেখ হাসিনা এই ইঙ্গিত দিয়েছেন। এরপর থেকে তরুণরা নির্বাচনি মাঠে সরব হয়েছেন।

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, শতাধিক এমপির বিরুদ্ধেই অভিযোগ এসেছে। তবে সব আসনেই তরুণ নেতৃত্ব প্রাধান্য পাবে না। এসব আসনের মধ্যে হয়তো শেষ পর্যন্ত ৫০টি আসনে তরুণদের দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময়ই যোগ্য প্রার্থীদের মনোনয়ন দেয়। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী যোগ্য ও মেধাবী তরুণদের সুযোগ দিয়ে থাকেন। বর্তমান সংসদেও অনেক তরুণ ও নতুন এমপি রয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। মনোনয়নের বিষয়টি পুরোই দেখবেন সভানেত্রী। তিনিই যাকে যোগ্য মনে করবেন তিনিই প্রার্থী হবেন।

সাবেক শ্রমমন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর (নরসিংদী-৫), সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আফম রুহুল হকের (সাতক্ষীরা-২) আসনগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এলাকার জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছে এসব হেভিওয়েট আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী মান্নান খান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরী, ধর্মমন্ত্রী এবং ময়মনসিংহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মতিউর রহমান,

সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনের আসনে তরুণ নেতৃত্ব আসতে পারে। মুন্সিগঞ্জ-১ এমপি সুকুমার রঞ্জন ঘোষের। গাইবান্ধা-২ আসনে মাহাবুব আরা গিনির পরিবর্তে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন,গাইবান্ধা-৪ আবুল কালাম আজাদের আসনেও নতুন মুখের কথা শোনা যাচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রাম-৩ এর মাহফুজুর রহমান, চট্টগ্রাম-১১ এর এম আব্দুল লতিফ, চুয়াডাঙ্গা-১ এর সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন, যশোর-১ এর শেখ আফিল উদ্দিন, বরিশাল-২ এর তালুকদার মো. ইউনুস, নেত্রকোনা-২ এর আরিফ খান জয় (উপমন্ত্রী), মানিকগঞ্জ-৩ এর জাহেদ মালেক স্বপন, নওগাঁ-৬ এর ইসরাফিল আলম, রাজশাহী-১এর ওমর ফারুক চৌধুরী, মেহেরপুর-১ ফরহাদ হোসেন, যশোর-৫ এর স্বপন ভট্টাচার্য্য, যশোর-৬ এর ইসমাত আরা সাদেক, খুলনা-২ এর মুহাম্মদ মিজানুর রহমান, চাঁদপুর-৪ আসনের মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম), বি.বাড়িয়া-১ আসনের এমপি ও মৎস্য মন্ত্রী ছায়েদুল হক এবং বি.বাড়িয়া-৩ আসনের এমপি ওবায়দুল মোক্তাদির চৌধুরীর আসনে নতুন নেতৃত্বের কথা ভাবছে দল। চট্টগ্রাম ৬ আসনে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দর রোটন মাঠে সরব রয়েছেন। এলাকায় কাজ করছেন ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খালেমুল ইসলামের ছেলে ডা. মহিদুল ইসলাম। এছাড়া নাম শোনা যাচ্ছে নরসিংদী-৪ আসনে চার বারের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বীরু ও পাবনা-১ আসনে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম মানিক।

আসন্ন জাতীয় একাদশ সংসদ নির্বাচনে রাজধানী ঢাকাসহ জেলার ২০টি সংসদীয় আসনে জয় পেতে চায় আওয়ামী লীগ। এই লক্ষ্যে বর্তমান এমপিদের কাজের মূল্যায়ন করা হচ্ছে। ঢাকার ১২ থেকে ১৫টি আসনে পরিবর্তন আনতে পারে দলটি। এরমধ্যে তরুণদেরই প্রাধান্য থাকছে। দশম নির্বাচনে মহাজোট শরিকদের ৫টি আসনে ছাড় দিলেও একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২ থেকে ৩টি আসনের বেশি ছাড় দেবে না আওয়ামী লীগ।

ঢাকা-৫ আসনের এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা, ঢাকা-১৮ আসনের অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, ঢাকা-১৫ কামাল আহমেদ মজুমদার শারীরিক অসুস্থতার কারণে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়তে পারেন। তবে এ আসনগুলোতে এমপির ছেলে কিংবা দলের মাঠপর্যায়ের ত্যাগী যোগ্য প্রার্থীরা আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে পারেন। আসনে সাহারা খাতুনের বিপরীতে গণসংযোগ চালাচ্ছেন মহানগর উত্তরের নেতা তোফাজ্জল হোসেন, হাবিব হাসান। এছাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ফারুক খান এমপির নামও শোনা যাচ্ছে এ আসনে।

ঢাকা-১৪ আসনের এমপি আসলামুল হকের মনোনয়ন নিয়ে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আপত্তি রয়েছে। ওই আসনে মনোনয়ন পেতে চান সংরক্ষিত আসনের এমপি সাবিনা আকতার তুহিন। ঢাকা-১৬ আসনে ইলিয়াস উদ্দীন মোল্লার বিরুদ্ধে গত নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এসএ মান্নান কচি। আগামী নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। ঢাকা-১৯ আসনের এমপি ডা. এনামুর রহমানও মনোনয়ন থেকে বাদ পড়তে পারেন। ঢাকা-২০ আসনে বর্তমান এমপি আব্দুল মালেকের পরিবর্তে নতুন মুখ আসতে পারে। ঢাকা-৫ আসনে মনোনয়ন পেতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বর্তমান এমপি আলহাজ্ব হাবিবুর রহমান মোল্লার বড় ছেলে মশিউর রহমান মোল্লা। ওই আসনে আরেক প্রার্থী যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনর রশিদ মুন্নাও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ঢাকা-৮ আসনে গণসংযোগে নেমেছেন যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট । আস

নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০১:০০ পি.এম, ১২ জুন ২০১৭,সোমবার

Share